বলধা গার্ডেন

ঢাকার পুরান শহরের ওয়ারী এলাকায় অবস্থিত বলধা গার্ডেন একটি ঐতিহাসিক ও নান্দনিক উদ্যান। ১৯০৯ সালে জমিদার নরেন্দ্রনারায়ণ রায় চৌধুরী এ বাগানটি প্রতিষ্ঠা করেন। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি বিশ্বের নানা দেশ থেকে দুর্লভ ও বিচিত্র প্রজাতির গাছ সংগ্রহ করে এখানে রোপণ করেন। ফলে এই উদ্যানটি ধীরে ধীরে শুধু ঢাকার নয়, বরং সমগ্র বাংলার জন্য এক অনন্য প্রকৃতি-সংগ্রহশালা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। 

বলধা গার্ডেন মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত— সাইকী এবং সিবলী। “সাইকী” অংশে রয়েছে নানান ধরনের শোভাময় বৃক্ষ, রঙিন ফুল ও সৌন্দর্যবর্ধক উদ্ভিদের সমাহার। অন্যদিকে “সিবলী” অংশটি অপেক্ষাকৃত শান্ত ও বৈজ্ঞানিক গুরুত্বসম্পন্ন উদ্ভিদের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে ভেষজ গাছ, বিরল প্রজাতির বৃক্ষ এবং গবেষণার উপযোগী অনেক উদ্ভিদ। বলা হয়ে থাকে, প্রায় দেড় হাজার প্রজাতির গাছপালা একসময় এখানে রোপণ করা হয়েছিল, যার অনেকগুলো এখনো টিকে আছে। এ বাগানে মোট ৮০০ প্রজাতির প্রায় ১৮,০০০ উদ্ভিদ আছে।

শুধু গাছপালা নয়, বলধা গার্ডেনে রয়েছে পাখির আস্তানা, সুন্দর পুকুরে শোভা পাওয়া পদ্মফুল, আর নিরিবিলি বসার জায়গা। শহরের কোলাহল থেকে কিছুটা দূরে এসে এখানে প্রবেশ করলে মনে হয় যেন প্রকৃতির আরেক রাজ্যে প্রবেশ করা হয়েছে। এজন্য প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের কাছে এ উদ্যান বিশেষভাবে আকর্ষণীয়।

নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর মৃত্যুর পর (১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে) বলধা গার্ডেন কলকাতা হাইকোর্টের নিয়ন্ত্রণে গঠিত ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। পরে ১৯৫১ সালে পাকিস্তান সরকারের আমলে কোর্ট অব ওয়ার্ডস ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেয়। তবে দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে বাগানের অবনতি ঘটে। ঐতিহ্য ধরে রাখার উদ্দেশ্যে ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের বন বিভাগ বাগানটির দায়িত্ব গ্রহণ করে। বর্তমানে এটি জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের আওতাধীন একটি বাগান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।

ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরে যারা কিছুটা শান্তি ও সবুজের ছোঁয়া খুঁজে পেতে চান, তাদের জন্য বলধা গার্ডেন একটি আদর্শ স্থান। ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রকৃতির সমন্বয়ে বলধা গার্ডেন আজও ঢাকার একটি অমূল্য সম্পদ।

ফটো ক্রেডিট : Amir Khosruসিসি বাই-এসএ ৪.০, সংযোগ 

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।