পিছনের বিল্ডিং এ কোন এক তলায় এক পিচ্চি আছে। কতটুক পিচ্চি জানি না, কারণ কখনও দেখি নাই। তার সরব উপস্থিতি জানান দেয় যে আছে।
কোনদিন সকাল থেকে তার মায়ের গলা শোনা যায় কিছুক্ষণ পর পর ‘এই মনা উঠলা না, বেলা হয়ে যাচ্ছে’, ‘এই মনা উঠ জলদি’, ‘এই তুই উঠলি না এখনও’ ইত্যাদি। এই কাহিনী চলে হয়তো বেলা ১২টা/১টা অবধি। আবার কোন দিন সকাল থেকেই কান্নার আওয়াজ শুনি। থেমে থেমে কান্না। ওর মায়ের গলা শোনা যায় ‘এই মনা কানতেছো কেন’, ‘কি হইছে’, ‘বলো না, কান্না করেতেছো কেন’ ইত্যাদি। সেই কান্নাও হয়তো থামে ১২টা / ১টার পর। বাকি দিন হয়তো সে নানা অপকর্ম করে বেড়ায় আর তার মায়ের চিৎকার শোনা যায়। এই সময় গুলিতে মহিলা হয়তো ফোনে কারো সাথে কথা বলেন। বলা চলে তার মায়ের ফোনে কথা বলার সময়টিই পিচ্চি বেছে নেয় তার নানারকম এডভেঞ্চার এর জন্য।
আবার প্রায় দিনই রাত ১১টার পর শুরু হয় তার প্লে টাইম। চিৎকার, চেচামেচি আর হাসি। মাঝে মধ্যে ওর মায়ের গলাও শোনা যায় ‘এই মনা ঘুমাতে আসো’, ‘রাত হয়ে যাচ্ছে’, ‘এখন খেলার সময় নাকি’, ‘সকালে আবার খেলবা’ ইত্যাদি।
আমার ঘুম বেশ পাতলা। চেষ্টা করি ১০টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে ১১টার মধ্যে শুয়ে পড়তে। কিন্তু দেখা যায় পিচ্চি আর তার মায়ের জন্য অনেক সময় রাত ১২টার সময় জেগে থাকতে হয়। ইদানিং আরেক নতুন উৎপাত শুরু হয়েছে। সেদিন রাত প্রায় আড়াইটার সময় হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলো। কে যেন খ্যা খ্যা করে হাসতেছে আর ইংরেজিতে কথা বলতেছে। কিছুক্ষণ পর বুঝলাম কেউ অনলাইনে গেম খেলতেছে।
এইভাবেই চলছে জীবন।