খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বলা হচ্ছে কেন ? বিদেশে গেলেই তিনি ভাল হয়ে যাবেন এ কথাই বা ভাবা হচ্ছে কেন ?
তার যেসব শারীরিক সমস্যা আছে বলে পত্রিকা গুলো রিপোর্ট করছে সেসব তো আমার আব্বা-আম্মার আছে / ছিলো। আমরা তো এই বাংলাদেশের হাসপাতাল বা ডাক্তারের উপর ভরসা করেই তাদের চিকিৎসা করিয়েছি এবং করছি।
এটা ঠিক যে অনেক দিন ধরে ডায়বেটিস থাকলে সেটি যে কোন সময় হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। আবার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যায় সেটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। আমার আব্বা-আম্মারও এরকম সমস্যা হয়েছে। গত মে মাসে আম্মা মারা যাওয়ার পর আব্বা ইউরিন ইনফেকশনে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিতে হয়েছিলো। ডাক্তার পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বলেছিলেন আব্বার বয়স বেশী হওয়ার কারণে মেডিসিন ঠিকমতো কাজ নাও করতে পারে। আবার ইনফেকশনের মাত্রাও অনেক বেশী। অন্যদিকে আব্বা বেশ কিছু ঔষধে (এন্টিবায়োটিক) রেজিষ্ট্যান্ট ছিলেন। এই অবস্থায় চেষ্টা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। ভাল হলে তো ভালই, না হলে সব কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা মেনে নিয়েছিলাম। আব্বা ১১দিন পর বাসায় ফিরেছিলেন এবং এখনও কোনমতে টিকে আছেন।
খালেদা জিয়া অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন, বাসায় ফিরে কিছুদিন পর আবার অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। পত্রিকায় অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটা কারণ বলা হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস। আমার মনে হচ্ছে বাসায় তার সঠিক পরিচর্যা হচ্ছে না। হয়তো সেকারণেই তার ডায়বেটিস অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাচ্ছে। আব্বা-আম্মা দুজনের ক্ষেত্রেই দেখেছি সুগার নানা কারণেই বাড়ে। সুগার বাড়লে বা কমলে ইনসুলিনও বাড়াতে কমাতে হতো। আবার এই সুগারের উঠা-নামার কারণে ক্রিয়েটিনিন বাড়তো-কমতো। আবার নানা ধরনের সমস্যায় (ডায়বেটিস / কিডনি / প্রেসার / হার্ট ডিজিজ) নানা ধরনের ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সুগার / ক্রিয়েটিনিন / প্রেশার বাড়ে কমে। তাই ডাক্তারদের খূব হিসাব করে ঔষধ নির্বাচন করতে হতো। তারপর বয়স এখানে একটা বড় সমস্যা। তারপরও আমরা আমরা বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি এবং করছি। হয়তো সব সময় সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট হতে পারছি না। তবে ডাক্তারদের চাইতে এদেশে প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা বেশী। আনুষঙ্গিক চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ বিস্তর। ডাক্তার-রোগীর অনুপাত ও হয়তো এদেশে আরেক সমস্যা। তবে খালেদা জিয়া, যিনি এদেশের একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান, তার চিকিৎসায় এসব কোন প্রভাব ফেলার কথা না।
খালেদা জিয়ার হয়তো বাসায় পরিচর্যা ঠিকমতো হচ্ছে না। তারপর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ায় হয়তো পূর্ণ বিশ্রামেরও অবকাশ পাচ্ছেন না। এইসব কিছু ঠিকমতো হলে হয়তো তার অবস্থা বার বার খারাপ হতো না আর বিদেশ যাওয়ার আবদারও করা লাগতো না।
(একান্তই নিজস্ব ভাবনা)
(একান্তই নিজস্ব ভাবনা)
ফেসবুক মন্তব্য