জয়পুরের মহারাজ একবার জাহাজে করে আফ্রিকা থেকে একটি জিরাফ আনান তার চিড়িয়াখানার জন্য। এইরকম অদ্ভুত দর্শন বিশাল আকৃতির জীব জয়পুর কেন আশেপাশের কেউ কখনও শোনেনি, দেখা তো দূরের কথা। জয়পুর এবং আশপাশ থেকে দলে দলে লোকজন সেই চিড়িয়াখানায় ভিড় জমাতো অদ্ভুত দর্শন সেই জন্তু দেখতে। আশেপাশের দেশীয় রাজারা সম্ভবতঃ ঈর্ষান্বিত হয়েই কিছু মানুষের মাধ্যমে ধর্মের দোহাই দিয়ে রটিয়ে দিল যে এই রকম অদ্ভুত দর্শন জন্তুর উল্লেখ হিন্দু , মুসলমান বা ঈশাহী ধর্মগ্রন্থে কোথাও নেই। তাই এই জন্তুটি ঈশ্বরের সৃষ্টি না, শয়তানের সৃষ্টি। একে দেখাও পাপ। জিরাফ দেখলে তাকে নরকে বা দোজখে যেতে হবে। এই ফতোয়াতে দর্শনার্থী প্রথম চোটে অনেকটা কমে গেলেও আস্তে আস্তে আবার দুয়েক জন করে আসতে লাগল। মানুষের কৌতুহলের জোর ধর্মীয় ফতোয়ার জোরের থেকেও শক্তিশালী মনে হচ্ছিল। তখন জয়পুরের মহারাজ একটু চালাকি করে রাতের দিকেও অনেকক্ষণ চিড়িয়াখানা খোলা রাখার ব্যবস্থা করলেন। ক্রমশঃ দেখা গেল যেসব ধর্মের ধ্বজাধারী দিনের বেলায় জিরাফ বিরোধী ফতোয়ার কথা ধর্মস্থানে ভক্তদের বোঝায় তারাই আবার অন্ধকার হলে চুপিচুপি সপরিবারে জিরাফ দেখতে চিড়িয়াখানায় যায়।
এসব ভন্ড মৌলবাদীদেরই জয়পুরের লোকেরা বলত এই ব্যাটারা দিনের বেলায় ধর্মে আছে রাতের বেলায় জিরাফে। বলা বাহুল্য ক্রমশঃ এই ফতোয়ারও কোনো মূল্য রইল না।
নেট থেকে সংগৃহিত
ফেসবুক মন্তব্য