দেশের পরিস্থিতি ভাল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র পেশ করে হেলিকপ্টারে করে দেশ ত্যাগ করেন। গত মাস থেকে শুরু হওয়া কোটা বিরোধী আন্দোলনে ব্যাপক সহিংসতা এবং প্রাণহানির পর সশস্ত্র বাহিনীর পরামর্শে (কিংবা চাপে) তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। অবশ্য সশস্ত্র বাহিনীর অনুরোধে তাঁর বোন এবং ছেলেও তাকে একই পরামর্শ দিয়েছিলো।
সাদা চোখে ঘটনা আসলে কি সেটি আমরা সবাই কম-বেশী দেখেছি বা জানি। কিন্তু পর্দার অন্তরাল থেকে কে বা কারা কলকাঠি নাড়ছে সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও ঘটনা প্রবাহ দেখে অনেকেই অনেক কিছু আন্দাজ করছেন। হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আমরা বুঝতে পারবো আসলে এটি নিছক ছাত্র আন্দোলনই ছিলো না কি ভিন্ন কিছু। ইতিমধ্যে মৌলবাদী গোষ্ঠীর আস্ফালনের ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করছি।
তবে আওয়ামী লীগ ধোয়া তুলসিপাতা ছিলো না, এটি বলাই বাহুল্য। বলা হয়ে থাকে আওয়ামী লীগের প্রধানতম শত্রু খোদ আওয়ামী লীগের ভিতরেই থাকে। ছাত্রনেতা থেকে শুরু করে পাতি নেতা, বড় নেতা এবং মন্ত্রীদের ব্যাপক দূর্নীতি সরবে বা নিরবে জানা যাচ্ছিলো। সেই সাথে কয়েকজন আমলার ব্যাপক দূর্নীতির খবর পত্রিকার পাতায় চলে আসে। সেই সাথে অনেকের ব্যাপক ক্ষমতা প্রদর্শনও জনগণ প্রত্যক্ষ করে।
ছাত্রলীগ কর্মীদের কোন ভাবেই শাসন করা যায় নাই। বিশ্বজিৎ হত্যা, আবরার হত্যার মতো রোমহর্ষক ঘটনাও আমরা দেখেছি। বিশ্বজিৎ হত্্যার একবছর পর ঢাকার দ্রুত বিচার টাইব্যুনালে মামলার রায়ে ২১ জনের মধ্যে আট জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছিল। সেই মামলায় ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে, ছয়জনকে খালাস দেন। মূলতঃ তদন্তকারী কর্মকরআর গাফিলতির কারণে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ঠিকমতো দেয়া হয় নাই বলে আদালত বলেন। আর এ কারণেই এরকম সাজা হয়।
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদন্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন সাজা দিয়ে রায় দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। বর্তমানে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে শুনানীর অপেক্ষায় আছে।
এখন দেখার অপেক্ষা পরিস্থিতি আমাদের কোথায় নিয়ে যায়।
ফেসবুক মন্তব্য