আমার এক বন্ধুর পরিবারে ট্র্যাজেডি যেন থামছেই না। ওরা ৪ ভাই। আমার বন্ধু সবার বড়। বেশ কয়েক বছর আগে ওর ইমিডিয়েট ছোট ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডাক্তাররা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নাই। স্ত্রী আর একমাত্র পুত্র সন্তান রেখে ভাইটি চলে যায় সবাই’কে ছেড়ে।
শোক থিতু হয়ে আসলে সবার ছোট ভাই বিয়ে করে লোকান্তরিত ভাই এর স্ত্রী’কে, দায়িত্ব নেয় পুত্র সন্তানের। ভালই চলছিলো সব। এর মধ্যে স্ত্রী সন্তানসম্ভবা, সবাই বেশ খুশী। কিন্তু আবারও ছন্দপতন ঘটে এক ঝড়-জলের রাতে। সেদিন পুরো পরিবারের দাওয়াত ছিলো কোথাও। কথা ছিলো যাওয়ার সময় ছোট ভাই’কে গাড়ীতে তুলে নেয়া হবে পথিমধ্যে। কথা মতো এক মার্কেটের সামনে অপেক্ষা করছিলো সবাই মাইক্রোবাসে। তখন বাইরে বৃষ্টি। সবাই দেখলো ছোট ভাই হেটে আসতেছে মার্কেটের ভিতর থেকে। হঠাৎ কি হলো, হাটতে হাটতেই পড়ে গেলো ভাইটি। গাড়ী থেকে নেমে সবাই দৌড়ে গেলো।ভাইটি তখন সেন্সলেস। সবাই মিলেই মাইক্রোবাসে করে নিয়ে গেলো কাছের হাসপাতালে। ডাক্তার পরীক্ষা করে জানালেন আগেই মৃত্যু হয়েছে মানুষটির।
এরপর আবারও পাথরে বুক বেঁধে দিন যাপন করতে থাকে পরিবারটি। বাবা আগেই মারা গিয়েছিলেন। মা তার দুই ছেলে, ছেলের বৌ এবং নাতী-নাতনীদের নিয়ে বাস করতে থাকেন ইট-পাথরের এই নগরীতে।
সেদিন এক বন্ধুর বাসায় অনেকদিন পর আবারও দেখা হলো সেই বন্ধুর সাথে। জানলাম সপ্তাহ দুই আগে তার জীবিত ছোট ভাইটির ষ্ট্রোক করেছিলো। ডান পাশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে। এখন আছে সাভারের সিআরপি’তে।
বয়স হয়ে রোগে শোকে বৃদ্ধ বয়েসে মৃত্যু হলে সেটা মেনে নেয়া যায়, আমরা মেনে নেই ও। কিন্তু নিজের আপন ছোট ভাইদের মৃত্যু কিংবা এভাবে প্যারালাইজড হয়ে বেঁচে থাকা দেখতে কেমন লাগে !?! মা’য়ের কেমন লাগে সেটা ভাবতেও কষ্ট লাগে।
ফেসবুক মন্তব্য