ফেসবুকে একজন প্রশ্ন করেছিলেন এবার পহেলা ফাল্গুন আর ভ্যালেনন্টাইনস ডে এক সাথে হলো কি করে। এতোদিন তো একদিন আগে-পরে হতো। আমার হঠাৎ মনে হলো এবছর তো লিপইয়ার। তাই হয়তো। কিন্তু সে প্রশ্নের উত্তরে আরেকজন জানালেন বাংলা একাডেমি বাংলা বর্ষপঞ্জি সংস্কার করার সুপারিশ করায় এবছর থেকে এই দু’টো তারিখ এক হচ্ছে।
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সঙ্গে বাংলা বর্ষপঞ্জির তারিখগুলোর সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানকে সভাপতি করে একটি কমিটি করা হয়। তাদের সুপারিশেই এই পরিবর্তন। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ছিলো ৮ই ফাল্গুন আর ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস ছিলো পয়লা পৌষ। কিন্তু পরবর্তীতে এই বাংলা তারিখ গুলি যথাক্রমে ৯ই ফাল্গুন এবং ২রা পৌষ হয়ে যায়। বাংলা বর্ষপঞ্জী সংস্কারের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো এই তারিখ গুলি বাংলা এবং ইংরেজী ক্যালেন্ডারে সমন্বয় করা।
পরিবর্তনের ফলে এখন থেকে বাংলা বর্ষপঞ্জীর প্রথম ৬ মাস, অর্থাৎ বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন মাস হবে ৩১ দিনের। ফাল্গুন ছাড়া বাকি ৫ মাস হবে ৩০ দিনের। কেবল ফাল্গুন মাস হবে ২৯ দিনের। তবে লিপইয়ার বা অধিবর্ষ হলে ফাল্গুন মাস হবে ৩০ দিনে।
বাংলা বর্ষপঞ্জি এর আগেও দুই বার সংস্কার করা হয়েছে। ১৯৫০-এর দশকে প্রখ্যাত জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী ড. মেঘনাদ সাহার নেতৃত্বে এবং ১৯৬৩ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে এই সংস্কার হয়। মেঘনাদ সাহার সুপারিশে বৈশাখ থেকে ভাদ্র ৩১ দিন, আশ্বিন থেকে চৈত্র ৩০ দিন ছিল, অধিবর্ষে এক দিন যুক্ত হতো চৈত্র মাসে। ‘শহীদুল্লাহ কমিটি’ মেঘনাদ সাহার সুপারিশকে সামনে রেখেই কিছু সংযোজন-বিয়োজনের সুপারিশ করে।
আজ এ পর্যন্তই। ভাল থাকবেন।
ফেসবুক মন্তব্য