মুড়ির টিন

কোক ষ্টুডিও বাংলা’র সাম্প্রতিক পরিবেশনা মুড়ির টিন দেখে / শুনে অনেকেই নষ্টালজিক হচ্ছেন। চট্টগ্রামে সেই আদি মুড়ির টিন বাস এখনও আছে কিনা জানি না, তবে ঢাকা থেকে কয়েক দশক আগেই উঠে গেছে এই বাস। আমার এই বাসের সাথে প্রথম পরিচয় হয় পুরানো ঢাকায় যেতে। গুলিস্থান-সদরঘাট রুটে চলতো এই বাস। পরে জগন্নাথ কলেজে পড়ার সময় সেই রুট রামপুরা পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। মালিবাগ / শান্তিনগর থেকে যাতায়াত করতাম কলেজে। এই সময় জানলাম একই ধরণের বাস চলে শ্যামপুর থেকে নারায়নগঞ্জ পর্যন্তও।


এই বাসের বাম মুড়ির টিন কেন ? দুটি মত আছে এ সম্পর্কে। তবে তার আগে বলি এই বাস কিভাবে এলো। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশ আর্মি তাদের কিছু গাড়ী / ট্রাক ইত্যাদি নিলামে বিক্রি করে দেয়। তাদের ব্যবহৃত বেডফোর্ড ট্রাকগুলির বডি বাসের আদলে তৈরী করে বাস হিসাবে রাস্তায় নামানো হয়। যারা এই মুড়ির টিন বাসে চড়েছেন তারা জানেন এই বাসের পাটাতন বেশ উচু ছিলো রাস্তা থেকে। বাসের বডি মানে কাঠামো তৈরী করা হতো কাঠ দিয়ে, তাই অনেকেই এটাকে কাঠবডি বাস ও বলতেন। কাঠের কাঠামোর উপর টিন দিয়ে আচ্ছাদন দেয়া হতো। এথেকেই মুড়ির টিন নামের উৎপত্তি বলে অনেকেই মনে করেন। 


এই রুট গুলিতে বাসের তুলনায় যাত্রী ছিলো বেশী। আর সেই সূযোগে বাসের কন্ডাক্টর / হেল্পাররা মুড়ির মতো ঠেসে ঠেসে যত্রী তুলতো। এই কারণেই মুড়ির টিন নাম হয়েছে বলে মনে করেন ২য় পক্ষ।

এই বাসগুলি ষ্টার্ট দেয়া হতো বাসের সামনের দিকে লিভারের মতো হাতল ঘুড়িয়ে। বাস ষ্টার্ট হলে এই হাতল খুলে বাসের ভিতরে রাখা হতো। আরেকটি বৈশিষ্ট্য ছিলো বাসের হর্ণ। তখন এসব বাসে হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার করা হতো। সাধারণত ড্রাইভারের ডান দিকে জানালার কাছে বেলুনের মতো একটি জিনিস থাকতো। ড্রাইভার সেটা চেপে হর্ণ দিতো। 

ছবি : ইন্টারনেট থেকে নেয়া

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।