ভুল – ভুলো মন

ইদানিং কাজে ভুল-ত্রুটি হচ্ছে, সেই সাথে ভুলে যাচ্ছি কিছু কিছু বিষয়। এই যেমন ধরেন 

১. ব্যাংকের বাৎসরিক হিসাব বিবরণী দরকার। দুই ব্যাংকের দুটো চেকবই নিয়ে বের হলাম। যাতে ব্যাংকের একাউন্ট নাম্বার ভুল না হয়। দুই ব্যাংকের কাজ হয়ে গেলো। দ্বিতীয় ব্যাংক থেকে যখন বের হবো তখন মনে পড়লো আমার তো আরো একটা হিসাব আছে এই ব্যাংকেই, সেটার হিসাব বিবরণী আরো বেশী জরুরী। অথচ সেটার প্রয়োজনীয় কাগজ বা একাউন্ট নাম্বার আনতে মনে নাই। কি আর করা। আরো একদিন আসতে / যেতে হবে। ভাবতে ভাবতে ব্যাংক থেকে বের হয়ে বাসার দিকে রওনা হয়েছি। ফুট ওভার ব্রীজের কাছে আসতেই মনে পড়লো আমার চেকবই তো ব্যাংকে ফেলে এসেছি। আবার গেলাম। এরকম আরো একদিন হয়েছিলো। প্রথম ব্যাংকের এক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে অপেক্ষা করছি আরেক কর্মকর্তার সাথে কথা বলার জন্য। এমন সময় একজন কর্মকর্তা এসে জিজ্ঞাসা করলেন আপনার মোবাইল কি সাথে আছে ? আমি হ্যাঁ বলেই ব্যাগ খুললাম, পকেট চেক করলাম। নাই। এবার ভদ্রলোক মোবাইল এগিয়ে দিয়ে বললেন, নিন। প্রথম টেবিলে কাজ সেরে উঠার সময় ফেলে এসেছিলাম। এটা হারালে খবরই ছিলো। এবার ভাল মতো চেক করলাম আমার ব্যাংক কার্ড, চেকবই, পাসপোর্ট এগুলো ঠিকঠাক মতো আছে কিনা। 

২. এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার করবো এপ দিয়ে। দেখে শুনে সব ফিলআপ করলাম। তারপর সেন্ড বাটনে ক্লিক করলাম। স্ক্রিণশটও রাখলাম। এক ব্যাংক থেকে টাকা কেটে রাখলো। দ্বিতীয় ব্যাংকে টাকা জমা হতে সময় লাগে। সাধারণত সকাল ১০টার দিকে BEFTN করলে বিকাল ৫টার দিকে জমা হয়ে যায়। এই সিস্টেমে নাকি ম্যানুয়ালি চেক করে তারপর টাকা ছাড় করে। তাই দেরী হয়। বিকাল ৬টায় যখন টাকা যোগ হলো না, তখন আবার এপ খুলে চেক করলাম। দেখি রিসিভার ব্যাংকের একাউন্ট নাম্বার এ ২টা সংখ্যা লিখি নাই। নাম, একাউন্ট নাম্বার বা রাউটিং নাম্বার ভুল হলে ৩ দিনের মধ্যে টাকা ব্যাক করে। এবার অবশ্য ৩দিন না, পরের দিনই টাকা ব্যাক করেছিলো।

৩. ষ্ট্রিমিং সার্ভিসের মাসিক টাকা পাঠাবো। বিকাশ নাম্বার নিলাম, কত টাকা পাঠাবো সেটা জানলাম। টাকা পাঠিয়ে TrxID দিলাম। কিছুক্ষণ পরে জানালো আমি ভুল নাম্বারে টাকা পাঠিয়েছি। চেক করে দেখি ৯ এর জায়গায় ৬ দিয়েছি। কি আর করা। আবার পাঠাে হলো। এবার যে নাম্বারে পাঠিয়েছিলাম সেই নাম্বারে মেসেজ দিলাম যে ভুলে টাকাটা চলে গেছে। খরচ কেটে রেখে ফেরত পাঠালে খুশী হবো। ঈদের দিন সকাল ৬টায় ফোন আসলো। এক লোক কাঁপা কাঁপা গলায় আঞ্চলিক টানে বললো তার নাম্বারে টাকা আসায় সে মনে করেছিলো তাকে কেউ ঈদের সালামি পাঠিয়েছে। সে এরই মধ্যে কিছু টাকা দিয়ে রিচার্জ করে ফেলেছে। সে আমার টাকা পরের দিন পাঠাবে। ঈদের দিন, ভাবলাম বেচারা পরের দিন দিতে চাচ্ছে যখন মেনে নেই। বললাম ঠিক আছে, সমস্যা নাই। সেই টাকা এখনও আসে নাই। মানে ২০০ টাকা ঈদ সালামি অটো দেয়া হলো আরকি।

ভুলে যাওয়া না হয় মানা যায়। কিনউ এভাবে ভুল-ত্রুটি হলে কবে যে বিশাল কোন ধরা খাবো কে জানে। 

ভাল থাকুন নিরন্তর।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।