আলাপন ১৫-৫-১৮

মাঝে মধ্যে চিন্তা করি যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে লোকজন বেকার থাকে কেন। একজন রকেট ইঞ্জিনিয়ার বেকার হতেই পারে, তার কাজের ক্ষেত্র সীমিত বলে। তাহলে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত লোকজন বেকার কেন থাকে। চাইলে সে অনেক কিছুই করতে পারে। বলছি না তাকে কোথাও ক্লিনিং এর কাজ করতে হবে বা সুপার মার্কেটে সেলসম্যানগিরি। তার জন্য তো ব্যবসার সূযোগ রয়েছে অনেক। বাংলাদেশে বসে হয়তো সব কিছুই জলবৎ তরলং লাগতেই পারে। কিন্তু সূযোগ তো আছে … বাংলাদেশে চাইলেও আমরা যা করতে পারি না।

ইউটিউবে বেশ কিছু ভিডিও দেখলাম অকশন নিয়ে। বিভিন্ন রাজ্যে বেশ কিছু সংস্থা আছে যারা জিনিসপত্র রাখার জন্য জায়গা ভাড়া দেয়। অনেকেই দেখলাম তাদের বিভিন্ন জিনিসপত্র এসব ভাড়া করা জায়গায় রাখে। বিভিন্ন সাইজের জায়গা, অনেকটা গাড়ীর গ্যারেজের মতো। ছোট ছোট খুপড়ি। এই জায়গার জন্য প্রতিমাসে ভাড়া গুনতে হয়। কোন সময় হয়তো কেউ ভাড়া দিতে ব্যর্থ হয়, কেউ হয়তো মৃত্যুবরণ করে। তখন আর ভাড়া দেয়ারও কেউ থাকে না। তখন সেই সংস্থা ভাড়ার টাকার জন্য এবং জায়গা খালি করার জন্য অকশন এর ব্যবস্থা করে। কর্তৃপক্ষ শাটার খুলে দেখায়, কিন্তু বাক্স বা অন্য কোন কনটেইনারের ভিতরে কি আছে দেখতে দেয় না, ছুঁতেও দেয় না। কেবল চোখে দেখে আন্দাজ করতে হবে কত দামের জিনিস থাকতে পারে। এরপর অকশনে জিতলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা দিয়ে জিনিস বুঝে নিতে হবে এবং জায়গা খালি করে দিতে হবে। এরপর এসব নিয়ে গ্যারেজ সেল, ইবে / আমাজনে সেল করতে হবে। বেশ কয়েকটা ভিডিও দেখে আমি যা বুঝলাম ঠিকমতো বিড করতে পারলে কয়েকটা জিনিস বিক্রি করেই বিডের টাকা তুলে ফেলা যায়। কয়েকজন আছে দেখলাম তারা ফুল টাইম এই কাজই করে। মানে জীবন-ধারণের উপায় হলো এই অকশন।

তবে কিছু কিছু সৌভাগ্যবান আছে যারা জিনিসপত্রে মধ্যে মূল্যবান অনেক কিছুই পায়। যেমন – ক্যাশ টাকা, সোনার গহনা, দামী ব্র্যান্ড ফার্নিচার ইত্যাদি। এক ভদ্রলোক দেখলাম ৩৫ ডলার দিয়ে কিছু জাংক কিনলেন। ছোট একটা ব্যাগ ছিলো (ব্যাগে জামা/কাপড় ছিলো) একটা বড় ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ছিলো আর হাবিজাবি কিছু ছিলো। সবাই হাসাহাসি করছিলো তিনি এই অকশন জেতার পর। সবার সামনেই তিনি কাপড়-চোপড়ে ঠাসা ব্যাগ খুললেন। কাপড়-চোপড়ের সাথে বের হয়ে এলো ছোট একটি ওয়ালেট। আর তার ভিতর থেকে মিললো মাত্র ১৫০০ ডলার। আর কিছু কি লাগে।

এক ভদ্রলোক ৩০০-৪০০ ঢলারের মধ্যে এরকম এক অকশন জিতলেন। সর্টিং করার সময় ১৪ ক্যারেট গোল্ডের একটা চেইন পেলেন। সেটা তিনি বিক্রি করেছিলেন ১০০০ ডলারে। এক কাপল ১১০০ ডলারে আরেক অকশন জিতলেন। মহিলা অকশন জেতার পর একদম ভিতরের দিকে গিয়ে একজোড়া ফার্নিচার চেক করে দেখলেন। জানালেন দূর থেকে তিনি এই ফার্নিচারটি দেখে সন্দেহ করেছিলেন এটি অত্যন্ত দামী ব্র্যান্ড। তার অনুমান সঠিক ছিলো। এই ফার্নিচার বিক্রি করেই তারা ২৮ হাজার ডলার পেয়েছিলেন। এরকম অসংখ্য ভিডিও আছে ইউটিউবে। যারা এতোটা সৌভাগ্যবান নন, তারাও জিনিসপত্র বিক্রি করে ভালই লাভ করেন। তবে সব যে বিক্রি হয় তা কিন্তু না। কিছু আইটেম গার্বেজ হিসেবেই ফেলে দিতে হয়। একজন’কে দেখলাম তিনি আমাজন থেকে ফেরত আসা জিনিসের লট কিনছেন। অনেক ক্রেতাই আমাজন থেকে জিনিস কেনার পর সন্তুষ্ট না হলে জিনিস ফেরত দেন। ‘ওপেন বক্স’ হিসেবে সেগুলো লটে বিক্রি হয়। এই লট’কে তারা বলেন প্যালেট। ৫০০ ডলারের প্যালেট কিনে অনেক সময় হয়তো ভালই লাভ করা যায়। তবে এখন পর্যন্ত কোন ভিডিও পেলাম না যে অকশনে জিতে শেষ পর্যন্ত কেউ লুজার হয়েছে।

এই ভিডিও’টি দেখেন। মাত্র কয়েক মিনিটের ভিডিও। ছোট একটা সেফ খোলার পর রিএকশন …

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *