এপ বাণিজ্য এবং তথ্য বেহাত

না, বিশাল কোন তত্ত্বকথার আলোচনা নয়। কেবল নিজের সামান্য অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। কিছুদিন আগে এক বন্ধু ফোনে জিজ্ঞেস করলো মোবাইলে লোকেশন সার্ভিস বন্ধ করে কিভাবে। সে এসব বিষয়ে আমার চাইতে অভিজ্ঞ লোক বলেই জানি। তাই প্রথমে একটু অবাক হয়েছিলাম প্রশ্ন শুনে। সে ব্যাখ্যা করে বললো সে লোকেশন সার্ভিস বন্ধ করে দেয় আবার সেটা কেমন করে যেন চালু হয়ে যায়। জিজ্ঞাসা করলাম তুমি পাঠাও / উবার বা কোন ম্যাপ ব্যবহার করো, উত্তরে জানালো করে। বললাম যখনই তুমি পাঠাও / উবার চালু করো সেটা লোকেশন সার্ভিস অন করে। তবে অন করার আগে তো একটা পপ আপ আসার কথা। অনেক গুলো পারমিশন চায়, তাই হয়তো খেয়াল করে নাই। এটাই আসলে হয়। আজকাল অনেক এপই তার সীমার বাইরে অনেক কিছুর পারমিশন চায়, না দিলে এপ কাজ করে না। পাঠাও/ উবারের হয়তো লোকেশন জানার দরকার আছে, কিন্তু প্রায় সব এপেরই কন্ট্রাক্ট লিষ্ট / কল লিষ্ট আর মিডিয়া ফাইল দেখার পারমিশন লাগে কেন ? আমরাও হয়তো ‘কি আর হবে’ ভেবে ওকে করে দেই। আর এভাবেই এপ আর তার ডেভেলপাররা জেনে যায় অনেক তথ্য।

গুগল পিডিএফ পড়তে পারেএর চাইতে ভয়াবহ তথ্যও আছে। কিছুদিন আগে একজন প্রবাসী ব্লগার বোর্ডিং পাসের পিডিএফ ভার্শন ইমেইল করেছিলেন ছেলের কাছে, প্রিন্ট করার জন্য। কিছুক্ষণ পর ছেলের কাছে নোটিফিকেশন আসলো গুগল থেকে। গুগল তাকে সাজেশন দিচ্ছে তার যাত্রার তারিখ ক্যালেন্ডারে যোগ করার জন্য। সাজেশনে নাম্বারও দেয়া ছিলো, মানে হলো গুঘল তার পিডিএফ ফাইলে কি আছে সেটা পাঠোদ্ধার করে ফেলেছে।

বন্ধুর সাথে কথা বলতে বলতে আসলো ট্রু কলার এপ এর প্রসঙ্গ। আমি কখনও ট্রু কলার এপ ইউজ করি নাই। তবে অনেকের কাছেই শুনেছি কোন অপরিচিত নাম্বার থেকে বিরক্তিকর কল আসলে অনেকেই এই এপ ইউজ করে কলারের নাম বের করার চেষ্টা করেন। বিশেষ করে মহিলারা ফোনে হ্যারাসমেন্টের শিকার হন বেশী, এছাড়াও আছে বিভিন্ন প্রতারক চক্র, যারা প্রতিনিয়ত ফোন করে উত্যাক্ত করছে নানা জনকে। এরকম হলে চেনা-পরিচিত অনেকেই ট্রু কলারের আশ্রয় নেন। অনেক ক্ষেত্রেই পূরো নাম না হলেও আংশিক নাম পাওয়া যায়। এখন প্রশ্ন হলো ট্রু কলার ফোনধারীর নাম কিভাবে পায় ? উত্তর খূব সোজা, ট্রু কলার আপনার কন্ট্যাক্ট লিষ্ট এক্সেস করার পারমিশন নিয়ে সেটা পড়ে ফেলে এবং ফোন নাম্বার আর নামগুলো তাদের লিষ্টে যোগ করে ফেলে। হয়তো কেউ কোন কারণে একটা নাম্বার দিয়ে সার্চ করছে, সেই নাম্বার আপনার কন্ট্যাক্ট লিস্টে ছিলো। পূরো ক্রোডিট ট্রু কলার এপের। খূব সাধারণ ঘটনা। এখন উল্টো সার্ভিস কেউ দেয় কিনা জানি না, মানে নাম দিয়ে সার্চ করলে কোন নাম্বার পাওয়া যায় এরকম কোন এপ আছে কিনা জানা নেই। তবে অনলাইনে আমি আমার এক আমেরিকা প্রবাসি পরিচিতজনের নাম্বার জোগাড় করেছিলাম এক ওয়েব সাইটের মাধ্যমে। সেটি অবশ্য ছিলো তার ল্যান্ড লাইন নাম্বার। আগে টিএন্ডটি / বিটিসিএল ঢাউস একটা ফোনবুক প্রকাশ করতো।

রিফাত ভাইয়াশেষ করি এই আলাপের ফলাফল নিয়ে। বন্ধুর সাথে আলাপ করার পর আমি ট্রু কলারের ওয়েব সাইটে গেলাম ডেস্কটপ কম্পিউটার দিয়ে। সেখানে নিজের নাম্বার দিয়ে সার্চ দিলাম। বললো আমাকে গুগল অথবা মাইক্রোসফট একাউন্ট দিয়ে লগইন করতে হবে। অনেক ভাবনা চিন্তা করে স্বল্প ব্যবহৃত (কেবল কোন নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করা বা ডাউনলোড করার জন্য) একটা ইমেইল এড্রেস দিয়ে লগইন করলাম। সাথে সাথেই পর্দায় ভেসে উঠলো ‘রিফাত ভাইয়া’ !!!

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *