ঘুম

আমার সাধারণত ঘুম নিয়ে কোন সমস্যা হয় না। বিছানায় শুলাম, এক-আধবার এপাশ-ওপাশ করলাম। ব্যস !!! ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে যেতে বেশী সময় লাগে না। তবে সমস্যা একটাই, ঘুম বেশ পাতলা। শব্দ-টব্দ হলে বা কেউ ডাকলে সহজেই ঘুম ভেঙ্গে যায়। মরার মতো ঘুম তাই আর দেয়া হয় না। গ্রীষ্মে ফুল স্পিডে ফ্যান চলে বলে ফ্যনের শব্দের কারণে ছোটখাট শব্দ কানে ঢোকে না। তাই নিশ্চিন্তে ঘুমানো যায়। শীত কালে ফ্যানের সূবিধা পাই না, আবার শীতের কারণে বাথরুম পায় বলে রাতে ঘুম ভাঙ্গে বার দূয়েক। 

গতকাল রাত্রে (২রা ফেব্রুয়ারী ২০২২) ঘুমাতে গিয়েছিলাম একটু আগেই, এই ধরেন রাত ১০:৩০ এর দিকে। যথারীতি ঘুমিয়েও পড়েছিলাম। ঠিক কি কারণে জানি না ১২:৩০ এর দিকে আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেলো। কিছুক্ষণ পরেই দূলাভাই একটা দাওয়াত থেকে ফিরলেন। উঠে দরজা খূলে দিলাম। বাথরুম সেরে এসে শুলাম ঠিকই, কিন্তু ঘুম তো আর আসে না। এপাশ-ওপাশ করি কিন্তু ঘুম আর নাই। শেষবার হাতের ঘড়ি দেখলাম ৪টা বাজতে ১২/১২ মিনিট বাকি। এরপর কখন ঘুমিয়েছি খেয়াল নাই।

ঠিক ৬:২৫ এ এলার্ম বেজে উঠলো। তাড়াতাড়ি উঠে পড়লাম। কারণ এ সময় এপাশ-ওপাশ করতে গেলেই দেখা যাবে ৮টা বেজে গেছে। সকালে এসময় আব্বার ডায়পার পরিবর্তন করে দিনের প্রথম খাবার দিতে হয়। NG Tube দিয়ে প্রতি ২ ঘন্টা অন্তর ১০০ এমএল করে লিকুইড খাবার দিতে হয়। প্রথম দুইবার দেই একধরণের ফরমুলা (দূধ টাইপের, ব্যালান্স ডায়েট)। এরপর থেকে বাসায় বানানো ব্লেন্ড করা স্যুপ। চলে রাত ১০ পর্যন্ত। ঔষধ দিতে য় ৩ বার, সব ঔষধ গুড়ো করে এই লিকুইড খাবারের সাথে মিশিয়ে দিতে হয়।

বলছিলাম ঘুমের কথা। কোন এক রোজার পরে আমার ব্যাপক ঘুমের সমস্যা হয়েছিলো। সেবার রোজার সময় রাতে না ঘুমিয়ে জেগে থাকতাম সেহরী পর্যন্ত। নেট ব্রাউজ করতাম। তারপর সবাইকে ডেকে তুলতাম। সেহরীর পর ঘুমাতে যেতাম। রোজার পর দেখা গেলো আমার আর রাতে ঘুম আসে না। সকালে নানা কাজ থাকে, ঘুমানো যায় না। আবার ঠিকমতো ঘুম না হলে সারাদিন কেমন যেন লাগে। ৪/৫ দিনেই শরীরে অবস্থা কাহিল হয়ে গেলো। 

ফেসবুকে এ নিয়ে এক ষ্ট্যাটাস দিতেই অনেকে অনেক রকম পরামর্শ দিলেন। একজন মহিলা বাতলালেন সবচেয়ে কার্যকর উপায়। বললেন আমার ঘুমের সাইকেল চেঞ্জ হয়ে গেছে। এটা ঠিক করতে হলে প্রথমেই আমার রাতের খাবারের টাইম এগিয়ে আনতে হবে। ৮টার মধ্যে খেয়ে রাত ১০টার মধ্যে শুয়ে পড়তে হবে। শোয়া মানে শোয়া, রুমে টিভি, লাইট অফ। মোবাইল অফ করে রাখতে হবে। ঘুম আসছে না বলে উঠে হাটাহাটি বা মোবাইল ব্রাউজ করা কোন কিছুই করা যাবে না। স্রেফ মটকা মেরে পড়ে থাকতে হবে। সহসাই ঘুম আসবে না বা প্রথম ২/৩ দিনেও হয়তো কিছু হবে না। ষ্ট্রিক্টলি ৮টায় খেয়ে ১০ শুতে যেতে হবে, এরপর আর কোন কথাবার্তা নাই। মানে শরীরকে জোর করে বুঝাতে হবে এটাই আসলে ঘুমের সময়। 

১২-১৫ দিন অসহ্য কষ্ট গেলো। তারপর মনে হলো একটু একটু ঘুম আসছে। পরবর্তী কয়েকদিনে অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হলো। মাস খানেক পর আমার ঘুম তার পুরাতন সাইকেলে ফিরে এলো। এরপর থেকে ভুলেও রাত জেগে ব্রাউজ করি না। এখন খেয়েদেয়ে শুতে শুতে অনেক সময়ই ১২টা বেজে যায়, তারপরও ঘুমের কোন সমস্যা হয় না। রোজার সময় এলার্ম দেয়া থাকে। 

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।