রিয়েলিটি শো

টিভি’তে কতো ধরণের রিয়েলিটি শো হয় আজকাল। বেশীর ভাগই হয়তো কোন ধরণের প্রতিযোগীতা। এর বাইরেও নানা বিষয় নিয়ে শো হয়। যেমন বাংলাদেশের অটো ইঞ্জিনিয়ার নিজামুদ্দিন আউলিয়া লিপু একদম পুরাতন গাড়ী সংগ্রহ করে সেগুলো রুপান্তর করেন। তবে ইদানিং Restaurant Impossible নামে এক রিয়েলিটি শো দেখছি TLC চ্যানেলে। 

এই শো’তে রবার্ট আরভিং আমেরিকার কোন এক অলাভজনক রেস্তোরায় যান। এই সব রেস্তোরা ব্যক্তি বা পারিবারিক উদ্যোগে পরিচালিত হয়ে থাকে। রোস্তোরাটি হয়তো কোন এক সময় লাভজনক এবং ঐতিহ্যবাহী রেস্তোরা ছিলো। কিন্তু নানা কারণে সেটি এখন আর লাভজনক তো নয়ই, বরং ধারাবাহিক ক্ষতির কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। 

রবার্ট রেস্তোরায় গিয়ে মালিক এর সাথে কথা বলেন এবং বুঝার চেষ্টা করেন তাদের ধারাবাহিক ক্ষতির কারণ। সব কিছু শুনে রবার্ট একটি প্ল্যান তৈরী করেন। সেই প্ল্যানে হয়তো নতুন করে ভিতরের ডিজাইন / ডেকোরেশন তৈরী করা, মেনু কাটছাট করা, স্বল্প সময়ে রান্না করা যায় এমন আইটেম পছন্দ করা। সেই সাথে ফুড কস্ট এবং লাভ হিসাব করা। এই সব কাজ তিনি বাস্তবায়ন করেন ২ দিনের ভিতর আর খরচ করেন সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার। এই কাজে তাকে সহায়তা করে একটি ডিজাইন টিম।

তবে আমার কৌতুহল মূলতঃ রেস্তোরা কেন লাভ করতে পারছে না সেসব কারণ এবং রবার্টের সমাধান। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় মালিক অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী। আবার অনেক ক্ষেত্রে পার্টনারদের (স্বামী-স্ত্রী অথবা বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড) মাঝে দ্বন্দ্ন এইসব ক্ষতির কারণ। যেমন এক এপিসোডে দেখা গেলো ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক এক রেস্তোরা এখন আর ভাল করছে না। কারণ বের হলো মালিক পরিবারের কারো পরামর্শ শুনে না। নিজেই রান্না করে এবং মনে করে সেটি অসাধারণ হয়েছে। তার মেনু সেই পুরাতন আমলের, হাল আমলের কোন আইটেম সে রান্না করে না। আবার আরেক এপিসোডে দেখা গেলো পার্টনারদের মধ্যে একজন (বয়ফ্রেন্ড) খূব বেশী পজেসিভ, নিজেকে সে অত্যন্ত উচুমানের সেফ মনে করে। সেই সাথে কর্মচারীদেরও সে কোন ট্রেনিংও দেয় নাই। এমনকি সে ব্যবসায়ের কোন রেকর্ড ও রাখে না, মানে কত টাকা খরচ হলো, কত টাকা আসলো তার কোন হিসাব নাই। রবার্ট শুরুতেই তার এই মানসিক অবস্থা নিয়ে কথা বললো। সে তার ব্যবহারের জন্য কোনদিনও তার গার্লফ্রেন্ডকে সরি বলে নাই। তার গার্লফ্রেন্ড কাম বিজনেস পার্টনার বিরক্ত হয়ে নিজেই একটা ছোট রেস্তোরা খুলে এবং সেখানকার আয় দিয়ে পার্টনারশীপ রেস্তোরার ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করে। রবার্ট চেষ্টা করে তাদের এই মনোমালিন্য দূর করার। বয়ফ্রেন্ড এর তৈরী খাবার টেষ্ট রবার্ট সেগুলো ফেলে দিতে বাধ্য হয়। রবার্ট এর মধ্যস্থতায় তাদের দুইজনের মিল হয়। বয়ফ্রেন্ড সরি বলে। ঠিক হয় তারা শুধূ বিজনেস পার্টনার হিসেবে থাকবে। গার্লফ্রেন্ড ব্যবসায়ের সব হিসাব রাখবে। বয়ফ্রেন্ড রবার্টের দেয়া মেনু অনুযায়ী খাবার তৈরী করবে। 

রিনোভেশন শেষে একদম নতুন রেস্তোরা মালিক(দের) বুঝিয়ে দেয়া হয়। 

TLC চ্যানেলে  প্রতি সোমবার রাত ৯:৩০ এবং বুধবার দূপুর ২:৩০ এই অনুষ্ঠান দেখতে পারবেন। অন্য কোন সময় প্রচারিত হয় িনা জানা নাই। আমি অবশ্য দেখি Toffee এপ দিয়ে। প্রতিটি এপিসোড ৫৫ মিনিটের। ইউটিউবে ৫-১৫ মিনিটের কিছু প্রমোশনাল ভিডিও পাবেন।

Restaurant Impossible (উইকিপিডিয়া)

ভাল থাকবেন।

 

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।