অটো হোয়াইট ব্যালান্স

ক্যামেরায় তো অনেক ধরণের সেটিংস থাকে, যার অনেকগুলো ছবি তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে একটি হলো হোয়াইট ব্যালান্স। আমাদের চারিদিকে বিভিন্ন ধরণের আলো আছে, সেগুলি সাবজেক্ট বা আশেপাশের সব কিছুর রং কিছুটা হলেও বদলে দেয়। ফলে ক্যামেরায় ছবি তুললে বিভিন্ন এলিমেন্টের সেই ন্যাচারাল কালার আর পাওয়া যায় না। যেমন – ঘরে যদি টাংষ্টেন বাল্ব থাকে তবে সব কিছুতে এক ধরণের হলুদ রং দেখা যায়। ফ্ল্যাশে ছবি তুললে একটু নীলাভ হয়ে যায়। ছবির এইসব হলদেটে, নীলাভ রং ঠিক করার জন্যই হোয়াইট ব্যালান্স ব্যবহার করা হয়। আরেকটু পরিস্কার করে বললে বিভিন্ন ধরণের আলোর মধ্যে আমরা যদি হোয়াইট অর্থাৎ সাদা কে সাদা দেখাতে পারি, তাহলে বাকি সব রং ও ঠিকমতো দেখাবে। ক্যামেরার তুলনায় মানুষের চোখ অনেক বেশী সংবেদনশীল, তাই বিভিন্ন ধরণের আলোর মধ্যেও খূব দ্রুত এডজাষ্ট করে নিয়ে সঠিক রং দেখাতে সক্ষম।

Color_balancing_girl

এই হোয়াইট ব্যালান্স সেটিং এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ব্যবহার করা হয় অটো হোয়াইট ব্যালান্স। বলা চলে শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই এটি সঠিক ভাবেই কাজ করে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি সঠিকভাবে কাজ করে না। যেমন –

১. আপনি যে দৃশ্যের ছবি তুলছেন সেখানে যদি কোন একটি রং বেশী জায়গা জুড়ে থাকে তবে অটো হোয়াইট ব্যালান্স সঠিক ভাবে কাজ করবে না। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনুযায়ী হোয়াইট ব্যালান্স প্রিসেট ব্যবহার করে দেখতে পারেন। যেমন দিনের বেলা হলে ডেলাইট হোয়াইট ব্যালান্স, মেঘলা দিন হলে ক্লাউডি হোয়াইট ব্যালান্স, রাতে ফ্ল্যাশ ব্যবহার করলে ফ্ল্যাশ হোয়াইট ব্যালান্স বা ঘরের আলোর উৎস বিবেচনা করে Incandescent বা ফ্লুরোসেন্ট হোয়াইট ব্যালান্স ইত্যাদি।

২. দৃশ্যের ব্যাকগ্রাউন্ডে যদি এক ধরণের আলো থাকে এবং ফোরগ্রাউন্ডে আরেক ধরণের তখন অটো হোয়াইট ব্যালান্স ঠিকমতো কাজ করবে না। সেক্ষেত্রে আপনার সাবজেক্টের উপর যে আলো আছে সেটার উপর ভিত্তি করে হোয়াইট ব্যালান্স প্রিসেট ঠিক করে নিন।

৩. শহরে রাতের বেলা সাধারণত নানা ধরণের আলো ব্যবহার করা হয়। বিয়ে বাড়ীতেও একই অবস্থা। নানা ধরণের এবং নানা রং এর আলোয় অটো হোয়াইট ব্যালান্স হয়তো খেই হারিয়ে ফেলতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে Incandescent হোয়াইট ব্যালান্স ব্যবহার করে দেখতে পারেন অথবা গ্রে কার্ড / কাপড় ব্যবহার করে শুরুতেই সঠিক হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করে নিতে পারেন।

টিপস : যারা RAW ফরম্যাটে ছবি তুলেন তারা পোষ্ট প্রসেসিং এর সময় খূব সহজেই হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করে নিতে পারেন। জেপিজি’তে ছবি তুললে এই সূবিধা পাবেন না।

ফটো ক্রেডিট : উইকিপিডিয়া (Dencoba CC-BY-SA)

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।