আমাদের এক প্রতিবেশীর ছোট একটি মেয়ে আছে। বয়স আনুমানিক আড়াই-তিন বৎসর। তবে সে এখনও কথা বলতে পারে না। মুখ দিয়ে বিচিত্র সব আওয়াজ করে। তাকে ডাক্তার দেখানো হয়েছিলো। ডাক্তার বলেছেন স্কুলে ভর্তি করে দিতে। অন্য বাচ্চাদের সাথে মিশে খেলাধূলা করলে হয়তো ধীরে ধীরে কথা বলতে শুরু করবে।
মেয়ের বাবা ঢাকার বাইরে অন্য এক জেলায় ব্যবসা করেন। বেশীর ভাগ সময় ঢাকার বাইরেই থাকেন। মা সরকারী এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাদের আরো একটি মেয়ে আছে। সে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। মহিলার মা কাছেই অন্য এক বাসায় থাকেন, তিনি সকালেই এই বাসায় এসে পড়েন আবার মেয়ে অফিস থেকে ফিরলে চলে যান। সারাদিন বাসায় ধরতে গেলে ছোট মেয়ে আর নানী বাসায় থাকে।
আরেকজনের কথা বলি। বাবা-মা ছেলে’কে নিয়ে খূব চিন্তিত ছিলো, কারণ ছেলে কথা বলছিলো না। মাঝে মধ্যে একটা দুইটা শব্দ। এ পর্যন্তই। ঢাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তিনি প্রথমেই বললেন বাচ্চা যেন চিভি আর মোবাইল কম দেখে। টিভি / মোবাইলের ব্যবহার কমিয়ে বাচ্চার সাথে নিয়মিত কথা বলার পর দেখা গেলো সে বেশ কথা বলতে পারছে। এখন তো এতো কথা বলে যে কি আর বলবো।
আমার এক ভাগনি ওর মেয়ে’কে নিয়ে শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়েছিলো। সেখানেও নাকি কথা রলার সমস্যা নিয়ে প্রচুর বাবা-মা এসেছিলেন। বাচ্চারা কথা বলা শিখে বাবা-মা ভাই-বোন এবং বাসার অন্যান্য মানুষজনের কাছ থেকে। প্রথমে শুনে, তারপর বলার চেষ্টা করে। এখানে আলাপজারিতা হয় দ্বিপাক্ষিক। আর ছোট বেলা থেকেই টিভি মোবাইল বেশী ব্যবহারে অভ্যস্ত করে তুললে এই সমস্যার উৎপত্তি হয়। মোবাইল / টিভি দেখলে আলাপচারিতা হয় এক তরফা। মানে বাচ্চা কেবল শুনেই যায়। উত্তর দেয়ার কোন সূযোগ পায় না। ফলে এই সমস্যার উৎপত্তি।
তাই বাচ্চাকে যতটুকু সম্ভব বেশী সময় দিলে এবং টিভি / মোবাইলের ব্যবহার সীমিত করে দিলে সব বাচ্চাই ভাল ভাবে কথা বলা শিখবে।
ভাল থাকুন নিরন্তর।
Image Generated by GROK
ফেসবুক মন্তব্য