নাইকন ৫০ মিমি লেন্স G or D

নতুন নাইকন ইউজাররা বেসিক / এন্ট্রি লেভেলের D3xxx বা D5xxx মডেলের ক্যামেরার কেনার পর প্রথম ধাক্কাটা খান প্রাইম লেন্স কেনার সময়, বিশেষ করে ৫০ মিমি প্রাইম কেনার সময়। নাইকনের ৫০ মিমি প্রাইম আছে বেশ কয়েকটা এবং এদের দামেও বেশ পার্থক্যও আছে। একটা আছে এফএক্স বা ফুল ফ্রেমের জন্য, আপাতত সেটা বাদ রেখেই কথা বলি। ডিএক্স বা ক্রপড সেন্সরের জন্য আছে ২টা ৫০ মিমি প্রাইম লেন্স। প্রথমটি হলো AF-S 50 mm f/1.8 G এবং দ্বিতীয়টি হলো AF 50 mm f/1.8 D লেন্স।

এখন D3xxx / D5xxx ব্যবহারকারীরা কোন ৫০ মিমি লেন্সটি কিনবেন !?! অনেকেই কম দাম দেখে দ্বিতীয় লেন্সটি কিনতে প্রলুব্ধ হন। কারণ প্রথম লেন্সটির দাম দ্বিতীয়টির প্রায় দ্বিগুণ (যদিও অফিসিয়াল ডিলারদের চেয়ে সাধারণ দোকানে বেশ কিছুটা কমে পাওয়া যায়)। এই দুই সিরিজের ক্যামেরায় দু’টি লেন্স দিয়েই ছবি তোলা সম্ভব, তবে প্রথম লেন্স দিয়ে আপনি অটোফোকাস করতে পারবেন, দ্বিতীয়টি দিয়ে পারবেন না। তবে ম্যানুয়ালী ফোকাস করতে পারবেন এবং অন্যান্য সবকিছু মানে মিটারিং সহ সব কিছুই আপনি এই লেন্স থেকে পাবেন।

ঘাপলা আসলে কোথায় ? বেসিক / এন্ট্রি লেভেল ক্যামেরাগুলির খরচ কমানোর জন্য সাধারণত বডিতে ফোকাস মোটর দেয়া হয় না। এই কাজটি নাইকন এবং ক্যানন উভয় কোম্পানিই করে। ফলে অটো ফোকাস সূবিধা চাইলে আপনাকে ফোকাস মোটর ওয়ালা লেন্স নিতে হবে। ক্যানন তার লেন্সগুলিতে অনেক আগে থেকেই ফোকাস মোটর দেয়া শুরু করেছে। তাই তাদের লেন্সের দাম অপেক্ষাকৃত কম। আর লেন্সে ফোকাস মোটর থাকায় অটোফোকাস নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। নাইকন সে তুলনায় অনেক পরে লেন্স এ ফোকাস মোটর দেয়া শুরু করায় তাদের লেন্সগুলির দাম অপেক্ষাকৃত বেশী এখনও। তবে বেশ কিছু লেন্সের দাম কমে এসেছে। শুধূ AF মানে হলো এই লেন্স দিয়ে অটো ফোকাস হবে, কিন্তু লেন্সে কোন ফোকাস মোটর নেই। আর D দিয়ে সাবজেক্ট টু ক্যামেরা ডিসটেন্স বুঝায়। এই ক্যামেরাগুলিতে সাধারণত এপারচার রিং থাকে এপারচার পরিবর্তনের জন্য। AF-S দিয়ে অটো ফোকাস সার্ভো মানে এই লেন্সে ফোকাস মোটর আছে। আর G দিয়ে বুঝানো হয় এতে এপারচার রিং বাদ দেয়া হয়েছে। তাই যারা D3xxx / D5xxx মডেলের ক্যামেরা ব্যবহার করছেন তারা অটোফোকাস চাইলে AF-S লেখা দেখে লেন্স কিনবেন। এখন প্রশ্ন করতে পারেন ম্যানুয়াল ফোকাসে সমস্যা কি ? আমার মতে একজন নবীন ফটোগ্রাফারের জন্য ম্যানুয়াল ফোকাস একটু কষ্টকর হয়ে যায়।

ইদানিং বাজারে Yongnuo YN 50mm f/1.8 Lens টি বাজারে এসেছে। দামও বেশ কম, নাইকন AF 50 mm f/1.8 D এর চাইতেও কম। কোয়ালিটি বা পারফর্মেন্স হয়তো নাইকন লেন্সের মতো না, তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এই লেন্স নাইকন এর D3xxx / D5xxx মডেলে অটোফোকাস করবে। আমি একজনের কাছ থেকে ধার করে আমার অতি পুরাতন ডি৩০০০ ক্যামেরায় এটা ব্যবহার করে দেখেছি। আর এই লেন্সটি ফুল ফ্রেম সাপোর্ট করবে। তবে এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল নাইকনের AF-S 50 mm f/1.8 G এই লেন্সটির আউটপুট কোয়ালিটি কিন্তু অসাধারণ। পুরাতন AF 50 mm f/1.8 D এর চাইতেও এটির পারফর্মেন্স এবং আউটপুট অনেক ভাল।

আপনি যদি বাজেট নিয়ে বেশী চিন্তিত থাকেন এবং কোয়ালিটি ছাড় দিতে আপত্তি না থাকে তবে এই Yongnuo YN 50mm f/1.8 Lens নিয়ে দেখতে পারেন। একই কথা প্রযোজ্য নাইকন ৩৫ মিমি লেন্স এর বেলায়। তবে এখন কেবল নাইকন AF-S 35mm f/1.8 G আর Yongnou 35mm f/1.8, এটি অবশ্য ফুল ফ্রেমও কভার করবে।

Featured Image : Peugeot 307 XSI 2001
Shot with Nikon D7100, AF 50mm f/1.8D, Aperture f/8, Shutter Speed 5 sec, ISO 100
ছবিটি এখানে দেখতে পারেন

হ্যাপি ক্লিকিং

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।