এফএম রিসেপশন

কোন এককালে রেডিও শোনার বাতিক ছিলো ব্যাপক। তখন খেয়ে না খেয়ে রেডিও শুনতাম। পেট মানির একটা বড় অংশ যেতো বিভিন্ন রেডিও ষ্টেশনে চিঠি পাঠানোর জন্য ডাক মাশুলে। সেই বাতিকের কিছুটা এখনও অবশিষ্ঠ আছে। তবে আগের মতো শোনা হয় না। তার চেয়েও বড় কথা আগের মত রেডিও ষ্টেশনও নাই শর্টওয়েভে। আর সেসময় এফএশ রেডিও ষ্টেশন না থাকলেও এখন ঢাকায় গোটা বিশেক এফএম ষ্টেশন আছে। মিডিয়াম ওয়েভে দেশী এবং পার্শ্ববর্তী দেশের কিছু ষ্টেশন শোনা যায়। 

তবে ঢাকার বাইরে এফএম ষ্টেশন তেমন একটা শোনা যায় না। অনেক সময় ঢাকার মধ্যেই হয়তো রিসেপশন ভাল না। যেমন আমি যে বাসায় থাকি দোতালায় পিছনের দিকের রুমে রিসেপশন তেমন একটা নাই বললেই চলে। বিল্ডিং এর তিনদিকে ৬তলা বিল্ডিং, সামনে রাস্তার ওপারে আবার বিল্ডিং এর সারি। বারান্দায় গেলে রিসেপশন ভাল। অনেক সময় সকালে ভারতের আগরতলার এফএম ষ্টেশন ও পাওয়া যায়। শর্টওয়েভ শোনার জন্য ৪তলা বিল্ডিং এর ছাদে ৩০ গজ তার টানিয়ে দোতালার রুম পর্যন্ত নিয়ে এসেছিলাম। সেটাই এফএম এন্টেনা হিসেবে ব্যবহার করি। রিসেপশন ভালই হয়। তবে এন্টেনার অবস্থানের কারণে ভারতের কোন এফএম ষ্টেশনই পাই না। 

যারা ঢাকার বাইরে বা ঢাকার বাইরে এফএম ষ্টেশন শুনতে আগ্রহী তারা বিভিন্ন দিকে রেডিও’র বিল্টইন টেলিস্কোপিক এন্টেনা ঘুরিয়ে ট্রাই করবেন। খেয়াল রাখবেন যেন খোলা যায়গা পাওয়া যায়। এফএম সিগনাল লাইন অফ সাইটে ভাল পাওয়া যায়। তাই মাঝে বিল্ডিং / গাছপালা ইত্যাদি বাঁধা থাকলে আপনার রিসেপশনও খারাপ হবে। প্রয়োজন সাধারণ তার ২/৩ গগ জানালা দিয়ে বাইরে বের করে দিয়ে সেটার অন্য প্রান্ত রেডিও’র এন্টেনার সাথে পেঁচিয়ে দিয়ে। কেবল খেয়াল রাখবে জানালার সামনে ২০/৩০ ফিটের মধ্যে যেন কোন বিল্ডিং না থাকে। ছাদে তার টানানোর সূবিধা থাকলে সেখানেও টানিয়ে নিতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন বৃষ্টির দিনে বজ্রপাতে মারাত্মক ক্ষতি পারে। সেসময় তার বাইরে রাখাই শ্রেয়।

আরো একটি কথা স্মরণে রাখা ভাল। এফএম সিগনাল সাধারণত ৫০/৬০ কিলো মিটার পর্যন্ত যায়। রাে হয়তো আরেকটু বেশী। সেক্ষেত্রে দুরের ষ্টেশন শুনে খূব একটা মজা পাবেন বলে মনে হয় না। সবচেয়ে ভাল হয় মোবাইল এপ দিয়ে শুনলে। তবে আপনি যদি ডিএক্সইং এ আগ্রহী হয়ে থাকেন সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। চেষ্টা করে শুনতে পারা সবসময়ই আনন্দদায়ক।

হ্যাপি লিসেনিং

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।