প্যারানরমাল

ভুতে অনেকেই বিশ্বাস করে না, কিন্তু জ্বিনে বিশ্বাসীর সংখ্যা অগুনিত, কারণ ধর্মগ্রন্থে বলা আছে জ্বিনের কথা। আর তাই হয়তো জ্বিনের বাদশারা রাত-বিরাতে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে শিক্ষিত-অশিক্ষিত লোকেদের কাছ থেকে টু-পাইস কামিয়ে নিচ্ছে। আমার নিজের অবশ্য এবিষয়ে আগ্রহের কোন কমতি নাই। আর ইউটিউব থাকার কারণে এবিষয়ে নানা ভিডিও দেখি প্রায় নিয়মিত। মাঝে একবার ফেসবুকের ডিএসডি গ্রুপে এ নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়েছিলো। আজ আবার সেই পোষ্ট খূজতে গিয়ে দেখি নাই। আমার অবশ্য একটা ষ্ট্যাটাস ছিলো এই নিয়ে। সেখান থেকেই কিছু তথ্য দিচ্ছি।

ইউটিউবে যেমন প্রচুর ভিডিও আছে হন্টেড হাউজ বা প্যারানরমাল একটিভিটি নিয়ে, বাংলাদেশে অবশ্য সে পরিমাণ হন্টেড হাউজ / প্লেস বা প্যারানরমাল একটিভিটি’র খোঁজ পাওয়া যায় না। এরকমই কিছু বাড়ী বা জায়গার কথা

১. ধানমন্ডি ২৭ – সবচেয়ে বেশী যে বাড়ীটার কথা বলা হয়েছে হন্টেড প্লেস বা বাড়ী হিসেবে সেটি ধানমন্ডি ২৭ এ।  নানা রকম গল্প প্রচলিত আছে এ বাড়ী নিয়ে।

ঘটনা হলো এবাড়ীর একটি ফ্ল্যাট অনেকদিন ধরেই হয়তো বন্ধ ছিলো। বাড়ীর লোকজনও হয়তো খূব মিশুক ছিলেন না। সেই সাথে বাড়ীতে ছিলো কুকুর, যাদের এড়িয়ে বাসায় কেউ ঢুকতে পারতো না। সেই থেকে বাড়ীটি পরিচিতি পায় ভুতের বাড়ী হিসেবে। পরে বাড়ীর কোন এক মালিক ডিএসডি গ্রুপে এসে বলে যান এসবই অপপ্রচার। (এসংক্রান্ত কোন পোষ্ট খূজে পেলাম না)

২. সুকন্যা টাওয়ার – শোনা যায় সুকন্যা টাওয়ারের ৮এফ ফ্ল্যাটটিতে একটি ছোট বাচ্চার আত্মা ঘোরাঘুরি করে। ফ্ল্যাটটি গত ৩ বছর যাবত খালি, তবে এখানে মাঝে মধ্যেই আলো দেখা যায়। কিন্তু এই ফ্ল্যাটে কোন বৈদ্যুতিক লাইন ই নেই। 

গুগলের সাহায্য নিয়ে খোজাখুজি করতেই জানা গেলো RAB এই ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানি সহ বেশ কয়েকজন জঙ্গি গ্রেফতার করেছিলো। সেই থেকে ফ্ল্যাটটি খালি ছিলো।

৩. ওল্ড ডিওএইচএস – জনশ্রুতি আছে যে লেন ৪ এবং ৫ কবরস্থানের উপর নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে একটা এপার্টমেন্ট বিল্ডিং এ এক লোকের প্রেতাত্মা দেখা গিয়েছে বলে শোনা যায়। এই লোকটি ছিলো একজন সিকিউরিটি গার্ড এবং সে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে গিয়েছিলো। এখানে শয়তান উপাসনারও কিছু আলামত পাওয়া গিয়েছিলো বলে শোনা যায়।

৪. এয়ারপোর্ট রোড – এয়ারপোর্ট রোডে এক মহিলাকে দেখা যায় রাস্তার মাঝখানে, যিনি অনেক গাড়ী দূরঘটনার কারণ গয়েছেন বলে শোনা যায়। অনেক মুরুব্বিই পরামর্শ দেন নিকুঞ্জ থেকে বলাকা ভবন পর্যন্ত রাস্তায় রাত্রে গাড়ী চালানোর সময় ষ্টেরিও’র ভলিউম কমিয়ে রাখতে এবং খারাপ চিন্তা না করতে।

৫. উত্তরা ৩ নাম্বার সেক্টরে একটা এপার্টমেন্টে এক অশুভ প্রেতাত্মা আছে বলে শোনা যায়। দোতলা এবং তিন তলার অনেক বাসিন্দাই নাকি রাতের বেলা চিৎকার শুনেছেন, কারো কারো ঘুম ভেঙ্গেছে জিনিসপত্রে নাড়াচাড়ার শব্দে অতবা পা ধরে টান দেয়াতে। একজন হুজুর’কে আনা হয়েছিলো এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য, কিন্তু ফলাফল শুন্য।

৬. পূর্ব নয়াটোলা রেলক্রসিং – এখানে একজন মহিলাকে দেখা যায় তিে ছেলেকে খূজতে। রে্লওয়ের একজন জানিয়েছেন তিনি দেখেছেন এই মহিলাকে, কিন্তু অনুসরণ করতে গেলে তার চোখের সামনে থেকেই মহিলাটি অদৃশ্য হয়ে যায় ভোজবাজির মতো।

৭. সীতাকুন্ড, চিটাগাং – এখানে একটা এনজি্’র অফিসে এক ছোট মেয়েকে নাকি দেখা যায়। তালা দেয়া দরজা খোলা অবস্থায় পাওয়া গেছে বা ঘরের ফার্নিচার সরানো দেখা যায় এরকম ঘটনা দেখেছে অনেকেই।

৮. মিরেরশ্বরাই, চিটাগং – ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের মিরেরশ্বরাই অংশে অনেক ট্রাকচালকই বলেছেন রাত্রে তাদের ট্রাক থামিয়ে কোন গন্তব্যে পৌছে দিতে বলেছেন অজানা কিছু লোক। ট্রাকচালকদের ধারণা এগুলো আসলে মৃত মানুষের আত্মা।

৯. গলফ হাইটস, বনানী – গলফ হাইটসের অবস্থান বনানী কবরস্থানের পাশেই। মাঝে-মধ্যেইবাজে ধরণের গন্ধ পাওয়ার অভিযোগ এখানকার বাসিন্দাদের। এছাড়া তারা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ ও শুনেছেন।

১০. ফয়ে’জ লেক, চট্টগ্রাম – এখানে কারো কালো ছায়া এবং সাদা কাপড়ে আবৃত এক মহিলাকে দেখা যায় বলে শোনা গেছে।

১১. চলনবিল, সিরাজগঞ্জ – এখানকার চরগুলি নাকি জ্বিনদের আড্ডাখানা এবং ৩চা মন্দির আছে যেখানে সুপার ন্যাটারাল পাওয়ার এর অস্তিত্ব আছে বলে শোনা যায়।

‌‌১২. পার্কি বিচ, চিটাগাং – অনেকেই এখানে চিৎকার শুনেছেন, সেই সাথে দুর সাগরে দেখা গেছে নাবিকদের অবয়ব।

১৩. লালবাগ কেল্লা – রাত্রে ঘোড়ার মাথাওয়ালা একজন মানুষকে দেখা যায়, যার পা উল্টা। রাত্রের পালায় ডিউটি করা অনেক গার্ড ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌অসুস্থ্য বোধ করেছেন যার ব্যাখ্যা তারা দিতে পারেন নাই।

১৪. মন্দিরওয়ালা বাড়ী, বক্সিবাজার – এই বাড়ীর বাইরের আঙ্গিনায় একটি মন্দির আছে যেখান থেকে একজন সাদা কাপড় পড়া মহিলাকে বের হতে দেখেছেন অনেকেই, যুনি রাতের বেলা পুরো বাড়ী ঘুরে বেড়ান।

১৫. কুয়াকাটা – বিচের একটা অংশ নাকি রাখাইন সেটেলারদের প্রেতাত্মা বিচরণ করে।

১৬. কুমিল্লা বার্ড – কুমিল্লা বার্ডের ভিজিটরদের নাকি এক অদ্ধুভ অনুভূতি হয়। তারা পচা মাংসের গন্ধ পান। শোনা যায় এক বৃদ্ধের আত্মা ঘুরে।

ডিএসডি গ্রুপে আরো একটি বাড়ীর কথা শুনেছিলাম। বাড়ীটির অবস্থান পরিবাগ / ভুতের গলি / সেন্ট্রাল রোড এর কোথাও। বাড়ীটিতে কেউ একজন খুন হয়েছিলেন, পরে বাড়ীর মালিক নিজেও আত্মহত্যা করেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। বাড়ীটি বেশ কয়েকবার হাত বদল হলেও শেষ পর্যন্ত কেউ আর থাকতে পারে নাই। সবশেষ এবাড়ীতে একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো, কিন্তু সেই পাঠাগারেও আগুন লেগে একজন মারা যান।

আমার পোষ্ট
আমার পোষ্ট ২ 
আরো একজনের পোষ্ট  
(পোষ্টগুলি সব ক্লোজড গ্রুপে, গ্রুপের মেম্বার না হলে দেখতে পারবেন না)

Image by KELLEPICS on Pixabay

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।