ছেঁড়া জিন্স

ঘটনা ১ :
বেশ কয়েক বছর আগের কথা। ফেসবুকে পরিচিত এক ভদ্রলোকের অনলাইন / অফলাইন শপ থেকে বেশ কয়েকটা জিন্সের প্যান্ট অর্ডার করেছিলাম। একেবারে লেটেষ্ট ডিজাইনের ওয়াশড জিন্স। ভদ্রলোক মেসেঞ্জারে জানালেন এগুলো আপনার জন্য না। এগুলো পড়বে চ্যাংড়া পোলাপান। ভদ্রলোক পরে ছবি তুলে পাঠালেন। হাটুর কাছে ছেঁড়া, এটাই নাকি এখন চলছে। আমি অবশ্য আরো আগে থেকেই এই ফ্যাশনের সাথে পরিচিত। আমাদের সময় অবশ্য কেনার পরে নিজেরাই কেটে বা ছিঁড়ে এমন অবস্থা করতে হতো, ফ্যাক্টরি থেকে রেডিমেড ছেঁড়া অবস্থায় আসতো না।

ঘটনা ২ : 
বছর দুই আগের ঘটনা। প্রবাসী এক বন্ধু বাসায় এসেছে। বহুদিন পর দেখা তার সাথে। অনেক বছর হয় প্রবাসী। বিদেশেই বিয়ে করে থিতু হয়ে গেছে। আমরা গল্প করছিলাম এমন সময় দুলাভাই আসলেন। আমি পরিচয় করিয়ে দিলাম। দুলাভাই দেখি আড়চোখে বন্ধুর প্যান্টের দিকে তাকাচ্ছেন। বন্ধুর জিন্সের প্যান্ট হাল ফ্যাশনের, হাটুর কাছে ছেঁড়া।

ঘটনা ৩ : 
ফেসবুকে প্রায় সমবয়েসী এক ভদ্রলোক স্মৃতিচারণ করছিলেন তার জিন্স প্রীতি নিয়ে। তিনি জিন্স কিনে সারারাত পরে ঘুমাতেন যাতে ক্রিজগুলো সমান হয়ে যায়, শেপ বডির সাথে এডজাষ্ট হয়ে যায়। একবার তিনি লেটেষ্ট ডিজাইনার্স জিন্স কিনলেন, হাটুর কাছে ছেঁড়া। তো একদিন সেই জিন্স বিছানার উপর রেখে বাইরে গেছেন, রাতে পরে কোখাও যাবেন বলে। ফিরে এসে সেই জিন্স আর কোথাও খূঁজে পেলেন না। শেষতক মায়ের কাছে ধর্ণা। মা জানালেন তিনি তো ঘরে কোন নতুন প্যান্ট দেখেন নাই। খাটের উপর পুরাতন ছেঁড়া একটা জিন্স ছিলো, সেটা দিয়ে নতুন একটা বালতি কিনেছেন !!!

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।