প্লাষ্টিক পণ্য পচনশীল নয়। আর তাই এগুলো যত্রতত্র ফেললে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার বারোটা বাজায়, নদী-খাল-বিলে স্বাভাবিক পনি প্রবাহে বাঁধা দেয়, জলজ প্রাণী সহ নানা ধরণের প্রাণীদের জীবন যাত্রায় হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কয়েকদিন আগে তাই ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক পণ্য উৎপাদন, বাজারজাত করণ এবং ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মহামান্য আদালত। আর এসবের জন্য সময় বেধে দিয়েছেন এক বছর।
অনেকেই চিন্তায় আছেন ওয়ান টাইম প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যান করলে আমাদের কি হবে। ছোট বেলায় তো প্লাস্টিক ব্যাগ বলতে বুঝতাম বিদেশ থেকে কারো নিয়ে আসা সুদৃশ্য শপিং ব্যাগ। এর বাইরে কিছু ছিলো পণ্যের মোড়ক। আব্বার সাথে বাজারে গেলে একাধিক ছালা বা চটের ব্যাগ সাথে নিতাম। আরেক ধরণের ব্যাগ ছিলো সিমেন্ট বা অন্য কোন প্লাষ্টিক টাইপ জিনিসের তৈরী। অনেকটা পাটির মতো করে বোনা। শাক-সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস সবই ঐ ব্যাগে ভরে দিতো। মাছ-মাংস অনেক সময় পুরাতন খবরের কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে দিতো। অন্য সব আইটেম দিতো কাগজের ঠোঙ্গায়। সেগুলো নিতাম ভিন্ন ব্যাগে যাতে শাক-সবজি বা মাছ-মাংসের পানি না লাগে। আশির দশকেও সাপ্তাহিক বাজার করতে শান্তিনগর বাজারে গেলে একজন মিন্তি দিয়ে তার টুকরিতে সব মালামাল নিয়ে সোজা রিক্সায় চরে বাসায় আসতাম।
সুপার শপগুলি কিন্তু পণ্য নেয়ার জন্য কাপড়ের ব্যাগ দিচ্ছে। অনেকেই কাগজ অথবা নন-উভেন ফ্যাব্রিকের ব্যাগ দিচ্ছেন। অবশ্য নন উভেন ফ্যাব্রিক একধরণের প্লাষ্টিক। এগুলো মাটির সাথে মিশে যায় কিনা আমার অবশ্য জানা নেই। ইচ্ছে করলে অনেক আইটেমই এইসব কাগজ / কাপর বা নন উভেন ব্যাগে দেয়া যায়। পানি / কোমল পানীয় প্রস্তুুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলি ইচ্ছে করলেই তাদের ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক বোতলগুলি সামান্য মূল্যে কিনে নিতে পারে। এতে বোতলগুলির একটা সুরাহা যেমন হবে, তেমনি এগুলির নকল করাও কমে আসবে।
থাইল্যান্ডে সম্প্রতি ওয়ান টাইম প্লাষ্টিক উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখানে দেখুন তারা কিভাবে প্লাষ্টিক বিহীন জীবনে অভ্যস্ত হচ্ছে। কিছু কিছু ছবি দেখে হয়তো হাসি পেতে পারে, কিন্তু তারা যে এই সিদ্ধান্তে সরকারকে সাহায্য করছে সেটি উঠে এসেছে।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
ফেসবুক মন্তব্য