চিন্তায় আছি

আব্বা বেঁচে থাকতে প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গতো সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে। এমনিতে না, রেডিও’তে এলার্ম সেট করা ছিলো। আমি ৭টার মধ্যে উঠে আব্বার ডায়পার চেঞ্জ করতাম প্রথমে। তারপর ঠিক ৮টায় দিনের প্রথম খাবার দিতাম। একধরণের ফর্মূলা, সাধারণ ভাবে যেটাকে দূধ বলি। এরপর প্রতি দুই ঘন্টা অন্তর খাবার দিতে হতো। ১২টার পর থেকে খাবার দিতো বোন। বাসায় তৈরী এক ধরণের স্যুপ। শেষের দিকে অবশ্য সকাল ৮টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত ২ ঘন্টার পর পর খাবার আমিই দিয়েছি। এর ফাঁকে ফাঁকে আমি আমার ব্যক্তিগত কাজ গুলি করতাম। কোন কারণে বাইরে গেলে সেসময় বোন খাওয়াতো। ডায়পার বদল করতে হতো ৩/৪ বার। 

এই রুটিনে চলতে গিয়ে আমার বাইরে খূব একটা যাওয়া হতো না। বিশেষ করে উত্তরার বাইরে মনে হয় দুই বছরের বেশী সময় যাওয়া হয় নাই। 

এখন আব্বা আম্মা কেউ নাই। বাসায় আমি, বোন আর দূলাভাই। অঢেল সময় হাতে। ঘুম ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সকাল ৮টা, নাশতা করতে করতে কখনও ১০টা বাজে। এরপর বসি ট্যাব নিয়ে। অনলাইন পত্রিকা পড়ি, সোশ্যাল মিডিয়ায় (ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদি) ঘুরে বেড়াই। দুপুরে খেয়ে হালক একটা ঘুম দেই। এরপর হাটতে বের হই (রোজার পরে এখন পর্যন্ত হাটা বন্ধ)।বাসায় ফিরে চা খেয়ে নেটফ্লিক্স বা অন্য কোন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ঢু মারি। আর কোন কাজ না থাকলে আবার ট্যাব নিয়ে বসি। 

মাঝে মধ্যে শেয়ার মার্কেটের খবরা খবর নেই, তবে সেটাও অনলাইনে। আর কি করবো বুঝতেছি না। রাতে ঘুমানোর আগে নানা বিষয় নিয়ে চিন্তা করি। ভাবি কিছু একটা করা দরকার। কিন্তু কি করবো এখনও কিছু ঠিক করতে পারছি না। যাকেই জিজ্ঞাসা করি সেই বলে কোন কিছুই ঠিকমতো চলছে না। সুতরাং নতুন করে কিছু শুরু করার চিন্তা বাদ দেয়াই নাকি ভাল। 

আমি তাই চিন্তায় আছি …..

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।