প্যাডেল ষ্টিমার

বেশ কিছুদিন ধরে চিন্তা করছিলাম ঢাকার আশেপাশে কোথাও ঘুরতে যাব। এমন জায়গা যেখানে দিনে গিয়ে দিনে চলে আসা যায়। আমার প্রথম পছন্দ ছিলো মুন্সিগঞ্জ। নেট ঘেটে কিছু তথ্যও জোগাড় করেছি। দুই ভাবে যাওয়া যায়। এক লঞ্চে, দুই বাসে। আমি ঠিক করেছিলাম বাসে গিয়ে লঞ্চে ফেরত আসবো। আজ এক কাজে যেতে হলো গুলিস্তান। কাজ শেষে ভাবলাম বাস এর খোঁজখবর নিয়ে যাই।

সেই খোঁজ আর পাওয়া গেলো না। কারণ বাসের লোকজন বাসে যাত্রী হিসেবে তুলে ফেলতে যত আগ্রহী, ততটাই অনাগ্রহী তথ্য দিতে। আমি ঢাকা-শ্রীনগর-মাওয়া বাসের লোকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম শ্রীনগর নেমে ইদ্রাকপুর দূর্গে যাওয়া যাবে কিনা। সঠিক কোন তথ্য পেলাম না।

এইসব কথা বলতে বলতে আমি বাবুবাজার ব্রীজ দিয়ে ওপারে চলে গিয়েছি আর টুকটাক ছবি তুলেছি। আবার এপারে ফিরে এসেছি। বুড়িগঙ্গার তীরে দেখলাম সেই বিখ্যাত ২টি ষ্টিমার এখনও নোঙ্গর করা। ফেরার পথে ঢুকেও পড়লাম বিআইডব্লিউটিএ’র ঘাটে। খোঁজাখুজি করে একজন ষ্টাফ পেলাম। কিন্তু তিনি ছবি তুলতে দিতে বা ষ্টিমারের ভিতরে যেতে দিলেন না। কি আর করা।

১৮৭৮ সালে রিভার স্টিম নেভিগেশন কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি ব্রিটিশ কোম্পানি প্যাডেল স্টিমার সার্ভিস চালু করে। ফ্লেমিংগো, ফ্লোরিকান, লেপচা, টার্ন, অস্ট্রিচ, বেলুচিসহ আরো কিছু ষ্টিমার ছিলো। বাবুবাজার ব্রীজের কাছে যে দু’টি ষ্টিমার রাখা আছে সেগুলো হলো পিএস মাহসুদ ও পিএস লেপচা। আরো দুটি নারায়ণগঞ্জ ডকওয়ার্ড ও কাঞ্চন ব্রিজের কাছে রয়েছে। এই ষ্টিমারগুলো চলতো বাস্পীয় ইঞ্জিনে, কয়লা পুড়িয়ে। পিএস মাসউদকে ১৯৯০ সালের পরে ডিজেল ইঞ্জিনে রূপান্তর করা হয়। এই প্যাডেল ষ্টিমারগুলি সেসময় রকেট ষ্টিমার নামেও পরিচিত ছিলো। কারণ সেসময় এগুলিই ছিলো দ্রুততম নৌযান। আর দুইপাশের বিশাল দুই চাকার জন্য এটি প্যাডেল ষ্টিমার। ২০২৩ সালের ১৭ই নভেম্বর সর্বশেষ এই ষ্টিমার পরিচালিত হয়। আরো কিছু জানতে এই রিপোর্টটি পড়ে দেখতে পারেন।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।