সুপার ম্যাক্রো লেন্স

অনেক দিনের শখ ছিলো একটা ম্যাক্রো লেন্স কিনবো। ফেসবুকের দেশী-বিদেশী বিভিন্ন গ্রুপে খোঁজ-খবর করে ঠিক করেছিলাম যে সিগমা’র ১০৫ মিমি ম্যাক্রো লেন্স কিনবো। দাম মোটামুটি ৩৫ হাজার টাকা। কিন্তু টাকা আর জমে না। হাবিজাবি জিনিস কেনা ছাড়াও এমন কিছু প্রয়োজন সামনে এসে পরে যে আর কিনতে পারি না। নেট ঘাটতে ঘাটতে একদিন জানলাম Mitakon Zhongyi 20mm f/2 4.5x Super Macro Lens for Nikon লেন্সের কথা। আকৃতি একটু অন্যরকম, সাধারণ লেন্সের মতো না। ইউটিউবে বিভিন্ন রিভিউ দেখে জানলাম লেন্স বেশ ভালো তবে ক্যামেরা হাতে নিয়ে ফোকাস করা ব্যাপক কঠিন। এফ/২ এপারচারে ডেপথ অফ ফিল্ড এতো কম যে ঠিকমতো ফোকাস করাই যায় না। বাই দ্য ওয়ে, এটা কিন্তু ম্যানুয়াল লেন্স।

দেশে পাওয়া যায় না। আমাজনে দাম দেখালো ২০০ ডলার। ব্যাকপ্যাক দিয়ে আনালে দাম ২২ হাজার টাকা। ইচ্ছে ছিলো ব্ল্যাক ফ্রাইডে উপলক্ষে দাম কমালে অর্ডার করবো। ব্ল্যাক ফ্রাইডের আগে দিয়ে আমাজন / ব্যাকপ্যাকে আর খূজে পেলাম না এই লেন্স। B&H Photo-Video তে খোঁজ করতেই দেখি দাম ৩০ ডলার কমে ১৭০ ডলার হয়েছে। আমি সোজা Shopr এ খোজ করলাম। দাম সব মিলিয়ে হয়তো ১৮+ হাজার আসবে। আমি দেরী না করে অর্ডার করে দিলাম। গতকাল হাতে পেয়েছি। আজ ছবি তুলতে গিয়ে বুঝলাম ক্যামেরা হাতে নিয়ে ছবি তোলা শুধূ কঠিনই না, ব্যাপক কঠিন। ১০-১‌২টা ছবি তোলার পর এই ছবিটাই কেবল দেয়ার মতো হয়েছে। এফ/৫.৬ বা ৮ এ কিছুটা বেটার ডেপথ অফ ফিল্ড পাওয়া যায়। এফ/২ বা ২.৪ এ চুল পরিমান নড়লেই ছবি আউট অফ ফোকাস হয়ে যায়। এফ/১৬ এ ভিউ ফাইন্ডার দিয়ে প্রায় কিছুই দেখা যায় না (মেঘলা দিনের আলোতে)।

Crown of Thorns

আজ সকালে আরো একবার হাতে নিলাম লেন্সটা। উদ্দেশ্য ঘরের ভিতর ট্রাইপডে বসিয়ে আর্টিফিসিয়ািল আলোতে কেমন ছবি তোলা যায় সেটি পরীক্ষা করা। ফলাফল – ফোকাস করাটা আসলেই কঠিন। তবে আমার সাবজেক্ট খূব ভাল ছিলো না বলতেই হবে, একটা কমলালেবু নিয়ে চেষ্টা করছিলাম। পরবর্তীতে পাঁচ টাকার কয়েন দিয়ে ট্রাই করলাম। কিছুটা ভাল রেজাল্ট পেয়েছি এবার।

Orange

আপনি কি কিনতে চান এই লেন্স ? দাম ১৮ হাজার টাকা। বলা চলে এর চাইতে অনেক কমে রিভার্স রিং অথবা এক্সটেনশন টিউব ব্যবহার করে প্রায় কাছাকাছি মানের ম্যাক্রো ছবি আপনি পেতে পারেন। আর টাকা যদি খরচ করতেই হয় তো ডেডিকেটেড ম্যাক্রো লেন্স কিনে নিতে পারেন, যেমন সিগমা ১০৫ মিমি ম্যাক্রো লেন্স। যা আপনি ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি ছাড়াও ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু এই মিটাকন ঝঙ্গি লেন্স শুধূমাত্র এই ধরণের ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি করতেই কাজে লাগবে।

5 Taka coin

হ্যাপি ক্লিকিং

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।