এরোনটিক্যাল রেডিও বিকন

নদীতে রাতের বেলা বয়া দেখেছেন কখনও ? বাতি জ্বলে। সাধারণ ভাষায় বয়া বাতি বলে। মূলত যে কোন জলযানের পথ নির্দেশক হিসেবে এই বাতিগুলি ব্যবহার করা হয়। আবার সমূদ্রে জাহাজকে পথ দেখিয়ে বন্দরে ভিড়ানোর জন্য থাকে লাইট হাউজ। এরকমই বিমান বন্দরে বিমানকে পথ দেখানোর জন্য থাকে বিকন। বিকন আবার দুই রকমের – একটি লাইট বিকন, অন্যটি রেডিও বিকন। 

VOLMET নিয়ে ইন্টারনেটে তথ্য খোজার সময়ই মেরিন ওয়েদার সার্ভিস নিয়ে কিছু তথ্য পাই। এই অঞ্চলে 490 kHz এবং 518 kHz ব্যবহৃত হয় মেরিন ওয়েদার সম্পর্কিত তথ্য প্রচারের জন্য। সেখানে কুয়াকাটা’র উল্লেখ ছিলো। ৪৯০ কিলোহার্টজে বাংলায় স্থানীয় আবহওয়া বার্তা এবং ৫১৮ কিলোহার্টজে NAVTEX ডেটা প্রচার করা হয়। 

এই দুই ফ্রিকোয়েন্সী মনিটর করতে গিয়ে হঠাৎ করেই ২৫০ (পরে অবশ্য দেখা গেছে এটি ২৫২ কিলোহার্টজ) কিলোহার্টজে বেশ ক্ষীণ ভাবে মোর্স কোড শুনতে পেলাম। মনে হলো একই কোড বার বার শোনা যচ্ছে। নেটে আরো কিছু ঘাটাঘাটি করার পর মনে হলো এটি Non Directional Aeronautical Radio Beacon (NDB) হতে পারে। আর আমার লোকেশন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাছে হওয়ায় এটি শোনা যাচ্ছে। তবে ঘরের ভিতর কোন সিগনাল পাই না। একমাত্র বারান্দায় গিয়ে উত্তর-দক্ষিন বরাবর রেডিও রাখলেই কেবল শোনা যায়। 

এক হ্যাম অপারেটর বন্ধুকে রেকর্ড করে পাঠালাম। সে কিছুক্ষণ পর জানালো মোর্স কোড হলো -.. -.-. যা দিয়ে D C অক্ষর দুটি বুঝায়। এখন এই D এবং C দিয়ে কি বুঝায় ? বন্ধুই বললো Dhaka Control হতে পারে। আমারও তাই মনে হচ্ছে। প্রথমে বিকালের দিকে শুনলেও পরে চেক করে দেখেছি এই কোড সারাদিনই শোনা যায়। তবে নেটে কোথাও এই ২৫২ কিলোহার্টজ সংক্রান্ত কোন তথ্য পেলাম না। তবে সিভিল এভিয়েশনের এর ওয়েব সাইটে ২৯৮ কিলোহার্টজ এর উল্লেখ আছে। 

স্যাটেলাইট নির্ভর নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে এই সব বিকন ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে সারা পৃথিবীতেই। নতুন প্রযুক্তি গ্রহন করে এই সকল বিকন বন্ধ করার জন্য শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৬ সাল। বাংলাদেশ কবে সেটি বাস্তবায়ন করবে জানা নেই।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।