ওয়ালপ্যাড ১০পি

এই কিছুদিন আগেও গোটা দূয়েক ট্যাবলেট ছিলো। দুটোই ৭ ইঞ্চি সাইজের। ভাতিজাকে করোনাকালে অনলাইন ক্লাস করার সূবিধার কথা চিন্তা করে আগে-পরে দুটো ট্যাবই দিয়ে দিয়েছিলাম। আমি আমার শাউমি রেডমি ৮ দিয়ে ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়া একটিভিটিজ চালিয়ে নিচ্ছিলাম। সাথে পিসি তো আছেই। 

এক প্রবাসী আত্মীয় দেশে এসেছিলেন কিছুদিন আগে। যাওয়ার সময় হাতে একটা খাম দিয়ে বললেন তোমার পছন্দমতো কিছু খেয়ে নিও। প্রতিবারই এমন করেন। নিতে না চাইলেও কোন লাভ হয় না। এখন আর তাই কিছু বলি না। 

টাকাটা হাতে পেয়েই ঠিক করলাম একটা ট্যাবলেট কিনবো। ছোট-খাট না, একটু বড়। বাজারে ৮ইঞ্চি, ১০ ইঞ্চি এবং ১০.৫ ইঞ্চি বেশ কিছু ট্যাবলেট পাওয়া যায়। তবে স্পেসিফিকেশন এবং দাম তুলনা করে মনে হলো ওয়ালপ্যাড ১০পি ট্যাবলেটটিই ভাল হবে। যদিও ওয়ালটনের নাম শুনলে অনেকেই হা হা করে তেড়ে আসতে চান। আমার এক বন্ধু তো কয়েকটা ওয়ালটন মোবাইল কিনে এখন আর নামই শুনতে পারে না। সব মোবাইল নাকি অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়।

যাই হোক। এই ট্যাবলেটের মূল স্পেসিফিকেশন হলো ৬ জিবি RAM, ১২৮ জিবি ষ্টোরেজ (ROM), ১০.৫ ইঞ্চি আইপিএস ডিসপ্লে, ৭০০০ এমএএইচ ব্যাটারি। 

অর্ডার করলাম দারাজ থেকে ক্যাশ অন ডেলিভারিতে। সেলার চ্যাটে জানতে চাইলো অর্ডার কনফার্ম করবে কি না। আমি উত্তর দিলাম অবশ্যই। মোটামুটি দ্রুতই হাতে পেলাম বলা চলে। ওয়ালটন প্রোডাক্টের প্যাকেজিং নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক মানের। সিলড ইনট্যাক্ট বক্সের ভিতর ট্যাবলেটের সাথে একটি কেস কভার এবং স্ক্রিন প্রটেক্টর ছিলো। সাথে চার্জার ক্যাবল, ছোট একটি ম্যানুয়াল এবং ওয়ারেন্টি কার্ড ছিলো। 

প্রোডাক্ট পেজে দাম লেখা ছিলো ১৮৮৫০ টাকা। ভাউচার এপ্লাই করার পর আমাকে দিতে হলো ১৭৬২৫ টাকা। 

প্রায় দেড় মাস হলো ব্যবহার করছি। এখন পর্যন্ত তেমন কোন সমস্যা হয় নাই। সাথে দেয়া চার্জার দিয়ে ৭০০০ এমএএইচ ব্যাটারী চার্জ হতে কিছুটা বেশী সময় লাগে বলে মনে হলো। সারাদিনে আমার হয়তো ৭০-৮০% চার্জ খরচ হয়। রাতে চার্জে দিলে সকালে উঠে আমি ফুল চার্জড পাই। ক্যামেরা দুটো তেমন ভাল না, যদিও বলা হচ্ছে পিছনের ক্যামেরা ৮ মেগাপিক্সেল এবং সামনের ক্যামেরা ৫ মেগাপিক্সেল। ঘটনা হলো এতো বড় একটা ট্যাবলেট হাতে নিয়ে ছবি তোলাও কিন্তু সহজ না। 

সিম দুটি ব্যবহার করা যায়, ৪জি সাপোর্টেড। সিম একটি ব্যবহার করলে অন্য স্লটে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। ওয়াইফাই, জিপিএস, জি সেন্সর ইত্যাদিও আছে।

আমি সাধারণত বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক, ইনষ্টাগ্রাম, টুইটার, পিনটারেষ্ট ইত্যাদি) ব্যবহার করি। অনলাইন পত্রিকা পড়ি নিয়মিত। ইউটিউবে ভিডিও দেখি, সাথে টফি এপ দিয়ে টিভি দেখি। গেমস খূব একটা খেলি না। এখন পর্যন্ত অভিজ্ঞতা ভালই। 

ওয়ালপ্যাড এর বেশ কয়েকটি মডেল আছে। ট্যাবলেট কিনতে চাইলে আপনার লিষ্টে রাখতে পারেন ওয়ালটন ট্যাবলেট।

দারাজে ওয়ালপ্যাড ১০পি এর প্রোডাক্ট পেজ এখানে

ছবি ওয়ালটন এবং দারাজ ওয়েব সাইট থেকে নেয়া।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।