বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির বর্তমান চিত্র আমরা সবাই কমবেশি জানি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই রাজনীতির অনেকটাই গঠনমূলক না হয়ে পরিণত হয়েছে দলীয় ক্ষমতাকে শক্তিশালী করার হাতিয়ারে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সহযোগী ছাত্র সংগঠন পরিচালনার মাধ্যমে ক্যাম্পাসে নিজেদের প্রভাব বজায় রাখে, আর এতে জড়িয়ে পড়া বহু ছাত্রই হয়ে ওঠে দলীয় পেটোয়া বাহিনী, চাঁদাবাজ বা বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ড এমনকি খুনোখুনির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
কিন্তু প্রশ্ন হলো—এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কীভাবে সম্ভব ?
এক ধাপে পুরো সমস্যার সমাধান করা হয়তো বাস্তবসম্মত নয়। তবে ধীরে ধীরে পরিবর্তনের পথ তৈরি করা অবশ্যই সম্ভব।
প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সহযোগী সংগঠন হিসেবে সক্রিয় থাকার অধিকার সীমিত বা নিয়ন্ত্রিত করা জরুরি। ছাত্র রাজনীতি থাকতে পারে—কিন্তু তা হবে ছাত্রদের সমস্যা, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার রাজনীতি; কোনো দলের হয়ে মাঠে-ময়দানে শক্তিপ্রয়োগের রাজনীতি নয়।
দ্বিতীয়ত, কেবলমাত্র ছাত্র রাজনীতি করার উদ্দেশ্যে বছরের পর বছর মাস্টার্স বা উচ্চতর পর্যায়ে ভর্তি হয়ে থাকার প্রবণতা বন্ধে কঠোর নীতি প্রয়োজন। সম্ভব হলে শুধু অনার্স পর্যায়ে অধ্যয়নরত নিয়মিত শিক্ষার্থীদেরই ছাত্র রাজনীতি কিংবা ছাত্র সংসদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। এতে নেতৃত্বে আসবে প্রকৃত ছাত্ররা, আর ‘আদুভাই’ সংস্কৃতি বন্ধ হবে।
নিঃসন্দেহে, এমন নিয়ম ও নীতিমালা প্রণয়ন করা কঠিন। তবে কঠিন মানেই অসম্ভব নয়। সঠিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রাতিষ্ঠানিক দৃঢ়তার মাধ্যমেই একটি সুস্থ ছাত্র রাজনীতির পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব।

ফেসবুক মন্তব্য