ইঙ্কজেট প্রিন্টার : ভাল-মন্দ

বাজারে এখন বেশ কিছু মডেলের ইঙ্কজেট প্রিন্টার পাওয়া যায়। কোন কোনটি শুধূই প্রিন্টার, আবার কোন কোনটির সাথে স্ক্যানারও থাকে। কিছুদিন আগেও সিঙ্গেল ফাংশন ইঙ্কজেট প্রিন্টারের দাম বেশ কম ছিলো। মোটামুটি হাজার তিনেক টাকা হলেই একটি প্রিন্টার কেনা যেতো। কিন্তু করোনার ডামাডোলে প্রিন্টারের দাম বেশ বেড়েছে। এখন মনে হয় হাজার পাঁচেক টাকার নিচে কোন ইঙ্কজেট প্রিন্টার নাই।

প্রশ্ন হলো এসব প্রিন্টার কেমন কাজ করে। প্রিন্টার হিসাবে এগুলো ভালই বলতে হবে। কোন কোনটি দিয়ে আপনি ফটো পেপারে মোটামুটি মানের ফটোও প্রিন্ট করতে পারবেন। তবে এসব প্রিন্টারের সবচেয়ে খারাপ দিক হলো এর কালির দাম। মোটামুটি  ২/৩টি কালি (কার্ট্রিজ) এর দামে আপনি একটি প্রিন্টার কিনে নিতে পারেন। যদিও বাজারে অরিজিনাল কার্ট্রিজ এর বিকল্প আরো কিছু আছে। এদিন দিয়ে ড্রাম / ট্যাংক সিস্টেম ইঙ্কজেট প্রিন্টার গুলি বেশ ভাল সার্ভিস দেয়। তবে এসব ট্যাংক সিস্টেম প্রিন্টারের দাম আবার অপেক্ষাকৃত বেশী।

আমি প্রায় ৩ বছর আগে ইপসন এল- ৩১০ প্রিন্টার কিনেছিলাম। এর আগে ক্যাসসের গোটা দুই প্রিন্টার ব্যবহার করেছি। ইপসন এল-৩১০ এর দাম ছিলো ১০,৫০০ টাকা। সাথে ৪টি কালিও দেয়া ছিলো। সেলার বলেছিলেন এই কালি দিয়ে ২+ বছর চলার কথা। চলেছেও তাই।

এই প্রিন্টার এবং সব ইঙ্কজেট প্রিন্টারে রেগুলার প্রিন্ট করতে হয়। অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে রাখলে প্রিন্টার হেড এ কালি জমে নজলগুলো ব্লকড হয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রিন্ট করতে গেলে দেখা যায় ঠিকমতো প্রিন্ট হচ্ছে না। আমি তাই চেষ্টার করি প্রতিদিন না হলেও ২/৩ দিন পরপর ২/৩ পাতা প্রিন্ট করতে। তাতে কিছু কালি-কাগজ খরচ হলেও প্রিন্টার ভাল থাকে।

এবার আসুন কালির ব্যাপারে। ইপসন এল-৩১০ প্রিন্টারের অরিজিনাল কালির দাম ২২০০ টাকার মতো। প্রিন্টারের সাথে আসা কালি দিয়ে ২+ বছর চললেও পরবর্তীতে কেনা অরিজিনাল কালি দিয়ে কতদিন চলবে  সেটি কিন্তু অজানা। আমি অরিজিনাল কালি একবার কিনে ৬ মাস পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারি নাই। এরপর অরিজিনাল কালি কিনবো কি কিনবো না করতে করতে দারাজ থেকে ৩০০ টাকা দিয়ে কালি কিনে ব্যবহার করছি। প্রিন্ট কোয়ালিটি উনিশ-বিশ। আমি বেশ কিছু ফটোও প্রিন্টও করেছি এই কালি দিয়ে। আমার অবশ্য কাল কালি নিয়ে এখটু সমস্যা হয়েছিলো ফটো প্রিন্টের সময়। আগের অরিজিনাল কালো কালি এবং পরের ৩০০ টাকা দামের কালি মিক্স হওয়ার পর ছবির কালো অংশগুলো ঠিকমতো প্রিন্ট হচ্ছিলো না। পরে সিরিঞ্জ দিয়ে কালি প্রায় সবটাই টেনে ফেলে দেয়ার পর প্রিন্ট ঠিকমতোই হচ্ছে। এখন ৩০০ টাকার কালি ৬ মাস গেলেও চলবে। আপাতত তাই ঠিক করেছি ২২০০ টাকা দিয়ে অরিজিনাল কালি আর কিনবো না। এই কালিই ব্যবহার করবো।

তবে আপনারা আপনাদের প্রিন্টারের এরকম বিকল্প কালি ব্যবহার করলে নিজ দায়িত্বেই করবেন। প্রিন্টার বা প্রিন্টার হেডের কোনরকম ক্ষতি হলে আমি দায়ী হবো না।

ভাল থাকুন নিরন্তর।

 

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।