মিডিয়াম ওয়েভ রিসেপশন

ইদানিং মিডিয়াম ওয়েভ এর ব্যাপারে বেশ আগ্রহ হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ বেতারের বেশীরভাগ কেন্দ্রই এখন পর্যন্ত রেডিও’তে শুনতে পারি নাই। ১০ / ২০ কিলোওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র তো বটেই ১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রও হয়তো ঠিকমতো শুনতে পাই না। ঢাকায় বসে ঢাকা ৬৩০, ৬৯৩, ৮১৯ এবং ১১৭০ কিলোহার্টজ এবং খূলনা ৫৫৮ কিলোহার্টজ শুনতে পারি। চট্টগ্রাম ৮৭৩ কিলোহার্টজ কেবল রাতে শোনা যায়, তবে সব সময় না। যদিও চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ট্রান্সমিটার ১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতার বলা হচ্ছে। হয়তো পুরাত হয়ে যাওয়ায় পূর্ণ ক্ষমতায় প্রচার সম্ভব হচ্ছে না। 

ইন্টারনেট এর বদৌলতে দেখতে পাই বিভিন্ন দেশের লোকজন ছোট ছোট রেডিও সেট আর স্পেশালাইজড এন্টেনা (FSL) দিয়ে বহু দূরের কম ক্ষমতা, ১০-২০ কিলোওয়াট এর রেডিও ষ্টেশন লগ করছে। গত কিছুদিন ধরেই Tecsun PL-990 এবং PL-330 দিয়ে মিডিয়াম ওয়েভ ম্যানুয়ালি স্ক্যান করছি। এই সময়টা অবশ্য মিডিয়াম ওয়েভ রিসেপশন এর জন্য ঠিক ভাল সময় না। মিডিয়াম ওয়েভ ডিএক্সইং এর জন্য শরৎ-হেমন্ত (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর-নভেস্বর) হলো সবচেয়ে ভাল সময়। আমি গতবছর সেসময় ওমান এবং পাকিস্তানের ২টা কেন্দ্র শুনতে পেরেছিলাম। সাধারণভাবে এখন ভারতীয় আকাশবানীর বিভিন্ন কেন্দ্র শোনা যায়। কখনও বেশ ভাল, কখনও কি বলছে সেটা বুঝতেই গলদঘর্ম হতে হয়। এর বাইরে চীন, মায়ানমার আর থাইল্যান্ডের কয়েকটি ষ্টেশন শুনতে পেরেছি। আপাতত রেডিও’র বিল্ট ইন ফেরাইট রড এন্টেনা দিয়েই কাজ করছি। পরে হয়তো Tecsun AN-200 লুপ এন্টেনা ব্যবহারের ইচ্ছে আছে।

সব গুলো ষ্টেশন এখনও সনাক্ত করা সম্ভব হয় নাই। আপাতত তাই ফ্রিকোয়েন্সী দিলাম। যেগুলো সনাক্ত করা গেছে সেগুলোর নাম পাশে লিখে দিলাম। এখানে বলে রাখা ভাল আমার একটি মাত্র এনালগ রেডিও আছে, Tecsun R-9700DX। সেটি দিয়েও সবগুলো ষ্টেশন শোনা সম্ভব হয় নাই। এনালগ রেডিও’র সবচেয়ে বড় সমস্যা খূব কম জায়গায় অনেক গুলো ষ্টেশন এক সাথে থাকে। অপেক্ষাকৃত বেশী ক্ষমতার ষ্টেশন থেকে কম ক্ষমতার ষ্টেশন আলাদা করা বেশ কঠিন। ফাইন টিউনিং থাকলে হয়তো সূবিধা হতো। কিন্তু R-9700DX এ ফাইন টিউনিং নাই। আর ভাল ডিজিটাল রেডিও’র বড় সূবিধা হলো একদম সঠিক ফ্রিকোয়েন্সীতে টিউন করতে পারা। সেই সাথে ব্যান্ডওয়াইডথ কন্ট্রোল করে আশে পাশের সব অনেক নয়েজ / ইন্টারফারেন্স কমিয়ে ফেলা সম্ভব। 

ষ্টেশন সনাক্ত করার জন্য ষ্টেশন আইডি শোনার অপেক্ষা করেছি। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের সাহায্যও নিতে হচ্ছে। এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্কাইওয়েভ শিডিউলস নামে একটা এপ আছে। সেটি আমাকে দারুণ সাহায্য করেছে। সাথে ভারতে হোষ্টেড গোটা তিনেক kiWiSDR এর সাহায্য নিচ্ছি। ব্রিটিশ ডিএক্স ক্লাবের একটি প্রকাশনারও সাহায্য নিচ্ছি। আর আছে WorlD Radio TV Hand Book 2021 থেকেও সাহায্য পাচ্ছি।

আসুন দেখা যাক কি কি ষ্টেশন / ফ্রিকোয়েন্সী পেলাম
549 kHz = AIR Ranchi + CNR5
558 kHz = Bangladesh Betar Khulna
567 kHz = AIR Dibrugarh
576 kHz = AIR Dibrugarh
585 kHz =
594 kHz = AIR Moitree (Kolkata)
603 kHz = CRI Vietnamese
621 kHz = AIR Unknown
630 kHz = Bangladesh Betar Dhaka (Commercial Service)
648 kHz = Unknown
657 kHz = AIR Gitanjoli (Kolkata)
675 kHz =
684 kHz =
702 kHz =
711 kHz = AIR Siliguri
720 kHz =
729 kHz =
738 kHz =
747 kHz =
756 kHz =
765 kHz =
783 kHz =
792 kHz = Radio Nepal
801 kHz =
819 kHz = Bangladesh Betar Dhaka
828 kHz = AIR Silchar
837 kHz =
846 kHz =
873 kHz = Bangladesh Betar Chottogram
882 kHz =
891 kHz =
927 kHz =
945 kHz =
942 kHz =
972 kHz =
1035 kHz =
1098 kHz =
1170 kHz = Bangladesh Betar Dhaka
1188 kHz =
1206 kHz = AIR Bhawanipatra Odisha
1269 kHz =
1377 kHz =
1413 kHz =
1431 kHz =
1467 kHz =
1476 kHz =
1503 kHz =
1557 kHz =
1575 kHz = VOA Thailand


Radio Receiver : Tecsun PL-990 & PL-330
Antenna : Built in Ferrite Rod Antenna

এখানে বলে রাখা ভাল গত ১লা ফেব্রুয়ারী ২০২২ থেকে বাংলাদেশ বেতার ঢাকা কেন্দ্র ৬৯৩ কিলোহার্টজ প্রতিস্থাপন কাজের জন্য বন্ধ আছে। আগামী ৩০শে এপ্রিল এটি আবার চালু করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই পোষ্টটি ক্রমান্বয়ে আপডেট করা হবে। 

হ্যাপি ডিএক্সইং

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।