সদরঘাট

সেদিন গিয়েছিলাম সদরঘাট। সেখানে ২জনের সাথে কথা হলো।
 
প্রথমজন হুজুর, তবে বয়স খূবই কম। কৈশোরোত্তীর্ণ বলা চলে। কোথায় পড়ে জানতে চাইলে বলে আপাতত পড়তেছে না। তার পড়তে ভাল লাগে না। হাফেজী করেছে। বাড়ী নোয়াখালি, এখন বাংলাবাজারে এক বই এর দোকানে বসে। জিজ্ঞেস করলাম কাজে যাও নাই, উত্তরে বললো দুপুরে ভাত খেতে বের হয়েছে। লঞ্চ টার্মিনালে ঘুরতে নাকি ভাল লাগে। টার্মিনালে আগেও এসেছে, কিন্তু লঞ্চের ভিতরে কখনও দেখে নাই। এটা শুনে আমি ছেলেটাকে নিয়ে এক লঞ্চের ভিতরে ঘুরিয়ে আনলাম। বয়া আর নোঙ্গর দেখে জানতে চাইলো এগুলো দিয়ে কি করে। বাবা-মা’র কথা জানতে চাইলাম – পড়া শেষ না করায় রাগ করেন নাই? বললো বাবা একটু মন খারাপ করছে, কিন্তু কিছু বলে নাই।
 
কিছুক্ষণ পর বিদায় নিয়ে চলে গেলো। নাম বললো আমির হোসেন।
 
দ্বিতীয়জন খোকা। সেদিন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে পল্টুনের উপর বসে যখন টুকটাক ছবি তুলছিলাম তখন এক ছেলে এগিয়ে এসে জানতে চাইলো কি ভিডিও করছি। ওকে কিছু ছবি দেখালাম। কথা বলতে বলতেই জানলাম ও এখানের লেবার। তবে ওর কথা বলার ধরণ, ড্রেসআপ সব মিলিয়ে কিন্তু লেবার মনে হচ্ছিলো না। দেশের বাড়ী কিশোরগঞ্জ, তবে ঢাকায় আছে জন্ম থেকেই। পড়াশোনা ক্লাস ফোর পর্যন্ত। বাবা নাই, বেশ আগেই মারা গেছেন। তারপর থেকেই এখানে। আগে লঞ্চ থেকে ব্যবহৃত পানির বোতল সংগ্রহ করতো। তারপর সেগুলো ধূয়ে পরিস্কার করে আবার পানি ভরে বিক্রি করতো। এখন লঞ্চের যাত্রীদের মালামাল বহন করে। দিনশেষে যা পায়, তা দিয়েই কোন রকমে চলে।
 
ভিডিও করতে চাইলে রাজি হয়ে গেলো। বললো প্রশ্ন করেন, উত্তর দিবো। ভিডিও আগামীকাল (বুধবার) ইউটিউবে দিবো, আশা রাখি। ছবিতে খোকা মাঝের জন।
 

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।