গতকাল ছিলো ১২ই মার্চ। গতবছর এই দিনে নেপালের ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে গিয়ে বিধ্বস্থ হয় বাংলাদেশের ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান। ৬৭জন যাত্রী এবং ৪ জন ক্রু এর মধ্যে নিহত হন ৫১ জন, আহত ২০ জন এবং বেঁচে আছেন ২০ জন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন প্রিয়ক আর তার ২ বছরের মেয়ে। নিহতদের তালিকায় নাম দেখে নিচের লেখাটি লিখেছিলাম ফেসবুকে।
প্রিয়কের সাথে পরিচয় ২০১৩ সালে। শখের ফটোগ্রাফী গ্রুপ সেবার আয়োজন করেছিলো তাদের ফটোগ্রাফী এক্সিবিশন কালারস অফ লাইফ। প্রিয়কের ছবি Mutual in All Rounds ছবিটি সেবার বিচারকদের দৃষ্টিতে সেরা বিবেচিত হয়েছিলো। ওর স্ত্রী এনির সাথে সেবারই দেখা হয়েছিলো। এরপর আরো কয়েকবার প্রিয়কের সাথে আমার দেখা হয়েছিলো। শেষবার দেখা হয়েছিলো বাউনিয়ায়, এয়ারপোর্টের পিছনের অংশে। আমি গিয়েছিলাম প্লেনের ছবি তুলতে, হঠাৎ দেখি প্রিয়ক আর ওমর মূন্না। সেদিন অনেক কথা হয়েছিলো, একসাথে টং দোকানের চা খাওয়া হয়েছিলো।
প্রিয়ক খূব অমায়িক ছেলে ছিলো। আচার ব্যবহারে অত্যন্ত মার্জিত। আমাকে সে অনেকবার তার শ্রীপুরের বাসায় যাওয়ার আমন্ত্রন করেছে। কিন্তু কোনবারই যাওয়া হয় নাই নানা কারণে। শেষবার বলেছিলো সাফারী পার্কে গেলে যেন ওর বাসায় অবশ্যই যাই। সে প্রোগ্রামও আর হয় নাই।
গতকাল সকালের দিকেই নিউজফিডে দেখেছিলাম ওর স্ত্রী এনির ষ্ট্যটাস। হাস্যোজ্জল দু’টি পরিবার নেপাল যাচ্ছে ঘুরতে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছবি তুলে পোষ্ট করেছিলো। দুপুরের পর আর ফেসবুকে ঢোকা হয়নি। বিকালে ফেসবুকে ঢুকতেই খবর পেলাম বিমান দূর্ঘটনার। সাথে সাথেই মনে পড়লো প্রিয়ক তো নেপাল গেছে, ওর কি অবস্থা। বিভিন্ন মাধ্যমে ওর স্ত্রী এবং সঙ্গী পরীবারটির ছবি / খবর পেলেও প্রিয়ক আর ওর মেয়ের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। আর কিছু মানুষ / মিডিয়া পরস্পরবিরোধী খবর দিয়ে কনফিউশন তৈরী করছিলো।
রাতে মাননীয় পররাস্ট্র মন্ত্রীর ষ্ট্যাটাস থেকেই জানতে পারলাম প্রিয়ক আর ওর ২ বছরের মেয়ের নিহত হওয়ার খবর।
ওর স্ত্রী তখনও জানে না প্রিয়ক আর মেয়ের খবর। প্রিয়কের বাবা নেই। মা আছেন। ওর স্ত্রী আর মা যেন এই শোক সামলে উঠতে পারেন এই কামনাই করি।
Rest in Peace !!!
ফটো : প্রিয়কের ফেসবুক পেজ থেকে
ফিচার ইমেজ : উইকিপিডিয়া
ফেসবুক মন্তব্য