ভিসা প্রার্থী

আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, এইচএসসি পাশের পর বিদেশ যাওয়ার একটা ক্রেইজ ছিলো। এখনও হয়তো আছে, হয়তো আরো বেশী। তবে সেসময় বিদেশ বলতে আমেরিকা বুঝতো সবাই, কালেভদ্রে এক-আধজন পাওয়া যেতো যারা ইউরোপ-অষ্ট্রেলিয়া-কানাডা ট্রাই করতো। সে সময় ভিসা / টোফেল নিয়ে নানা রকম মজার মজার কাহিনী ছিলো। যেমন এক ছেলে ইংরেজীতে খূব ভাল ছিলো, সে অন্যের হয়ে টোফেল পরীক্ষা দিতো। শেষ পর্যন্ত সে অবশ্য ধরা পড়ে গিয়েছিলো। নটরডেম কলেজে তার ছবি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি টানানো হয়েছিলো। সেই সাথে এডমিট কার্ডে ছবি এটাচ করার নিয়ম চালু হয়েছিলো। আরেক ছেলে ৭ বার ভিসা ফেস করার পর ভিসা পেয়েছিলো।
 
আমেরিকান এম্বেসীতে একজন ভিসা অফিসার এসেছিলেন যিনি একটু পাগলাটে ছিলেন। একবার এক ভিসা প্রার্থীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তার হবি কি, উত্তরে ছিলো বিলিয়ার্ড খেলা। বাংলাদেশের কোন ছেলে বিলিয়ার্ড খেলে বা খেলতে পারে এটা তার বিশ্বাস হয় নাই। তিনি সেই ছেলেকে তখন তার সাথে বিলিয়ার্ড খেলতে বললেন। দেখা গেলো ছেলে ভালই বিলিয়ার্ড খেলে। তার ভিসা হয়ে গেলো।
সে সময় আমেরিকান এম্বেসী ছিলো মতিঝিলের আদমজী কোর্ট বিল্ডিং এ। ভিসা দেয়া শুরু হতো সকাল ১০টায় কিন্তু লোকজন ভোর রাতে্ গিয়ে লাইনে দাঁড়াতো। কেউ কেউ আবার ইট দিয়ে নিজের জায়গা মার্ক করে ফুটপাতেই হালকা ঘুম দিতো। আরেকটু বেশী চালাক যারা তারা নিজের মার্ক করা জায়গাটা কোন জেনুইন ভিসা প্রার্থীর কাছে বিক্রি করতো।
 
সেদিন যমুনা ফিউচার পার্কে গিয়ে দেখি বিশাল লাইন। প্রথমে মনে করেছিলাম ভারতীয় ভিসার লাইন। হঠাৎ মনে পড়লো ভারতীয় ভিসা তো বন্ধ, মেডিকেল ভিসা ছাড়া দিচ্ছে না। কাজ শেষে ফেরার পথে জানলাম এটি সৌদি ভিসার লাইন। আগে মনে হয় সোনারগাঁও হোটেলে এমন ভীড় হতো। তাদের ভিসা সেন্টার যে এখানে চলে এসেছে জানা ছিলো না।
 

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।