বিশের বিষ

বছর শুরু হয়েছিলো যথাবিহিত। যদিও নভেম্বর ২০১৯ এ চীনের উহানে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর খবর পাওয়া গিয়েছিলো। জানুয়ারী গেলো, ফেব্রুয়ারী গেলো। প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হলো ৮ই মার্চ। সেই থেকে করোনা সংক্রমন চলছে, মানুষ মরছে। এপর্যন্ত বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০৮,০৯৯ জন, আরোগ্যের সংখ্যা ৪৫০,৪৮৮ জন আর মারা গিয়েছেন ৭,৪২৮ জন। সূত্র : EDCR / BDNews24

সাম্প্রতিক কালে আমরা দেখেছি এইচআইভি / এইডস এর বিস্তার। আরো আগে ছিলো কলেরা এবং গুটি বসন্ত। তারও আগে ছিলো ফ্লু (ইনফ্লুয়েঞ্জা) এর মহামারী। আসুন দেখা যাক পৃথিবী এপর্যন্ত কি কি মহামারী পার করে এসেছে।

০১. এইচআইভি / এইডস : এই রোগটি প্রথম কঙ্গোতে দেখা যায় ১৯৭৬ সালে। ১৯৮১ সালের পর থেকে এপর্যন্ত প্রায় ৩৬ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে এই রোগে। বলা হয়ে থাকে ২০০৫-১২ সালের মধ্যে ছিলো এই রোগের পিকটাইম। মানুষ সচেতন হওয়ার পাশাপাশি কার্যকর চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির কারণে এই রোগটি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রয়েছে। তারপরও পৃথিবীতে এখনও ৩১-৩৫ মিলিয়ন মানুষ এইচআইভি ভাইরাস বহন করছে। অনেকেই এই ভাইরাস নিয়ে মোটামুটি স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।

০২. ফ্লু মহামারী (১৯৬৮) : হংকং এ ১৯৬৮ সালের ১৩ই জুলাই তারিখে প্রথম এই রোগটি সনাক্ত হয়। এই জন্য এর আরেক নাম দ্য হংকং ফ্লু। মাত্র ১৭ দিনের মাথায় এটি সিঙ্গাপুর এবং ভিয়েতনামে ছড়িয়ে পরে। আর ৩ মাসের মধ্যে ফিলিপাইন, ভারত, অষ্ট্রেলিয়া, ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পরে। ঙদিও বলা হয়ে থাকে এই মহামারীতে মৃত্যুর হার অপেক্ষাকৃত কম ছিলো (০.৫%), তারপরও ১ মিলিয়ন লোক এতে মৃত্যুবরন করেন। তার মধ্যে ছিলেন হংকং এর ৫০০,০০০ জন নাগরিক, হংকং এর সেসময়ের জনসংখ্যার ১৫%।

০৩. এশিয়ান ফ্লু (১৯৫৬-৫৮) : এই মহামারী শুরু হয়েছিলো চীন থেকে। সিঙ্গাপুর, হংকং হয়ে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পরে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মতে এই মহামারীতে ২ মিলিয়ন মানুষ মারা গিয়েছিলো, তার মধ্যে ৬৯,৮০০ জন শুধূমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

০৪. ফ্লু মহামারী (১৯১৮) : ভয়ঙ্কর এই মহামারীতে ১৯১৮-২০ সালের মধ্যে ২০-৫০ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরন করেছিলেন সারা পৃথিবী জুড়ে। সেসময় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫০০ মিলিয়নের মতো। মৃত্যুর হার ছিলো ১০-২০% এর মতো।

০৬. ৬ষ্ঠ কলেরা মহামারী (১৯১০-১১) : পূর্বের ৫টি কলেরা মহামারীর মতো এই মহামারীও শুরু হয়েছিলো ভারতবর্ষে। মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, পূর্ব ইউরোপ এবং রাশিয়ায় ছড়িয়ে যাবার আগেই এতে প্রায় ৮০০,০০০ জন মারা গিয়েছিলেন। এই মহামারী থেকে আমেরিকাতেও শেষবার কলেরার প্রকোপ দেখা গিয়েছিলো। তবে আগের অভিজ্ঞতার আলোকে আকান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত আলাদা করার মাধ্যমে সেখানে এই মহামারীটিকে রোধ করা সম্ভব হয়েছিলো। শেষপর্যন্ত সেখানে মাত্র ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

চলবে…

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।