কিনতে গেলে পাগল, বেঁচতে গেলে ছাগল

সন্ধ্যার সময় বোন বললো অমুকে ফোন করেছিল, কম্পিউটারের ব্যাপারে কি যেন বলবে। সেই অমুক আমাদের কাজিন। তবে কম্পিউটারের কথা শুনে আমি তেমন উৎসাহ দেখালাম না। অবশ্য তার কারণও আছে।

৮/৯ বছর আগে আমার এই কাজিনটি কম্পিউটার কিনে মহা ডাট মেরেছিল। লাখ টাকার ব্র্যান্ড কম্পিউটার, কাউকে ছুতেও দিত না। তার ব্যবহারে সেসময় মনক্ষুন্ন হয়েছিলাম সেটা বলাই বাহুল্য।

যা হোক। রাত ৮টার দিকে আবার ফোন করলো। এবার আমি ধরলাম। কুশল বিনিময়ের পর বললো সে একটা ল্যাপটপ কিনবে, তাই কম্পিউটার টা বিক্রি করবে।

আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম – কোন কম্পিউটার যেন ?
সে উল্টা আমাকে বলে – তুমি তো দেখছো, মনে নাই।
এইবার একটু ভয়ে ভয়েই বললাম – প্রসেসরটা যেন কি ছিল ?
– পেন্টিয়াম টু।
আমি এবার হেসেই বললাম – কটকটিওয়ালাকে দিয়ে দাও।
ও একটু রেগেই বললো – এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিলাম।
– কোন লাভ নাই। অচল মাল। এমনকি মনিটরটাও কেউ নিতে চাইবে না। তার থেকে কোন পিচ্চিকে প্রেজেন্ট করে দাও। হাত পাকাতে পারবে।
– একটু চেষ্টা করো না, প্লিজ।
– কোন লাভ নাই। আমার খাটনিটাই বেকার যাবে। আমি তোমাকে বড় জোর এলিফ্যান্ট রোডের এক দোকানে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি।
এইবার আস্তে করে বললো – আমি এক দোকানে বলেছিলাম।
– কত বলেছে ?
বলতে চায় না। একটু খোঁচাখুচির পর বলে – পাঁচ হাজার টাকা।
– আলহামদুলিল্লাহ! বেচে দাও।

আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পর সান্তনা দিয়ে বললাম – আসলে এমনটাই হয়। এই জিনিস কিনতে গেলে পাগল আর বেঁচতে গেলে ছাগল।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।