হঠাৎ একদিন

১.
তমাল’দা !!! আশ্চর্য, এতোগুলো বছর পর আজ এভাবে এই জায়গায় দেখতে পাবে কখনও ভাবেনি তরু। কিন্তু দেখা হয়েই গেলো। অবশ্য তমাল’দা বদলান নি খূব একটা, কেবল বয়সের একটা ছাপ পরেছে মাত্র। তরুর কিশোরী কালের ক্র্যাশ। কেন যে এতো পছন্দ করতো। লোকটাকে সব সময়ই নিরস মনে হতো, এমন কি একটুও হাসতো না। এখন ও যেমন গম্ভীর করে রেখেছে। কিন্তু সাহস করে কোনদিন বলা হয়নি মনের কথা। এক সময় তো বিয়েই হয়ে গেলো। নতুন জামাই নিয়ে অবশ্য গিয়েছিলো বাসায়। এরপর … । এরপর আর কি। সংসারের চাপে, দু’টো বাচ্চা বড় করতে করতে তো কবেই তমাল’দার কথা ভুলে গিয়েছিলো। আর আজ হঠাৎ ….

২.
তরু !!! আজ এতো বছর পর প্রথম দেখাতেই চিনে ফেললো তমাল। বোকা মেয়েটা আগের মতোই আছে, একটু মুটিয়ে গেছে অবশ্য। মেয়েটা কেন যে এতো পছন্দ করতো !?! তমাল অবশ্য কখনই খূব একটা পাত্তা দেয়নি তরু’কে। প্রথম কারণ ছিলো তরুর বয়স, একেবারেই বাচ্চা মেয়ে ছিলো তখন। আর তমাল তখন জীবন যুদ্ধের এক সৈনিক। পায়ের নিচে মাটি তখনও শক্ত হয়নি। বাবার অবর্তমানে পরিবারের সবার দায়িত্ব তার উপর। কেমন করে প্রশ্রয় দেয় এত্ত টুকুন এক মেয়েকে।

৩.
তমাল ই এগিয়ে গিয়ে প্রথম কথা বললো।
– কেমন আছো তরু ?
– ভাল। আপনি ?
– চলছে। বাকি সব কোথায় ? তোমার হাজবেন্ড, বাচ্চারা ?
– ঐ যে …
এক ঝলক দেখলো তমাল। হাসি-খুশী একটি পরিবার।
– তা যাচ্ছ কোথায় ?
– ভারতে যাচ্ছি, ছুটি কাটাতে। আপনি ?
– কোম্পানির কাজে।

৪.
স্মৃতিরা সব ভীড় করে আসছে। তরু ভাবে আজ এখন এই অবস্থায় বলে ফেলবে নাকি তার কিশোরী বেলার না বলা কথা। মনটা কেমন যেন অস্থির হয়ে যাচ্ছে।
– শোন …

৫.
তমাল আস্তে করে তর্জনী ঠেকালো নিজের ঠোঁটে
– শশশশ….
থমকে গেলো তরু।
– কি চমৎকার সংসার তোমার। বাচ্চা দু’টো কিন্তু তোমার মতোই সুন্দর হয়েছে।
– কিন্তু আমি এখনও ভালবাসতে পারি নি। সংসার করছি ঠিকই।
– বাচ্চার বাবার জন্য কি একটুও মায়া নেই ? দেরী দেখলে কিংবা অসূখ হলে মন কেমন করে না ?
– করে, কিন্তু ….
– একদিন ঠিকই মনে হবে এটাই ভালোবাসা। যার উপর নিশ্চিন্তে নির্ভর করা যায়।

৬.
তমাল আস্তে করে তার তর্জনী ঠোঁট থেকে সরিয়ে তরুর চিবুক স্পর্শ করে। মূখে তার এক অপার্থিব হাসি।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।