কিটো ডায়েট এবং একজন …

মাসের শুরুতেই এক ছোট ভাই (চাচাত ভাই) এর স্ত্রী ষ্ট্রোক করে হাসপাতালে গেলো। প্রাথমিক শঙ্কা কেটে যাওয়ার পর দেখা গেলো তার ডান সাইড অবশ এবং সে কথা বলতে পারছে না। মহিলার বয়সও খূব বেশী না, ৪০ এর ঘরেই হওয়ার কথা। আমার চাচাত ভাই অর্থনৈতিভাবে তেমন সবল না হওয়ায় তার স্ত্রীকে আপাতত বাসায় নিয়ে গেছে। বাসায় ফিজিওথেরাপি দিচ্ছে।

গতকাল ওর ভাই বাসায় এসেছিলো। নানা কথার পর রোগীর অবস্থা জানলাম। কথা প্রসঙ্গে শুনলাম ছোট ভাই এর স্ত্রী নাকি ইউটিউব দেখে ওজন কমানোর চেষ্টা করছিলো। কার ভিডিও ফলো করছিলো বলতে পারবেন ? জ্বি, ঠিকই ধরেছেন। ডাঃ জাহাঙ্গীর কবিরের ভিডিও দেখে কিটো ডায়েট ফলো করছিলো। 

এর আগেও এক খালাতো বোনের ছেলে ব্যাপক অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলো। প্রথমে শুনেছিলাম তার হার্ট এটাক হয়েছে, পরে জানলাম হার্ট এটাক না। তবে  ডাক্তাররা জানতে চেষ্টা করছেন আসলে কি হয়েছিলো। বেশ কিছুিন পর শুনলাম সেও সেই ডাঃ জাহাঙ্গীর কবিরের ভিডিও ফলো করে ওজন কমানোর চেষ্টা করছিলো।

আমাদের সমস্যা হলো ইউটিউবে ভিডিও দেখে কি ফলো করা উচিত আর কি ফলো করা উচিত না সেটাই আসলে আমরা বুঝি না। আপনি ইউটিউব ভিডিও দেখে ক্র্যাফটিং করেন, ফটোশপ শিখেন, কোন ইলেক্ট্রনিক প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেন – কোন সমস্যা নাই। কিন্তু ইউটিউব ভিডিও দেখে নিজের বা অন্য কারো চিকিৎসা করতে যাওয়া কখনই উচিত না। আপনি হয়তো বলবেন ওজন কমানো তো চিকিৎসা না। আমি শুধূ বলবো দ্রুত ওজন কমালে আপনার শরীরে কি প্রভাব পড়বে সেটি আগে জেনে নেয়া উচিত। আর কিটো ডায়েট এর জন্য ডাক্তার এর সাথে অবশ্যই সরাসরি পরামর্শ করা উচিত। 

আপনি ওজন কমাতে চাইলে ধীরে ধীরে কমান। আপনার লাইফ ষ্টাইল বদলান। শুরুতেই মিষ্টি জাতীয় খাবার বন্ধ করেন। এরপর কেবল ভাত খাওয়া কমান, সাথে প্রতিদিন ঘন্টাখানেক জোরে জোরে হাটেন – আর কিছু লাগবে না। তবে দৃষ্টিগ্রাহ্য ফলাফল পেতে আপনাকে ৩-৪ মাস অপেক্ষা করতে হবে। চালিয়ে যান, আপনার ওজন কমবেই। ছেড়ে দিবেন খূব দ্রুতই আপনার ওজন আবার বাড়বে।

ইউটিউব ভিডিও দেখে ডাক্তারী কিংবা দূর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন কিছু ভুলেও করবেন না। 

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।