আলাপন ২৫-৬-১৮

সেদিন তারানা হালিম এর একটা লেখা পড়ছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে। ভিসি’কে নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা আর হাল আমলের ছাত্র এবং শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে লেখা। খূবই চমৎকার একটা লেখা যেটাতে তিনি বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি আঙ্গুল তুলেছেন। আমার আজকের লেখাটা অবশ্য সেসব নিয়ে না। তারানা হালিম এর লেখাটা পড়তে পড়তে আমি ভাবছিলাম আমার শিক্ষকদের কথা। তাদেরই কয়েকজনকে নিয়ে লিখবো আজ।

তবে মজার বিষয় হলো প্রিয়-অপ্রিয় সব শিক্ষকেরাই কিন্তু আমার স্কুল-কলেজ জীবনের, স্নাতক পর্যায়ে সেরকম কোন শিক্ষকের কথা আজ আর তেমন করে বলতে পারছি না। প্রথমেই যার কথা মনে আসে তিনি আমার প্রথম স্কুলের প্রথম শিক্ষাগুরু – মিলন দিদি। তেজগাঁও বটমলি হোম স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম ক্লাস টু’তে সেই ১৯৭২ সালে। আর মিলন দিদি ছিলেন ক্লাস টু’র শ্রেনী শিক্ষিকা। এখনও চোখ বন্ধ করলে মিলন দিদির সেই হাসি মাখা মূখটা মনে পড়ে। মনে পড়ে তার কাছ থেকেই শিখেছিলাম ইংরেজীতে পেঁচিয়ে হাতের লেখা। সেই সময় একমাত্র ইসলামিয়াত ছাড়া আর সব ক্লাসই নিতেন মিলন দিদি। ভুল বললাম – গানের ক্লাস নিতেন আরেক জন স্যার। আমাদের সে সময় নিয়মিতই গানের ক্লাস, ড্রইং এর ক্লাস আর পিটি ক্লাস হতো।

মিলন দিদি’র পরে যার কথা সবচেয়ে বেশী মনে পড়ে এই স্কুলের তিনি সিষ্টার মেরী রানী। আমার ৫ম শ্রেণীর ক্লাস টিচার। দেখতে বেঁটে, কালো, অসুন্দর এবং সেই সাথে ভয়ঙ্কর রাগী এই মহিলাটিকে আজো আমি স্মরণ করি তার অপত্য স্নেহের জন্য। কি কারণে জানি না, আমাকে উনি খূবই স্নেহ করতেন, হয়তো সবাইকেই কিন্তু বাইরে থেকে সেটা একেবারেই বুঝা যেত না। কেবল অনুভব করা যেতো অন্তর দিয়ে। মনে আছে উনি আমাকে ডাকতেন জামিল বলে, নামের প্রথম বা শেষ না এমনকি ডাক নামও না নামের মাঝের অংশ এটা। স্কুলের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তারই পরিচালনায় আমরা ক্লাস ফাইভের ছেলে-মেয়েরা পরিবেশন করেছিলাম “ওল্ড ম্যাক ডোনাল্ড হ্যাভ এ ফার্ম. ইয়া ইয়া ও” – শুধূ গান না, রীতিমতো নাচ-গান আরকি। মোহাম্মদ আলী সেজেছিলো বুড়ো ম্যাক ডোনাল্ড আর আমরা ৪ জন করে বিভিন্ন প্রাণী। আমার রোল ছিলো – গরু’র – হাঃ হাঃ হাঃ। আমরা সবাই বেশ উপভোগ করেছিলাম – রিহার্সেল আর অন ষ্টেজ পারপর্মেন্স। সেই বছরই (১৯৭৫) এপ্রিল বা মে মাসে আব্বা বদলি হলেন ময়মনসিংহ, আমাকেও স্কুল ছাড়তে হলো। সিষ্টার’কে যথা সময়েই জানিয়ে ছিলাম কথাটা, উনি বলেছিলেন শেষ ক্লাসের দিন যেন দেখা করি। শেষ ক্লাসের দিন স্কুল ছুটির পর দেখা করতে গেলাম। উনি আমাকে একটু অপেক্ষা করতে বলে ভিতরে গেলেন, বেড়িয়ে এলেন হাতে কিছু একটা নিয়ে। আমাকে সাথে নিয়ে বসলেন বারান্দার মেঝেতে। নানা রকম কথা বললেন। আর শেষে হাতে করে আনা একটা কার্ড দিলেন। কার্ডটা হারিয়ে গেছে সময়ের স্রোতে কিন্তু কথাগুলো মনে আছে এখনও – জামিল, শুধূ লেখাপড়া শিখলেই হবে না, হতে হবে মানুষের মতো মানুষ। সিষ্টার কোথায় আছেন জানি না, তবে তার আদরটা এখন অনুভব করি নিজের মধ্যে। আমি পরের বছর ঢাকা বেড়াতে এসে স্কুলে গিয়েছিলাম, মিলন দিদি আর বাবলি’দির সাথে দেখা হয়েছিলো কিন্তু সিষ্টারের দেখা পাইনি। অনেক পরে সাব্বির (সাব্বির আহমেদ চৌধূরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজীর শিক্ষক) এর কাছে শুনেছিলাম সিষ্টার মেরী রানী ১৯৭৫ সালেই মিশনারীর কাজে ফিলিপাইন চলে গিয়েছিলেন।

এরপর যার কথা বলবো তিনি আমার জীবনের একমাত্র অপ্রিয় শিক্ষক। ময়মনসিংহ এডোয়ার্ড ইনষ্টিটিউশনে ইংরেজীর ক্লাস নিতেন। একদিন ক্লাসে পড়া জিজ্ঞাসা করতে যেয়ে “এই কানা, তুই বল” এরকম ভাবে বললেন। এখানে বলে রাখা ভাল আমার চোখ জন্মগতভাবেই ট্যারা। আমার বন্ধুরাও সেদিন একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছিল একজন শিক্ষকের এহেন সম্বোধনে। একথা শোনা আমার জন্য নতুন ছিলো না, কোনদিন এসব নিয়ে মাথাও ঘামাইনি। কিন্তু সেদিন আর সহ্য হলো না। বাসায় এসে জানান দিলাম আমি আর ঐ স্কুলে যাব না। কি হয়েছে সেটাও বললাম। আব্বা বললেন পরদিন স্কুলে যাবেন। আমি বাসায় রইলাম, আব্বা ছুটি নিয়ে গেলেন স্কুলে। আব্বার কাছে পরে শুনেছি হেডমাষ্টার স্যার ঘটনা শুনে চরম উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন। প্রথমে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষকদের ডেকে এনে ঘটনা বলেছেন, পরে সেই ইংরেজি শিক্ষককে ডেকে নিয়ে প্রচন্ড বকাবকি করেছেন আব্বার সামনেই। পউপস্থিত সব শিক্ষকই নাকি সেদিন তাকে ভৎসনা করেছিলেন এই বলে যে শিক্ষক হয়ে কিভাবে তিনি পারলেন ছাত্রকে এটা বলতে। আমাকে অনিচ্ছা সত্যেও আবার স্কুলে যেতে হয়েছিলো, কারণ বছর শেষ হতে বাকি ছিলো আর ২ মাস। স্কুলে পৌছে দেখি ঘটনা সবাই জানে। হেড স্যার ডেকে পাঠিয়ে জানালেন সেই শিক্ষক আর কখনই আমার সেকশনে ক্লাস নিবেন না। আর ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা ঘটলে আমি যেন তাকে সরাসরি জানাই। যাই হোক সেদিন টিফিন পিরিয়ডের সময় পন্ডিত স্যার দূর থেকে হাত ইশারায় ডাকলেন। পন্ডিত স্যারের নামটা কখনই জানা হয়নি। উনি আমাদের বাংলা ব্যাকরণ পড়াতেন আর হিন্দু ছাত্রদের সংস্কৃত আর হিন্দু ধর্ম। উনি আসলে হিন্দু শাস্ত্রের শিক্ষক, এটাতেই বুৎপত্তি ছিলো তার। তো সেই পন্ডিত স্যার ডেকে নিয়ে প্রথমেই কুশল জানলেন। এরপর তিনি বললেন ঘটনাটা তিনি জেনেছেন। হেড স্যার ডেকে সব শিক্ষককেই ঘটনাটা বলেছেন। এরপর আস্তে করে বললেন তিনি খূবই মর্মাহত। আমি একটু চুপ করে ছিলাম কি বলবো ঠিক করতে পারছিলাম না। পন্ডিত স্যার আমার হাতটা ধরে বললেন তিনি তার সহকর্মীর আচরণে লজ্জিত। আমি পূরো স্তম্ভিত … একজন শিক্ষক তার ৫ম শ্রেণীতে পড়া ছাত্রে হাত ধরে বলছেন তিনি তার সহকর্মী শিক্ষকের আচরণে লজ্জিত। ইংরেজী শিক্ষকের কথায় আমি কষ্ট পেয়েছিলাম খূব, কিন্তু পন্ডিত স্যারের কথায় … আমি কেঁদে ফেলেছিলাম সেদিন। পন্ডিত স্যার আমাকে সস্নেহে জড়িয়ে ধরেছিলেন, বলেছিলেন মানুষকে যেন কোনদিন তার শারীরিক কোন ত্রুটির কারণে অবজ্ঞা না করি। কারণ তাতে সৃষ্টিকর্তাকেই অবজ্ঞা করা হয়। জানি না পন্ডিত স্যার বেঁচে আছেন কিনা, তার প্রতি রইলো অশেষ শ্রদ্ধা আর ভালবাসা।

ময়মনসিংহে আরেকজন শিক্ষক পেয়েছিলাম। শামসুল আলম চাচা। আব্বার কলিগ। আব্বার অনুলোধে আমাদের দুই ভাইকে ইংরেজী আর অংক দেখিয়ে দিতেন। জিলা স্কুলে ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় বলা চলে আমার ইংরেজীর ভিতটা তৈরী হয়েছিলো। আমি খূব ভাল ইংরেজী না বললেও, মনে হয় ভুল বলিনা। আর এটা সম্ভব হয়েছে এই শামসুল আলম চাচার জন্য। মনে আছে ১৯৭৭ সালে জাপানীজ রেড আর্মি জাপানীজ একটা বিমান ছিনতাই করে ঢাকায় নামিয়েছিলো। প্রতিদিন সেসব খবর বের হতো পত্রিকায় আর শামসুল আলম চাচা পত্রিকা থেকে অংশ বিশেষ আমাকে ইংরেজীতে ট্রান্সলেশন করতে দিতেন।

বাবু এম এম সরকার ছিলেন উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষক। আমার সবচাইতে পছন্দের এবং সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক। আমাদের সাধারণ গণিত আর পদার্থ বিজ্ঞান পড়াতেন। আমি স্কুলে গণিতের যদি কিছু শিখে থাকি সেটা শিখেছি সরকার স্যারের কাছেই। তার পড়ানোর ষ্টাইলটা খূব ভাল লাগতো। কোন একভাবে না বুঝলে আরেকভাবে বুঝানোর চেষ্টা করতেন। অনেক সময় দেখা যেতো একটা অংক স্যার ৩/৪ বাবে করে দিয়েছেন। শেখর (চন্দ্র শেখর দাস, কানাডা প্রবাসী) এর সাথে স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যেয়ে জানলাম স্যার শুধূ অংক বা ফিজিক্স না, কেমেষ্ট্রী আর বাংলা ব্যাকরণও খূবই ভাল পড়ান। তবে স্যারকে পড়ার বাইরে আরো একটা কারণে মনে রাখবো সারা জীবন। খূব ছোট্ট একটা জিনিস শিখিয়ে দিয়েছেন – প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় স্যারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম কত দিব – স্যার খূব আস্তে করে একটা ধমক দিয়েছিলেন। বলেছিলেন কোন ছাত্রের সাথে এসব নিয়ে তিনি আলাপ করতে আগ্রহী না। ছাত্রের সাথে আলাপ হবে পড়াশোনা নিয়ে, বাকি সব ছাত্রের অভিভাবকের সাথে। আমি জীবনেও আর কোনদিন কোন শিক্ষককে এজাতীয় প্রশ্ন করি নাই।

মনে আছে প্রাইভেট পড়তে যেয়ে একবার মামুন স্যার (জিয়াউল হক মামুন, ডিরেক্টর, আইবিএ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলাম সরকার স্যারের কাছে। টেষ্টে ইলেকটিভ ম্যাথে আমি পেয়েছিলাম ৩২, মাত্র ১ নাম্বারের জন্য মামুন স্যার আমাকে পাশ করান নাই। মামুন স্যার’কে বেশ কয়েকবার রিকোয়েষ্ট করছিলাম ১টা নাম্বার দেয়ার জন্য, স্যারের সোজা জবাব আমি যেটা পাই না উনি সেটা দিবেন কেমন করে। মেজাজটা চরম খারাপ ছিলো এটা নিয়ে। সরকার স্যার এটা শুনে হেসে বলেছিলেন মামুন স্যার যেটা করেছেন সেটাই ঠিক আছে। এটা আমি বুঝবো না, বয়স হলে পরে বুঝবো। তখন আসলে কিছুই বুঝি নাই। এখন বুঝি সেটা কতটা সঠিক ছিলো। যে আমি টেষ্টে ৩২ পেয়েছিলাম, সেই আমিই এসএসসি’তে সবকিছু কারেক্ট করে এসেছিলাম। সরকার স্যার প্রশ্ন করায় বলেছিলাম একটা সম্পাদ্য একটু মোছামুছি হয়েছিলো বেশী। স্যার বলেছিলো এটা পূরাই কেটে দিবে যদি আমি সব ঠিক করে থাকি। আমি ৯১ পেয়েছিলাম উচ্চতর গণিতে। সেই সম্পাদ্যে ছিলো ৮ নাম্বার। এখন যেটা বুঝি মামুন স্যার একটা জেদ তৈরী করে দিয়েছিলেন আমার মধ্যে, ১ নাম্বার দিয়ে পাশ করিয়ে দিলে হয়তো এই জেদটা আর কাজ করতো না। রেজাল্টও হয়তো হতো সেরকমই।

লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের আরেকজন শিক্ষক ছিলেন কায়েস আহমেদ। খূব অল্প সময়ের জন্য পেয়েছিলাম তাকে আমরা। আমাদের বাংলা পড়াতেন। একাধারে ছিলেন সাহিত্যিক আর সেই সাথে বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত। প্রিটেষ্টে স্যার আমাদের বাংলায় পূরো ধরাশায়ী করেছিলেন বলা চলে। শম্পা (সাবরিনা আলম) পেয়েছিলো ০০, সে বেচারীতো কেঁদেকেটে অস্থির, কাঁদেছে আর চিৎকার করতেছে সমানে যে এটা কি অংক নাকি যে শুন্য পাবে। স্যারের কথা আমরা নাকি পাতা ভরানোর জন্য ইনিয়ে বিনিয়ে একই কথা বার বার লিখি। অল্প সময়ের জন্য হলেও স্যার আমাদের মনে রেখেখেছিলেন, স্কুলে গেলে দেখলেই ডেকে আলাপ করতেন। কিন্তু স্যার কয়েক বছর পর আত্মহত্যা করেছিলেন হতাশায়। স্যার মানসিক প্রতিবন্ধী এক মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন, তার নাকি বিশ্বাস ছিলো ভালবাসা দিয়ে তিনি একদিন মেয়েটাকে সম্পূর্ণ সূস্থ করে তুলতে পারবেন। তাদের এক ছেলেও হয়েছিলো। কিন্তু স্যার দিনে দিনে হতাশ হয়ে পড়ছিলেন। শেষে এই আত্মহনন। খূব কষ্ট পেয়েছিলাম খবরটা শুনে।

জনাব হারুণ উর রশিদ শিকদার স্যার ছিলেন তিতুমীর কলেজে আমার কেমেষ্ট্রীর শিক্ষক আর সেই সাথে বেইলী স্বয়ারে প্রতিবেশী। পড়াশোনার জন্য না, স্যার’কে মনে থাকবে তার অসাধারণ ব্যবহারের জন্য। প্রচন্ড অমায়িক আর আড়ম্বরহীন একজন মানুষ। সালাম দিলেই ডেকে দু’চার কথা জিজ্ঞাসা করতেন সব সময়। বেইলী স্কয়ার ছাড়ার পরও অনেকদিন স্যারের সাথে দেখা হয়েছে, বরাবরই তার সেই অসাধারণ ব্যবহার। বেইলী স্কয়ারে থাকতে আব্বা একটা বাগান করেছিলেন। আব্বা রিটায়ার করার পর শিকদার স্যার আমাদের ছেড়ে দেয়া ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন, সেই সূত্রে ছোট বাগানটাও। পরের বছর স্যার ঠিকই মোহাম্মদপরে আমাদের বাসা খূজে বের করে আম-কাঁঠাল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। স্যারের সোজাসাপ্টা জবাব যিনি গাছ লাগিয়েছেন তাকে ছাড়া এসব ফল কেমন করে খাই। পরের বছরও স্যার শাহিন (একেএম আবদুল্লাহ, রিসার্চ এসোসিয়েট, নিপোর্ট)কে দিয়ে আবার খবর পাঠিয়েছিলেন। পরে স্যারকে বহুত বুঝিয়ে নিবৃত্ত করেছিলাম, বলেছিলাম স্যার আপনারা খান, পাড়া প্রতিবেশীদের দেন। তাতেই হবে। এই হলো শিকদার স্যার।

এই হলো আমার প্রিয় আর অপ্রিয় শিক্ষাগুরুদের কাহিনী। তারা যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন, এই কামনাই করি সবসময়।

(পূর্বে প্রকাশিত লেখা)

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *