মহারাজ লজ

মহেড়া জমিদার বাড়ী

মহেড়া জমিদার বাড়ীতে আগে একবার যাওয়া হয়েছিলো। তবে সেবার তেমন একটা ছবি তুলতে পারি নাই ওয়াইড এঙ্গেল লেন্সের অভাবে। গত বুধবার দিন বোন-দুলাভাই এর সাথে আবার ঘুরে এলাম মহেড়া জমিদার বাড়ি থেকে। 

মহেড়া জমিদার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। 

আনন্দ লজ

বলা হয়ে থাকে, জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠার আগেই তারা এই ভবনগুলো নির্মাণ করেছিলেন। তারা অত্যন্ত ধনী এবং বনেদি ব্যবসায়ী ছিলেন। এলাকায় তারা বহু স্কুল, রাস্তা, পানি সরবরাহসহ জনকল্যাণমূলক অনেক কাজ করেছিলেন। এরপর তারা ধীরে ধীরে এই বিশাল ভবনগুলো নির্মাণ শুরু করেন।

আনন্দ লজ
আনন্দ লজ

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় (১৯৭১) পাকিস্তানি সেনাবাহিনী মহেড়া জমিদার বাড়িতে হামলা চালায় এবং বাড়ির বধূ যোগমায়া রায় চৌধূরী সহ পাঁচজন গ্রামবাসীকে হত্যা করে। পরবর্তীতে জমিদার পরিবারটি লোহাজাং নদী পথে নৌকায় করে দেশ ত্যাগ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে মুক্তিবাহিনীর একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল।

চৌধূরী লজ
চৌধূরী লজ

১৯৭২ সালে জমিদার বাড়িটিকে পুলিশ ট্রেনিং স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৯৯০ সালে এটি পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে উন্নীত করা হয়।

মহারাজ লজ
মহারাজ লজ

পুরো এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি আছে। মহারাজ লজ, চৌধূরী লজ, আনন্দ লজ এবং কালীচরণ লজ। নায়েব এবং অন্যান্য কর্মচারীদের জন্য আরো কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে। সেই সাথে আছে বিশাখা সাগর এবং পারসা পুকুর নামে ২টি পুুকুর। মহারাজ লজ এর পিছনে টেনিস কোর্ট এবং সুইমিং পুল আছে। চৌধূরী লজের পিছনে আছে ছোট একটি চিড়িয়াখানা, যেখানে বিভিন্ন পাখি এবং হরিণ আছে। টেনিস কোর্ট / সুইমিং পুল / চিড়িয়াখানার পিছনে এবং পারসা পুকুরের সামনে অংশে বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য আছে বিভিন্ন রাইড। মহারাজ লজ এর বিভিন্ন কক্ষ অতিথিদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়। কালীচরণ লজে একটি ছোট মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।  বাকি সব ভবন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কাজে ব্যবহার করা হয় এবং এগুলোতে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। এখানে আরো কয়েকটি ভবন তৈরী করা হয়েছে পুলিশ সদস্যদের ডরমেটরি, বাসস্থান এবং রেস্টুরেন্ট, দোকান হিসেবে। 

কালীচরণ লজ
কালীচরণ লজ

ইচ্ছে করলে আপনি নিজেও ঘুরে আসতে পারেন মহেড়া জমিদার বাড়ী থেকে। ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলগামী যে কোন বাসে ডুবাইল বাসষ্ট্যান্ডে নেমে ইজিবাই / অটোতে করে মহেড়া জমিদার বাড়ি যাওয়া যায়। ঢুকতে জনপ্রতি টিকেট লাগে। পিকনিক বা অন্য কোন অনুষ্ঠান করতে চাইলে পিটিসি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

ছবি : নিজের তোলা
তথ্য : উইকিপিডিয়া এবং অন্যান্য

ফেসবুক মন্তব্য

About the author

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।