হ-য-ব-র-ল (২)

দিনলিপি ২০শে ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

উত্তরায় মশা ব্যাপক বেড়েছে। এখন আর কোন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। না মশার কয়েল, না কোন স্প্রে, না কোন ভেপর – কোন কিছু দিয়েই আর মশাকে দূরে ঠেলে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিছুক্ষণ হয়তো একটু কম থাকে, আবার যে কে সেই। মনে হচ্ছে এখনকার মশারা সব কিছু প্রুফ হয়ে গেছে। তবে সবচেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার হলো দিনের বেলাতেও এরা উৎপাত করে এখন। আপাতত এদের হাত থেকে বাঁচতে মশারীর দারস্থ হতে হচ্ছে। মশারী ছাড়া থাকার সময় হাতের একটা গামছা বা গেঞ্জি রাখি। উড়াউড়ি শুরু করলেই সেই ব্যাট চালানোর মতো গামছা / গেঞ্জি দিয়ে বাড়ি।

দিনলিপি ২১শে ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

আজ ২১শে ফেব্রুয়ারী। ১৯৫২ সালের আজকের এই দিনে রাজপথে রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলো কিছু তরুণ। তাদের ত্যাগের কারণেই আজ বাংলায় কথা বলতে পারছি, লিখতে পারছি। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ভাষা শহীদদের।

২০১৯ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারীর আগের রাত্রে ঘটে গেলো আরেক ভয়বহ ঘটনা। চকবাজারে আগুন লেগে পুড়ে মারা গেলেন ৭৮ জন (এখন পর্যন্ত), অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, কেউ কেউ নিখোঁজ। ২০১০ সালের ৩রা জুন একই ধরণের অগ্নিকান্ডে মারা গিয়েছিলো ১১৯ জন। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করলে হয়তো চকবাজারের এই অগ্নিকান্ড ঘটতো না। ট্র্যাজেডি হলো সেসময় যে সরকার ক্ষমতায় ছিলো, এখনও সেই সরকার ক্ষমতায় আছে। সেবারো নানা প্রতিশ্রুতি ছিলো, বাস্তবায়ন হয়েছে কয়টি কেউ জানে না। তারপর শিল্প মন্ত্রী স্বয়ং বলেই ফেললেন পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল ব্যবসা উচ্ছেদ সম্ভব না, কারণ তারা বংশ পরস্পরায় ব্যবসা করছে। তার ভাষ্যে আরো জানা গেলো অগ্নিকান্ডের সুত্রপাত গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে এবং সেখানে কোন কেমিক্যাল ছিলো না। প্রতি সরকারের আমলেই এক আধজন জোকার মন্ত্রী থাকেন, সদ্য নিয়োগ পাওয়া শিল্পমন্ত্রী সেটাই মনে করিয়ে দিলেন।

আগুনে পুড়ে যাওয়াদের দলে এক দম্পতি ছিলেন, রিয়া আর রিফাত। রিয়া ছিলেন সন্তান সম্ভবা। আগুন লাগার পর রিয়া আর নামতে পারেননি শারীরিক কারণে। তার স্বামীও তার সাথে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অনাগত সন্তান সহই তারা পুড়ে যান। চিন্তা করতে গেলেই মাথা স্থবির হয়ে যাচ্ছে। আগুন থেকে পালাতে গিয়ে অনেকেই মারা যান, আর তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে বরণ করেছেন এই মৃত্যু। দুই ভাই’কে পাওয়া গেছে একসাথে, একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে ছিলেন আর তাদের মাঝে ছিলো আরেক শিশু।

নিমতলির ঘটনার দিন বিয়ের অনুষ্ঠান ছিলো রুণা, রত্না আর আসমার। আগুনে তাদের স্বজনদের অনেকেই নিহত হন। অনিশ্চিত হয়ে পরে তাদের জীবন। এই সময় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগী হয়ে এই তিন মেয়ের বিয়ে দেন। ঘটনাটি সেসময় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। অথচ গত ৮/৯ বছরে আমরা মূল কাজটিই করতে পারিনি। পুরানো ঢাকায় অলিগলি প্রচুর, এমনকি প্রধান সড়কগুলিও তেমন প্রশস্থ নয়। এরকম জায়গায় কেমিক্যালের গোডাউন, বিভিন্ন কারখানা ওয়ার্কশপ আর মানুষ একই বিল্ডিং এ। নিমতলির পর, চকবাজার। কেবল সরকারকে দোষারোপ করে হয়তো লাভ নেই। যারা ভাড়া দেন এবং নেন, তারপর চোখ বন্ধ করে ফেলেন কেমিক্যাল রাখলেন কি কারখানা বানালেন কোন হুশ থাকে না। বাড়ীওয়ালা আর গোডাউন ভাড়াটিয়ার লোভের কারণে তৈরী হচ্ছে এইরকম অনিরাপদ অবস্থা। তার সাথে যোগ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সরকারী প্রশাসনের গাফিলতি।

আমাদের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার নেই।

ফটোক্রেডিট : সাইফুর রহমান মিশু (ফেসবুক)

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।