নতুন বছর, নতুন ভাবনা

নতুন বছরে কি করবো সেটা কখনই আগে ভাগে ঠিক করি না। কারণ খূব পরিস্কার, নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকা আমার শাস্ত্রে নাই। আসলেই তাই। দেখা যায় কোন কাজ সিকি ভাগ শেষ করার পর নিজের মুড এমন কি আগ্রহও কমে যাওয়া কিংবা একেবারে বিপরীত পথে হাটার অভিজ্ঞতা আছে। তাই কোন কাজ ঠিক করে তারপর সেটি শেষ না করার অনেক উদাহরণ আমার জীবনে বর্তমান।

গত কয় বছর ধরে অবশ্য পুরো জীবনাচারেই হচপচ চলছে। বাসায় আব্বা-আম্মা দূজনেই অসুস্থ। যদিও আমি নিজে এটা-ওটা করা ছাড়া আর কিছু করি না, তারপরও দেখা যায় নিয়ম করে কোন কাজ করা হয় না। ইচ্ছে থাকলেও বাসা থেকে বেশী দূরে যেতে পারি না। কখন আবার বাসা থেকে জরুরী ফোন আসবে এই আশংকায়। আর এখন তো আব্বা ধরতে গেলে শয্যাগত, দিনের মধ্যে কয়েকবারই তার ডাকে সাড়া দিতে হয়। একদম ভোরে হয়তো একটু বের হওয়ার সূযোগ থাকে, তাও সেটা প্রতিদিনের হাটাহাটির জন্য নির্দিষ্ট ওজন কমানোর জন্য। ভোর মিস হলে পরবর্তী সময় হলো সকাল ১০/১১ টার দিকে বের হওয়ার আরেকটা সূযোগ। এসময় সাধারণত আব্বার ঔষধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য বের হই। সে সূযোগে সকালের হাটাহাটি হয়ে যায়। এরপর বিকালে বা সন্ধ্যার পর আরেক প্রস্থ বের হওয়ার সূযোগ থাকে। 

এবার তাই ভাবছি, সামনের বছর মানে ২০২০ সালে কি করবো। প্রথমত ব্লগগুলো নিয়মিত লিখবো। ইদানিং মাঝে মধ্যেই বিরতি পড়ছে লেখায়। তাই চেষ্টা করছি এবং করবো আগে থেকে কিছু লিখে রাখার। তাতে করে শেষ মূহুর্তে কি নিয়ে লিখবো সেটি নিয়ে আর ভাবতে হবে না। অল্প কিছু লিখে রাখলেও পরে ঘষামাজা করে পুরো লেখা দাঁড় করানো যায়।

দ্বিতীয়ত – ছবি তুলতে চাই নিয়মিত। সেটি বাসাতেই হোক আর বাইরেই হোক। এর আগে প্রজেক্ট ৫২ আর প্রজেক্ট ৩৬৫ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। এবার তাই আর কোন প্রজেক্ট না। দিন বা সপ্তাহ যাই হোক না কেন ছবি তুলবো। আর কেবল ডিএসএলআর ক্যামেরা না, ছবি তোলার যন্ত্র যা যা আছে সবই ব্যবহার করবো। অনেক সময় হয়তো দেখা যায় ক্যামেরা নিয়ে বের হই নি, সাথে কেবল মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোন দিয়েই ছবি তুলবো।

তৃতীয়ত – ভিডিও করার দিকে নজর দিবো। মোবাইল ফোন বা ডিজেআই অসমো পকেট তো সবসময়ই সাথে নিয়ে বের হওয়া যায়। সুতরাং ভিডিও তো করাই যায়। ইদানিং বোধোদয় হচ্ছে যে নিয়মিত ভিডিও না করলে ভুল-ত্রুটি গুলো শোধরানো যাচ্ছে না।

এতো গেলো কি করবো। এবছর নিজের ওজন নিয়ে কিছুটা সমস্যায় ছিলাম। ওজন কমানোর জন্য খাওয়া কমানো এবং হাটাহাটি শুরু করে দিয়েছি। ফলাফল ২ মাসে মোটামুটি ১০ কেজি ওজন কমাতে পেরেছি। সামনে বছরের শুরুতে হয়তো আরো ৫ কেজি ওজন কমবে, আশা করছি। এরপর আরো ৫ কেজি কমিয়ে ওজন ৬৫ কেজিতে স্থির রাখাটাই হচ্ছে সামনের বছরের বড় চ্যালেঞ্জ। সেই সাথে ডায়বেটিস’কে যতদিন আটকে রাখা যায় আর কি।

আর সব শেষ বিষয় – বই পড়ার হার আরো বাড়াতে চাই। এ বছর আগ্রহ থাকলেও সব সময় পড়তে পারি নি। অনেক সময় বই এনে ফেলে রাখতে হয়েছে। এবার কম কম বই আনবো, কিন্তু পড়বো নিয়মিত।

আপাতত এই হলো নতুন বছরের পরিকল্পনা।

ভাল থাকুন, নতুন বছর বয়ে আপনার জীবনে নিয়ে আসুক অপার সম্ভাবনা।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।