১৮শ শতকের প্রথম দিকে ঢাকায় প্রভাবশালী বণিক সম্প্রদায় ছিলো আর্মেনীয়রা। জি এম সিরকোর নামে একজন আর্মেনীয় বণিক ১৮৫৬ সালে ঢাকায় প্রথম ঘোড়ার গাড়ি প্রচলন করেন। তখন এটি পরিচিত ছিলো ‘ঠিকাগাড়ি’ নামে। তার এই ‘ঠিকাগাড়ি’র ব্যবসা বেশ জমে উঠেছিলো এবং কালক্রমে সেটি হয়েছিলো ঢাকায় যাতায়াতের প্রধান বাহন। এক হিসাবে জানা যায় ১৮৬৭ সালে ঢাকায় ‘ঠিকাগাড়ি’র সংখ্যা ছিলো ষাটটি। আর ১৮৭৪ সালে তিনশত। ১৮৮৯ সালে র দিকে এই ‘ঠিকাগাড়ি’র সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৬শতে উন্নীত হয়েছিলো। (সূত্র : ঢাকা সমগ্র ১, পৃষ্ঠা ১৭, মুনতাসির মামুন)
পুরান ঢাকার গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত এখনও বেশ কিছু ঘোড়ার গাড়ি টিকে আছে। মানুষজন শখ করেই এসব গাড়িতে ভ্রমণ করেন। জনপ্রতি ভাড়া ৩০ টাকার মতো। একসাথে ১০-১২ জন যাত্রী নিয়ে চলতে পারে এই ঘোড়ার গাড়ি। স্থানীয়ভাবে এগুলো টমটম নামে পরিচিত। (সূত্র : সারাবাংলা)
ঢাকার বাইরে ও বেশ কিছু অঞ্চলে ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন আছে। তবে ঢাকার মতো এগুলো যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত হয় না। কুড়িগ্রাম অঞ্চলের প্রায় ৪শত চর ঘিরে আছে ৪টি নদী। তিস্তা, ধরলা, গঙ্গাধর ও ব্রহ্মপুত্র নদ। বর্ষাকালে এই অঞ্চলে যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহনের প্রধান বাহন নৌকা। শুস্ক মৌসুমে এই চরাঞ্চল হয়ে উঠে ধূ ধূ বালুচর। তখন পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত হয় ঘোড়ায় টানা গাড়ি। এসব এলাকার কয়েকশ মানুষ এসময় ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
মাইক্রোবাসের পুরাতন চাকা এবং রড দিয়ে তৈরী হয় ঘোড়ার গাড়ির মূল কাঠামো। এর উপর দেয়া হয় বাঁশের ছাউনি। প্রতিটি গাড়ি তৈরীতে খরচ হয় ১০/১২ হাজার টাকা। ঘোড়া কিনতে খরচ হয় আরো প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। সারদিন মাল পরিবহন করে তাদের আয় হয় ৮০০-১০০০ টাকা। সাধারণত হাটবারের দিন এই ঘোড়ার গাড়ির চাহিদা থাকে সর্বাধিক। (সূত্র : প্রথম আলো)
ঢাকায় থাকি, অথচ ঘোড়ার গাড়িতে চড়া হলো না আজও।
ভাল থাকুন নিরন্তর।
ছবির লিংক এখানে
ফেসবুক মন্তব্য