হাসপাতাল

জীবন যেমন

গত কয়েক মাস ধরে শরীরে একধরণের অস্বস্তি বোধ হচ্ছিলো। মাঝে মধ্যেই মনে হয় ব্লাড সুগার বেড়ে যাচ্ছিলো। বিশেষ করে খাওয়ার পর। মুখের ভিতর কেমন যেন লাগতো, সাথে প্রচন্ড পানি পিপাসা পেতো। অথচ টেস্টে তেমন কিছু ধরা পরে নাই। সকালের দিকে পায়ের পাতা জ্বলতো, সাথে কেমন যেন ঝিনঝিনে অনুভূতি। ডাক্তার সাহেব শুনে বললেন আবার মনে হয় ইউরিক এসিড বেড়েছে।

হাসপাতাল

জীবন – মৃত্যু

আমার এক বন্ধুর পরিবারে ট্র্যাজেডি যেন থামছেই না। ওরা ৪ ভাই। আমার বন্ধু সবার বড়। বেশ কয়েক বছর আগে ওর ইমিডিয়েট ছোট ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডাক্তাররা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নাই। স্ত্রী আর একমাত্র পুত্র সন্তান রেখে ভাইটি চলে যায় সবাই’কে ছেড়ে।

ফ্ল্যাটের জীবন

আবার প্রায় দিনই রাত ১১টার পর শুরু হয় তার প্লে টাইম। চিৎকার, চেচামেচি আর হাসি। মাঝে মধ্যে ওর মায়ের গলাও শোনা যায় ‘এই মনা ঘুমাতে আসো’, ‘রাত হয়ে যাচ্ছে’, ‘এখন খেলার সময় নাকি’, ‘সকালে আবার খেলবা’ ইত্যাদি।

দূর্ঘটনা

আপাতত এই ভাবেই চলছে। আরো কিছুদিন হয়তো এভাবেই চলবো। আমার বন্ধুদের অধিকাংশই নিয়মিত কোন না কোন ঔষধ খায়। আমি একমা্র ব্যতিক্রম ছিলাম যে কোন নিয়মিত ঔষথ খেতাম না। সেটা আর থাকলো না। বুড়ো হতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু পাকেচক্রে বুড়ো হতেই হচ্ছে। কি আর করা। 

করোনা কাল ১০

ইদানিং বাসার সামনে লোকজন এসে সাহায্য চাইছে। একদল আছে প্রফেশনাল ফকির, আছে কিছু শারিরীক প্রতিবন্ধী লোকজন। বেশ কিছু লোকজন দেখা যায় যারা হয়তো ফকির না। কাপড়চোপড় দেখলে বুঝা যায় এরা নিতান্তই ঠ্যাকায় পরে এসেছে। কেউ ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এসেছে বা পাঠাচ্ছে। আজও একজন মহিলাকে দেখলাম সালোয়ার কামিজ পরা, পায়ে স্যান্ডেল, এক কাঁধে ব্যাগ আর কোলে এক বাচ্চা নিয়ে বাসার সামনে সাহায্য চেয়ে যাচ্ছে। সকালের দিকে ছোট ছোট কিশোর বয়সী কিছু ছেলেদের দেখা যায় লেবু / শষা পলিথিনে নিয়ে ফেরি করছে।

করোনা কাল ৫

সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষনার পর বাইরে গিয়েছি বড়জোর ২/৩ দিন, তাও ঔষধ আর ডায়পার কিনতে। বাসার দুই বুয়া ছুটিতে, ড্রাইভার ছুটিতে। একমাত্র বাসার কাছে এক বুয়া থাকে সে এসে কিছু কাজ করে দিয়ে যায়। একা বোনের পক্ষে সব কাজ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো। তারপর বাসায় আব্বা-আম্মা দু’জনই রোগী। দুলাভাই আর ভাগ্নে প্রথম শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলো, এরপর থেকে বাসাতেই আছে। বাসায় ভাগ্নে আর ভাগ্নে বউ এর বয়সই ৩০ এর নিচে। বাকি সবাই ৫৫ বছরের উপরে। সুতরাং আমাদের ঝুঁকি একটু বেশী।

medicine

চিকিৎসা এবং খরচ

ইদানিং চিকিৎসা খরচ মনে হয় দিন দিন বাড়ছেই। যত দিন যাচ্ছে তত চিন্তা বাড়ছে নিজের কি হবে। আব্বা-আম্মার চিকিৎসা ব্যয় না হয় পরিবারের কিছু সঞ্চয় ছিলো বলে এখন পর্যন্ত মোটামুটি করা যাচ্ছে। আর ১০/১৫ বছর পর নিজের বয়স যখন ৬৫-৭০এর কোঠায় পৌছাবে তখন কি করবো !?! আর রাজকীয় কোন রোগ হলে তো চিন্তায় করা যাচ্ছে না।

কোন এক পার্কে

ষ্টকহোম ডায়েরী (৭)

এভাবেই চলছিলো। হঠাৎ করে বাবুর্চি অসুস্থ্য হয়ে সব ওলট পালোট হয়ে গেলো। অসুস্থ্য বাবুর্চিকে স্থানীয় এক হাসপাতালে নেয়া হলো চিকিৎসার জন্য। যেহেতু ইংরেজী বা সুইডিশ বলতে পারে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই একজন বাংলাভাষীকে ডেকে আনলেন অনুবাদক হিসেবে। চিকিৎসা হলো, বাবুর্চি বাসায় ফিরে এলো এবং ২ দিনের মাথায় গৃহকর্মীকে নিয়ে পালিয়ে গেলো সূযোগ বুঝে। বড় কাক্কা প্রায় সাথে সাথেই পুলিশ ষ্টেশন সহ প্রয়োজনীয় সব জায়গাতেই রিপোর্ট করলেন। পুলিশ কিছু সময় পরে জানালো দু’জন তাদের কাষ্টোডিতেই আছে, তারা নাকি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছে। তবে সুইডিশ আইন অনুযায়ী তাদের সাথে যোগাযোগ করা বা কথা বলার কোন সূযোগ ছিলো না।