সকালে মোবাইল হাতে নিতেই দেখি “একজন” ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠিয়েছেন। ছবিটাও পরিচিত। ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট গ্রহন করলাম। ঘটনা হলো এই ভদ্রলোক আমাদের গ্রামের, আত্মীয়। আমার বাপ-চাচাদের চাইতে ছোট হলেও তাদের সমসাময়িক। ফেসবুকে আমার সাথে কানেক্টেড ছিলেন। আমি সকালে রিকোয়েষ্ট পেয়ে আর কিছু চিন্তা না করেই এক্সেপ্ট করেছিলাম। অনেক সময়ই হয়তো কোন কারণে অনেকেই ইচ্ছায় কিংবা ভুলে আনফ্রেন্ড করে, পরে আবার রিকোয়েষ্ট পাঠায়। এক্ষেত্রেও সেরকম কিছু ঘটেছে মনে হয়েছিলো।
ঘটসা শুরু হলো। পিসিতে বসার পর। কিছুক্ষণ পরেই মেসেঞ্জারে সেই “একজন” এর মেসেজ। আমি রিপ্লাই দিতেই অডিও কল। রিসিভ করলাম, কিন্তু কিছু শুনি না। কেটে দিয়ে আমি কল করলাম, এবারও কিছু শোনা যায় না। এবার মেসেজ ‘আমি দূবাই এ, বাংলাদেশে আসতেছি’। এরপরের বক্তব্য অনেকটা এরকম – ফোনে কাউকে পাচ্ছি না। আমার ট্র্যাভেল এজেন্টের সাথে জরুরী যোগাযোগ করা দরকার। চিটাগাং-ঢাকা রিটার্ণ টিকেট কনফার্ম করা দরকার। আপনি কি একটু হেল্প করতে পারেবেন ? বললাম সম্ভব হলে অবশ্যই করবো। উত্তরে বললেন একটা নাম্বার দিচ্ছি রয়েল ট্র্যাভেল এজেন্সির। ওদেরকে ফোন করে বলতে হবে আমার টিকেট কনফার্ম করে যেন জিমেইলে পাঠায়। আমি কল করলাম। কথা হলো । ভদ্রলোক (?) বললেন উনি আমাদের পুরাতন ক্লায়েন্ট, কিন্তু নিয়ম-কানুন চেঞ্জ হওয়ায় এখন ডিউ পরিশোধ না করলে টিকেট কনফার্ম করা সম্ভব হবে না। ডিউ এর কথা শুনেই মাথাে ভিতর টিং করে আওয়াজ হলো, মানে সতর্কতা সংকেত। আমি ফিরতি মেসেজ দেয়ার আগে মেসেজ দাতার প্রোফাইল পেজে গেলাম। দেখি ভদ্রলোক আমার বেশ কিছু ষ্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন। এবার গেলাম আসল লোকের পেজে। সেটা যথা বিহিত আছে। কয়েকদিন আগেই পোষ্ট দিয়েছেন।
ঘটনা কোন দিকে যাচ্ছে আন্দাজ করে অরিজিনাল ভদ্রলোক’কে মেসেজ দিলাম তার অবস্থান জানতে চেয়ে। আর ফেক আইডি’কে জানিয়ে দিলাম তথাকথিত ট্র্যাভেল এজেন্সির বক্তব্য। এবার উন্মোচনের পালা। ফেক আইডি জানালো সে বিমানে থাকায় কিছুই করতে পারছে না। অথচ ঢাকায় নেমে কনফার্ম টিকেট না পেলে ঝামেলায় পড়তে হবে। শেষ মেসেজ আসলো – ১২৬০০ টাকা যদি ট্র্যাভেল এজেন্সি’কে দিয়ে দিলে তার বড় উপকার হতো। ঢাকায় নেমেই উনি আমাকে টাকা দিবেন। আমি দূঃখের সাথে জানালাম – সম্ভব না।
যদিও আশা করি নাই, তারপরও দেখি অরিজিনাল ভদ্রলোক তার অবস্থান জানিয়ে মেসেজ করেছেন। তাকে কল করা যাবে কিনা লিখতে না লিখতেই উনিই কল করলেন। জানানোর আগেই বললেন তার একাউন্ট হ্যাক হয়েছিলো। আমি তাকে বিস্তারিত জানালাম। কিভাবে সেই প্রোফাইল রিপোর্ট করতে হবে জানালাম।
সেই বাটপার প্রোফাইল আমি রিপোর্ট করার আগেই দেখি মেসেঞ্জার কনভারসেশন থেকে সব মেসেজ মুছে ফেলেছে। রিপের্ট করলাম। কতক্ষণ পর দেখি প্রোফাইল নাই। হয়তো নিজেই মুছে ফেলেছে।
তবে ঘটনা হলো সেই রয়েল ট্র্যাভেল এজেন্সির ফোন নাম্বার তো আমার কাছে রয়ে গেছে ….
01783528583
ফেসবুক মন্তব্য