কার্ড অথবা স্ক্র্যাপবুক এ আমরা বিভিন্ন লেখা বা ডিজাইন লেজার প্রিন্টার, লেমিনেটিং মেশিন ব্যবহার করে ফয়েল করতে পারি এই ব্লগ পোষ্টে সেটাই বর্ণনা করা হয়েছে। সাথে থাকছে ইউটিউব ভিডিও এবং ব্যবহৃত আইটেমের লিংক।
বিয়ের দাওয়াত তো কম-বেশী সবাই পাই। চমৎকার সব কার্ডের মাধ্যমে বিয়ের দাওয়াত দেয়া হয়। অনেক কার্ডেই দেখা যায় কার্ডের ভিতরের মূল অংশটুকু সোনালী হরফে লেখা। এই কাজটি করা হয় ফয়েল দিয়ে। ফয়েল কি ? ০.১৫ মিলিমিটার থেকে ০.২৫ মিলিমিটার পূরুত্বের যে কোন কিছুই ফয়েল, এর চাইতে (০.২৫ মিলিমিটার) বেশী পূরুত্বের হলে তাকে শিট বলে। আমরা যে ফয়েল ব্যবহার করি এই কাজে সেগুলি খূব পাতলা পলিথিন টাইপ এক ধরণের ম্যাটেরিয়ালের উপর বিভিন্ন রং এ কোটিং দিয়ে তৈরী করা হয়। কার্ডে ব্যবহার করা ছাড়াও গার্মেন্টস এ ব্যবহার করা হয় এই ফয়েল।
কার্ডে ফয়েল করার জন্য আমাদের একটি লেমিনেটিং মেশিন লাগবে। ঢাকায় এই মেশিন পাওয়া যায় মোটামুটি ৩৫০০ টাকায়, তবে এর সাইজ এবং ওজন একটু বেশী। তবে হেভি ডিউটি। আমি অবশ্য আমাজন ইউকে থেকে Royal Sovereign ব্র্যান্ড এর লেমিনেটিং মেশিন আনিয়েছিলাম ইউকে শপিং হ্যাভেন নামে এক ফেসবুক গ্রুপ এর মাধ্যমে। খরচ হয়েছিলো ৩৫০০ টাকা, তবে এর সাথে ২০টি এ৪ সাইজ লেমিনেটিং পাউচ ফ্রি ছিলো।
দ্বিতীয় যে জিনিসটি লাগবে সেটি অবশ্যই ফয়েল। ঢাকায় যারা গার্মেন্টস ইন্ডাষ্ট্রিজ এর জন্য যারা বিভিন্ন ম্যাটেরিয়ালস বিক্রি করেন তাদের কাছে এই ফয়েল আছে। খুচরা কিনলে ৩০-৩৫ টাকা গজ রাখে। আর পূরো রোল কিনলে ২৫০০ টাকা (কম-বেশী হতে পারে)। তবে ক্র্যাফটিং এর জন্য গজ হিসেবে কেনাই ভাল। বিভিন্ন কালারের পাওয়া যায়, তবে ঢাকা থেকে কেনা সোনালী ফয়েল ছাড়া আর কোন ফয়েল এ আমি আশানুরুপ রেজাল্ট পাই নাই। বাইরে থেকে আনলে সবচেয়ে ভাল সোর্স হলো আলি এক্সপ্রেস, এক কালারের এ৪ সাইজের ৫০টি শিটের দাম বর্তমানে 4.99 ডলার। এছাড়া আমাজন থেকে ব্যাকপ্যাকের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যান্ড এর ফয়েল আনাতে পারেন। তবে দাম বেশী পড়ে।
এর বাইরে কার্ড তৈরীর অন্যান্য জিনিস তো লাগবেই, যেমন কার্ডষ্টক, বিভিন্ন ধরণের পেপার, এমবেলিশমেন্ট ইত্যাদি, সাথে অন্যান্য টুলস।
আপনাকে প্রথমে কোন কার্ডষ্টক অথবা সাধারণ কোন পেপারে আপনার ডিজাইন বা লেখা প্রিন্ট করতে হবে লেজার প্রিন্টারে। আবারও বলি লেজার প্রিন্টারে প্রিন্ট করতে হবে, ইঙ্কজেট প্রিন্টার বা অন্য কোন প্রিন্টারে প্রিন্ট করলে হবে না। লেজার প্রিন্টারে যে টোনার ব্যবহার করা হয় কালি হিসেবে, সেটাই এখানে মূল অনুঘটক এর কাজ করে। আপনার নিজের লেজার প্রিন্টার না থাকলে যে কোন দোকান থেকে প্রিন্ট করিয়ে নিতে পারেন। আরেকটা কাজ করতে পারেন – ইঙ্কজেট প্রিন্টারে প্রিন্ট করে ফটোকপি করতে পারেন। ফটোকপিয়ারে লেজার প্রিন্টারের অনুরুপ টোনার ব্যবহার করা হয়। আর একটি একটি কথা, ডিজাইন করতে হবে মনোক্রমে মানে কালো হতে হবে।
প্রিন্ট করার পর ফয়েল মাপমতো কেটে ডিজাইন বা লেখার উপর বিছিয়ে দিন। ফয়েল এর এক সাইড কালার (সোনালি/রুপালি বা অন্য কোন কালার) অন্য সাইড একটু ধূসর রূপালী কালারের মতো। কালারের দিকটা উপরের দিকে আর ধূসর সাইড ডিজাইনের দিকে থাকবে।
বিছানোর পর একটি অফসেট পেপার ভাঁজ করে এর ভিতরে ফয়েল সহ ডিজাইন প্রিন্ট করা পেপার / কার্ডষ্টক ঢুকিয়ে দিবেন। পূরোটা কাভার না করলেও চলবে, কেবল ফয়েলের অংশটুকু ঢাকলেই চলবে। এরপর এটিকে লেমিনেটিং মেশিনে ঢুকিয়ে দিন। লেমিনেটিং মেশিন গরম হতে মোটামুটি ৭-১০ মিনিট সময় লাগে, ঢুকানোর আগে অবশ্যই দেখে নিন সেটি যথাযথ ভাবে গরম হয়েছে কিনা। পূরো গরম হলে একটি সবুজ ইন্ডিকেটর লাইট জ্বলে উঠবে।
লেমিনেটর মেশিন থেকে বের হয়ে আসলে ফয়েলের এক কোনা ধরে উঠিয়ে ফেলুন। দেখবেন প্রিন্ট করা অংশে ফয়েল খূব চমৎকার ভাবে বসে গেছে।
ব্যবহার করা ফয়েল ও আপনি বিভিন্ন ভাবে অন্য কোন কার্ড / স্ক্র্যাপবুক প্রজেক্টে ব্যবহার করতে পারেন। সে সম্পর্কে অন্য কোন দিন কথা বলবো।
ভাল করে বুঝার জন্য ভিডিও দেখুন। সেই সাথে সাবস্ক্রাইব করুন আমার ইউটিউব চ্যানেল, লাইক দিন এবং কমেন্ট করুন
https://www.youtube.com/watch?v=kteP06k7rZk
ফয়েল ( আলি এক্সপ্রেস )
ফয়েল ( ব্যাকপ্যাক / আমাজন )
ফয়েল ( ব্যাকপ্যাক / আমাজন )
লেমিনেটিং মেশিন ( আমাজন ইউকে )
লেমিনেটিং মেশিন ( ঢাকা ) ( এরকম মেশিন পল্টন / মতিঝিল এলাকার অফিস ইকুইপমেন্ট বিক্রেতাদের কাছেও পাবেন )
ইউকে শপিং হ্যাভেন ফেসবুক গ্রুপ ( ইউকে এর বিভিন্ন অনলাইন সাইট থেকে বিভিন্ন পণ্য এনে দেয় )
শপ @ এব্রোড ( আলি এক্সপ্রেস থেকে বিভিন্ন পণ্য এনে দেয় )
Pantum P2500W Laser Printer ( আমি এই লেজার প্রিন্টার ব্যবহার করি )
হ্যাপি ক্র্যাফটিং
ফেসবুক মন্তব্য