আলাপন ৩০-৬-১৮

হাসির সাথে পরিচয় নব্বই এর দশকের প্রথম দিকে। ও ছিলো ঢাকা ভার্সিটিতে আমার কিছু বন্ধুর ক্লাসমেট। সেই হিসেবে আমারও ইয়ারমেট। তবে যখন পরিচয় হলো তখন আমরা পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফেলেছি। হাসির বিয়ে হয়েছিলো অনার্স ফাইনাল ইয়ারে থাকতেই।

হাসির যে জিনিসটা সবার আগে নজর কাড়ে সেটা হলো ওর হাসি। অসম্ভব হাসতে পারে মেয়েটা। ওর কথা শুরুর আগে শুরু হয় ওর হাসি। ওর মনে যাই থাক, হাসি কখনও কমে না। এমনকি চরম দূঃখের মধ্যেও হাসতে পারে এই মেয়ে।

ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত এবং শিক্ষিত পরিবারের মেয়ে হাসি, বিশেষ করে ওর মায়ের ফ্যামিলি। সাহিত্য জগতে ওর এক মামা বাংলাদেশে এক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব। তবে ওর বিয়েটা হয়েছিলো খূব হঠাৎ করেই। একটা শিক্ষিত পরিবারে ঢাকা শহরে জন্ম নেয়া, বেড়ে ওঠা তারপর ঢাকা ভার্সিটিতে পড়ুয়া একটা মেয়ের বিয়ে যে এভাবে হুট করে হতে পারে সেটা হাসির কাহিনী না শুনলে বিশ্বাস করা কঠিন। সেদিনও বরাবরের মতোই হাসি ভার্সিটিতে গেছে, ক্লাস শেষে ফিরে এসে দেখে বাসায় সাজ সাজ রব। ঘটনা কি জানতে গিয়ে বুয়ার কাছে শুনলো সেরাতেই তার বিয়ে। এরপর মা আর বড় বোনের কাছে শুনলো আসলেই তাই। এরপর শুরু হলো কান্নাকাটি, অনুনয়-বিনয়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। বাপ-চাচাদের এক কথা এরকম সুপাত্র (?) হাতছাড়া করা ঠিক না। পাত্র ডাক্তার, ঢাকাতেই সেটেল্ড, হাসিদের বাসা থেকে হাটা দূরত্বেই তাদের পৈত্রিক বাসা। ডাক্তার সাহেব সেসময় মনবসু স্কলারশীপ নিয়ে জাপানে পিএইচডি করছেন। বিয়ের দিন ভোররাতেই তার জাপানে ফিরে যাওয়ার কথা। আর সে কারণেই হাসির বাপ-চাচারা কয়েক ঘন্টার নোটিসে এই বিয়ের আয়োজন করেছেন।

চোখের জল আর নাকের জল এক করে হাসির বিয়ে হয়ে গেল। যেহেতু ভোর রাতেই ফ্লাইট, মুরুব্বিরা ঠিক করলেন জামাই মেয়ের বাড়িতেই থেকে যাবে। মুরুব্বিদের উদ্দেশ্য মহৎ ছিলো বলা যায়, যেহেতু জামাই-বউ কেউ কাউকে দেখে নাই বা তেমন কিছু জানে না – তাই সামান্য এই সময়ে একটু পরিচিত হওয়ার চেষ্টা। জিনিসপত্র সব গোছানোই আছে, যাওয়ার সময় কেবল নিজের বাসা থেকে তুলে নিলেই হলো। বর রয়ে গেলেন তার নবপরিণীতার সাথে। কয়েক ঘন্টার নোটিসে যেমন বিয়ে তেমনই সামান্য বিছু সময়ের বাসর রাত। তারপরও তো বাসর রাত। দু’টি মানুষের জীবনে অন্যতম স্মরণীয় একটি রাত। হাসির জীবনেও তার ব্যতিক্রম হলো না। জটিল আর কুটিল মনের এক শিক্ষিত লোকের পরিচয় পেয়ে সে রাত ন্মরণীয় হয়ে থাকলো তার জীবনে।

হাসির বাসর রাতের এই কাহিনীটা শুনেছিলাম হাসি’রই এক বন্ধুর মূখে। বাসর ঘরে ঢুকে ভদ্রলোক ঠিক কোন ভাষায় বা কিভাবে কথাগুলো বলেছিলেন সেটা আমরা কেউ ই জানি না। তবে তার মর্মার্থ হলো – শোন সময় অল্প। গল্প-গুজব করার ঢের সময় পাওয়া যাবে সামনে। এই সময়টা গল্প করে নষ্ট করার মানে হয় না। আসো লেটস মেক সাম লাভ। কথা বলতে বলতেই নাকি হাসির পরিধেয় খোলার জন্য টানাটানি শুরু করেন। বাকি সময়টা কি করে, কেমন করে কেটেছিলো হাসি জানে না। কেবল জানে সে রাত কেটে ভোর হয়েছিলো। কেউ জানলো না রাতের খবর। হাসিও নিজকে বুঝ দিতে চাইলো হয়তো অতি উত্তেজনায় এরকমটা করেছে।

স্বামী চলে গেছে জাপানে। যোগাযোগও হয় নিয়মিত। হাসি তার প্রত্যহিক জীবনে ফিরে যাওয়ার চেষ্ট করে। এদিকে তারও জাপান যাওয়ার কাগজপত্র তৈরী হচ্ছে। তবে হাসি জানিয়ে দিল অনার্স পরীক্ষা দিয়েই তবে যাবে। একসময় পরীক্ষা শেষ করে জাপানে গেল হাসি। এবারে সত্যিকারের মানুষটিকে সত্যিকারভাবে চেনার পালা। একটা শিক্ষিত পরিবারের ততোধিক শিক্ষিত একজন মানুষ, ঠিক কতোটা নিচু মনের হতে পারে ডাক্তার সাহেব সেটা প্রমাণ করলেন। সংসার শুরুর প্রথম দিন থেকেই তিনি নানা ভাবে জানতে চেষ্টা করলেন হাসির কোন এফেয়ার ছিলো কিনা। ছিলো না জানার পরও তিনি চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। এমনকি “আরে শরমের কি আছে”, “এসব তো ডাল-ভাত ঢাকা ভার্সিটিতে” এজাতীয় কথা বলে বুঝতে চাইলেন বিষয়টা কি। যেহেতু প্রেম ছিলো না, প্রতিবারই রেজাল্ট আসলো নেগেটিভ। এবার অন্য রাস্তা ধরলেন – জানতে চাইলেন কোন ছেলের সাথে ফ্রেন্ডশিপ ছিলো বেশী, কোন ছেলেটা পছন্দের, কি দেখে কেন পছন্দ এসব ছোট-খাট বিষয় জানতে চাইলেন একের পর এক। হাসি ততো দিনে বুঝে গেছে অনেকটাই। তাই উত্তর দেয়ার বেলায় যথেষ্ঠই সাবধানী । তারপরও মাঝে মধ্যে ভুল হয়ে যায়। কোনদিন হয়তো পড়াশোনায় ভাল কোন ছেলের প্রশংসা করে ফেলেছে হঠাৎ করেই, এরপর শুরু হলো ডাক্তার সাহেবের সন্দেহ, সেই সাথে গবেষণা। সেই ভাল ছেলের সাথে কেমন সম্পর্ক ছিলো, নোট নিতে হলে বা বাসায় গেছে কিনা, ছুতানাতায় হাত ধরেছে কিনা এরকম হাজারো প্রশ্নে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়তো হাসি।

এরমধ্যে হাসি একসময় প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়লো। হাসির মনে হলো এবার যদি লোকটা একটু সহজ হয়, একটু যদি সন্দেহ বাতিক কমে। কিন্তু কিসের কি। ডেলিভারীর সময় ঘটলো আরেক কাহিনী। জাপানে ডেলিভারীর সময় নাকি লেবার রুমে প্রেগন্যান্ট মহিলাটিকে সম্পূর্ণ ন্যুড অবস্থায় রাখা হয়। হাসি এটা জানতো এবং প্রথম চেকআপের সময় বিদেশী বলেই হয়তো আলাদাভাবে জানানো হয়েছিলো। ডাক্তার স্বামী তাকে প্রেশার দিচ্ছিলো সে যেন পূরো ন্যুড না হয়। পূরো ন্যুড হওয়ার ব্যাপারে হাসির নিজেরও আপত্তি ছিল। হাসি সেটা তার ডাক্তারকে বলেছিলোও, কিন্তু ডাক্তারের সাফ জবাব এটা জাপানের নিয়ম মানতেই হবে। শেষে হাসি তার ডাক্তার স্বামীকেই বললো কথাটা যেন সেই তার ডাক্তারকে বলে। কিন্তু ডাক্তার স্বামী সেটা বলতে নারাজ, কারণ এতে নাকি তার প্রেষ্টিজ যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাসিকে ন্যুড হয়েই লেবার রুমে ঢুকতে হয়েছিলো, অবশ্য সে সময় খেয়াল করার মতো অবস্থাও তার ছিল না। ডেলিভারীর সময় বাচ্চার বাবা পাশেই ছিলো সারাক্ষণ, নিশ্চুপ। সবকিছুর পর নবজাতক আর তার মাকে রেখে সবাই যখন বের হয়ে গেল বাচ্চার বাবা হাসির দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুললো সে (হাসি) নাকি ইচ্ছে করেই ন্যুড থেকেছে। হাসি তার আরেক স্মরণীয় দিন পার করলো চোখের জল আর নাকের জল এক করে।

দিন চলতে থাকলো আগের মতোই। একসময় জাপানের পাট চুকিয়ে ওরা দেশে ফিরলো। ডাক্তারের সন্দেহ বাতিক মনে হয় দিনে দিনে আরো বাড়ছে। জাপানে তো তাও বাঙ্গালি কম ছিলো বলে লোকজনের সাথে দেখা সাক্ষাৎ কম হতো। দেশে আসার পর পুরানো যোগাযোগ গুলো আবার স্থাপিত হলো। সেই সাথে হানির হাসি তো আছেই। ডাক্তার সাহেব নাকি হাসি মূখে কারও সাথে কথা বললেই সন্দেহ করতো, আর অপর পক্ষ যদি হতো পূরুষ তাহলে তো কথাই নেই। সেই বেচারা বাপের বয়সী নাকি ছেলের বয়সী সেটা কোন ফ্যাক্টর না। পূরুষ মানুষের সাথে এতো হেসে কথা কিসের, নিজের স্বামীর সাথে কথা বলার সময় তো এতো হাসি বের হয় না – নানা রকমভাবে চলতে থাকলো মানসিক যন্ত্রণা।

একদিনের কাহিনী বলি। হাসির এক ক্লাসমেট হাসির বড় বোনের দুই বাচ্চাকে প্রাইভেট পড়াতো। একদিন হাসি স্বামী সহ গেছে বাপের বাড়ী। পাশেই বোনের বাসা থেকে সেই ক্লাসমেট বাচ্চাদের পড়িয়ে বের হচ্ছে। গেটের কাছে দেখা। ছেলেটা তো এতো কিছু জানে না তখন, সে দাড়িয়ে হাসির খবর জানতে চাইলো। হাসিও ভদ্রতা রক্ষার্থে কথা বললো। হাসি তার স্বামীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই ছেলেটা “ভাইয়া কেমন আছেন” বলে হাত বাড়ালো। কিন্তু ভাইয়া তখন দিশাহারা। হাসির হাত ধরে টানতে টানতে বাসার ভিতর গিয়ে চিৎকার চেচামেচি জুড়ে দিল। হাসির মা আর অন্যান্যরা দেখলেন কি অকথ্য ভাষায় হাসিকে গালমন্দ করছে সেই লোক। গালমন্দের মর্মার্থ – হাসির সাথে এই ছেলের নিশ্চয়ই লটর-পটর আছে নাহলে এই সময় ছেলেটা বাসায় এলো কেন, আর কেনই বা হাসি মাকে দেখার নাম করে এখানে আসলো। সে সাথে না আসলে তো … ইত্যাদি ইত্যাদি। হাসির মা কিছু বলতে চাইলেন, কিন্তু তাকে কিছু বলার সূযোগ না দিয়ে হাসির হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে চললো নিজের বাসায়।

এরপর থেকে কেবল মানসিক যন্ত্রণা না, গায়ে হাত তোলাও শুরু করলেন ভদ্রলোক। একটা সময় পর হাসি আর এসব সহ্য করতে পারলো না। সে বাচ্চার হাত ধরে চলে এলো বাপের বাড়ী। ছেলের বয়স তখন দুই-আড়াই বছর। সব জেনেও আত্মীয়স্বজনরা জোর চেষ্টা চালালেন মিলমিশ করানোর। তাদের এক কথা বাচ্চার মূখ চেয়ে মায়েরা আরো কত কিছু স্যক্রিফাইস করে। সবার মন রাখতে হাসি আবার ফিরে গিয়েছিলো, কিন্তু একটা মাসও টিকতে পারে নাই। কারণ অত্যাচারের মাত্রা আরো বহুগুণ বেড়ে গিয়েছিলো।

এদিকে ছেলেকে নিয়ে হলো আরেক সমস্যা। সে হলো মারাত্মক বাপ ন্যাওটা। মায়ের কাছে থাকতে চায় না, বাপের জন্য কান্নাকাটি করে। যেহেতু বাসা দুটোই কাছাকাছি একসময় কিছু হিতাকাঙ্খীর মাধ্যমে ছেলেকে পাঠানো হলো বাপের কাছে। এরপর থেকে ছেলেটা একবার বাপের কাছে আরেকবার মায়ের কাছে থাকা শুরু করলো। হাসিও একসময় চাকরির জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করলো, যদিও পৈত্রিক সম্পত্তির সূবাদে তার সেটা না করলেও চলতো। তবে ছেলেটা নিয়ে সমস্যা কাটলো না। আমার মনে আছে খালাম্মার অসুস্থতার খবর শুনে একদিন দেখতে গেছি বাসায়। গেটের সামনেই দেখি পিচকি দাড়ানো। “মামা কেমন আছো” বলে ওর জন্যেই আনা কিছু চকলেট ধরিয়ে দিলাম হাতে। পিচকি এক গাল হেসে একটা অশ্রাব্য গালি দিয়ে আমাকে সম্ভাশন জানালো। আমি তো পূরাই বেকুব হয়ে গেলাম। হাসি কার কাছ থেকে জানি জেনে ফেললো ব্যাপারটা। পরে আমাকে বললো বাপের কাছে গেলে সারাদিন কাজের বুয়ার ছেলে-মেয়েদের সাথে খেলে আর এইসব গালি শিখতেসে। হাসি এসময় একটা এনজিও’তে চাকরি পেলো, পোষ্টিং ঢাকার বাইরে। দুই সপ্তাহ পর পর ঢাকায় আসে দুই একদিনের জন্য, ছেলে সেসময় তার কাছে থাকে। বাকি সময় বাপের কাছে। খালাম্মার কাছে যে ছেলেকে রেখে যাবে সে উপায় নাই। আর নিজের কাছেও রাখতে পারছে না, ছেলে কয়দিন পর পর ব্যাপক কান্নাকাটি শুরু করে বাপের কাছে যাওয়ার জন্য।

এই ভাবেই চলছিলো। একসময় শুনলাম ছেলেকে নাকি তার বাপ ইন্ডিয়ার কোন বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়েছে। একসময় হাসিও পাড়ি জমালো অষ্ট্রেলিয়ায়, বড় বোনের কাছে। আমার সাথে যোগাযোগ সে সময় থেকেই বন্ধ। হঠাৎ করেই বছর তিনেক আগে শুনলাম হাসি ঢাকায়। ফোন দিয়ে পরিচয় দিতেই আবার সেই ট্রেডমার্ক হাসি। বাসায় গেলাম একদিন। খালাম্মা এখনও আছেন, তবে প্রায় শয্যাশায়ী। পিচকিটা এখনও বাপের সাথেই আছে। অবশ্য ও আর এখন পিচকি নেই, প্রায় বছর বিশেক বয়স। ঢাকায় আসার কয়েক মাসের মধ্যেই হাসির বিয়ে হলো। পাত্র ভার্সিটির শিক্ষক। হাসি অবশ্য এরমধ্যে ফিরে গেছে অস্ট্রেলিয়ায়, ইমিগ্রেশনের শর্তের কারণে।

জীবন চলছে জীবনেরই গতিতে।

==============================================================

আমার মনে অনেকদিন একটা প্রশ্ন ঘুরছিলো – একটা মানুষ, তাও আবার শিক্ষিত ফ্যামিলির ডাক্তার – এতোটা সন্দেহপ্রবণ হয় কি করে। সেটাও একদম শুরু থেকেই। আবার বাসর রাতের কান্ডটাও তো সুস্থ রুচির পরিচয় বহন করে না। সব মিলিয়ে ডাক্তার রহিম’কে মনে হয়েছে একজন চরম মানসিক রোগী। দুই-একজনের সাথে আলাপ করেছিলাম বিষয়টা। যে ধারণাগুলো বেড়িয়ে এসেছে
১. ডাক্তার রহিম হয়তো কখনও কোন প্রেমে প্রতারিত হয়েছিলেন এবং সেই প্রেমিকাকে বহুজনের বাহুলগ্নাও হতে দেখেছেন। ফলে মেয়েদের ব্যাপারে তার ধারণাটা নেগেটিভ।
২. ডাক্তার রহিম নিজেই হয়তো প্লেবয় টাইপ ছিলেন। যে মেয়ের দিকে হাত বাড়িয়েছেন তাকেই হয়তো বিছানায় নিতে পেরেছিলেন। এর থেকেও হয়তো তার ধারণা হয়েছে মেয়েরা খূব সস্তা হয়।
৩. নিজের পরিবারেই হয়তো কাউকে দেখেছেন অনৈতিক সম্পর্কে জড়াতে বা নিজেই হয়তো জড়িয়েছেন এরকম কোন সম্পর্কে। যার ফলে নিজের বিবাহিত স্ত্রীকে প্রথম দিন থেকেই সন্দেহ করতেন।

এরকম অনেক কিছুই ঘটতে পারে। হাসি হয়তো সাহস করে বেড়িয়ে এসেছিল, তার একটা ফাইনান্সিয়াল সাপোর্ট ছিল এটা একটা বড় কারণ। যাদের নেই তারা হয়তো দিনের পর দিন এভাবেই যন্ত্রণা সহ্য করে সন্তানের মূখ চেয়ে।

[পূর্বে প্রকাশিত লেখা]

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *