মাজার

সেদিন গুলিস্তান থেকে পুরান ঢাকায় গিয়েছিলাম ঘোড়ার গাড়ীতে। জ্যাম দেখে আমি নেমে পড়লাম জনসন রোডের কাছে। পাশের এক গলি দিয়ে ঢুকে গেলাম। দুইপাশে হার্ডওয়্যার এর দোকান। সামনে গিয়ে দেখি কাঁচাবাজার। মাছ বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ চোখে পড়লো চিপার মধ্যে মাজার।
 
 
পাশ কেটে চলে যাওয়ার পরও আবার ফিরে এসে সামনের এক লোককে জিজ্ঞাসা করলাম ভিতরে ছবি তোলা যাবে কিনা। জানালেন যাবে। ভিতরে উকি দিতেই দেখি কয়েকজন বসে আছেন। খাদেম ভিতরে ঢুকতে বললেন। জুতা খুলে ভিতরে ঢুকলাম। সালাম দিয়ে জানতে চাইলাম বুজুর্গের নাম। তিনি দেয়ালের একটা লেখা দেখিয়ে দিলেন।
 
 
শের, এ, আলী আউলিয়া হযরত দারগ আলী শাহ্ (রাঃ) এর মাজার। মৃত্যুর তারিখ দেয়া আছে ২৪শে আগষ্ট ১৯৯১ ইং। ঠিকানা ২২, রায় সাহেব বাজার, ঢাকা ১১০০ (স্থানীয় ভাষায় রইস্যা / রাইস্যা বাজার)।
 
 
ছবি তুললাম। এদিকে আবার বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি। তাই বসে বসে কথা বললাম। জানলাম এখানেই উনি থাকতেন, মৃত্যুর ৩০ বছর আগে আসার পর নাকি এখান থেকে আর বের হন নাই। কথা বলতে বলতে হঠাৎ চোখ গেলো আলমারীর উপর রাখা হারমোনিয়ামের দিকে। প্রশ্নের উত্তরে জানালেন বৃহস্পতিবার রাতে এবং বিশেষ বিশেষ দিনে গানের আসর হয়। আশেপাশের মানুষ (বাজারের) শরিক হয়।
 
 
ফিরে আসার সময় খাদেম বললেন এদিকে আসলে যেন আবার ঘুরে যাই।
 
(চকবাজারেও এরকম একটা মাজার আছে, কিন্তু সেটা কখনও দেখা হয় নাই। হাজার হাজার দোকানের ভিড়ে ঠিক কোথায় ছিলো জানি না। আর এক গলি দিয়ে ঢুকলে কোন দিক দিয়ে বের হবো সেটা বুঝার কোন উপায়ই ছিলো না।)

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।