নিয়ন্ত্রন

ধরেন আপনি কারো উপর প্রচন্ড রাগ করেছেন কিংবা কোন ঘটনায় খূব আবেগপ্রবণ হয়ে পরেছেন। এখন নিজেকে নিয়ন্ত্রন করবেন কিভাবে ?

কোন এক সময় আমার রাগ খূব বেশী ছিলো। বদ রাগী ঠিক না, হঠাৎ করে হয়তো রাগ উঠে যেতো। মনে হতো শরীরের সব রক্ত একবারে মাথায় উঠে গেছে। নিজেকে নিয়ন্ত্রন করা তখন খূবই হতো। সেসময় অবশ্য তেমন চেষ্টাও করতাম না। ফলাফল, থাক সেটা না বলাই ভাল। তবে আমার রাগ যেমন হঠাৎ করে উঠতো, নেমেও যেতো খূব দ্রুত। এর মধ্যেই যা ঘটার ঘটে যেতো।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে মনে হলো রাগ করে কি লাভ। উল্টো নিজের ক্ষতি। এরপর চেষ্টা করা শুরু করলাম। দেখলাম রাগ কন্ট্রোল করা আসলে খূব কঠিন না। কেবল নিজের মন’কে বুঝাতে হবে যে এরকম রাগ করা ঠিক হচ্ছে না। এক মিনিট, দুই মিনিট সময় পার করলেই দেখা যেতো রাগ কমে আসছে। এখন এরকম রাগ উঠলে লম্বা করে কয়েকবার শ্বাস নেই। নিজেকেই নিজে প্রবোধ দেই। ঠিক হচ্ছে না কিন্তু, শান্ত হও। দেখা যায় রাগ কমে আসছে। তখন খূব ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করা যায় যে আসলে দোষটা কার ছিলো – আমার নিজের না অন্য পক্ষের। দোষ যারই হোক, রাগ তো সামলানো যায়।

কোন কারণে প্রচন্ড মন খারাপ হলে আগে অনেক কিছুই করতাম। হয়তো বাসে চড়ে বসতাম। জানালা দিয়ে শহরের নানা দৃশ্য দেখতে দেখতে হয়তো মন খারাপের কারণটাই হয়তো ভুলে যেতাম। বাসের ভিতরে একটু কান খাড়া করলে হয়তো সহযাত্রীদের নানা কথাবার্তা কানে আসতো। কোন কোন আলাপচারিতা হয়তো এমনই মজার যে না হেসে পারা যেতো না।

বাইরে যেতে না পারলে হয়তো খবরের কাগজ খুলে বসতাম। অনেক সময় হয়তো অনেক কিছু পড়া হতো না। মন খারাপের জেরে হয়তো সেসব সম্পাদকীয়-উপ-সম্পাদকীয়, পাঠকের চিঠি এমন কি বিজ্ঞাপন পর্যন্ত পড়ে ফেলতাম। বিক্রয় থেকে শুরু করে পড়াইতে চাই – সব। তবে বই পড়ে খূব একটা সূবিধা করতে পারি না্ এসময়। এমনিতেও মন বিক্ষিপ্ত থাকলে বই এ মনোনিবেশ করতে পারি না।

মন খারাপ থাকলে আরেকটা কাজ করি। কম্পিউটারে প্রিয় গানগুলি চালিয়ে দিয়ে একই সাথে নেট ব্রাউজ করতে থাকি। সময়ের সাথে সাথে ধীরে ধীরে মন অনেকটাই স্থির হয়ে আসে। এমন কি চরম দূঃখের কোন খবরে যখন মন প্রচন্ড খারাপ, তখনও এই ভাবে কিছুটা হলেও শান্তি পাওয়া যায়।

এখন তো বন্ধুবান্ধবদের সাথে দেখা-সাক্ষাত বেশ কম হয়। সবাই যার যার নিজের ঘর-সংসার নিয়ে ব্যস্ত। আগে যখন ছাত্র ছিলাম কিংবা বেকার, তখন বন্ধুবান্ধবদের সাথে খূব আড্ডা দিতাম। দেখা যেতো গল্পে গল্পে হয়তো রাগ-দূঃখ সব কোথায় হারিয়ে গেছে।

আসলে রাগ কিংবা দূঃখ-বেদনা কিংবা মনে যন্ত্রনা পুষে রাখতে নেই। কোন না কোন ভাবে বের করে দিতে হয়। যতো বেশী এসব পুষে রাখবেন, ততো বেশী ক্ষতি আপনারই। আশা করি ভেবে দেখবেন।

ভাল থাকুন নিরন্তর।

 Image by Gerd Altmann from Pixabay

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।