ফুটানি বনাম বয়কট

পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের নিয়ে আমরা প্রায়ই হাসি-ঠাট্টা করি। নানা রকম চুটকি বানাই। অথচ তারা যে ভাবে জীবন-যাপন করে ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের জন্য তৈরী করে দিয়েছে তা আমাদের জন্যে আদর্শ হওয়া উচিত ছিলো। আমরা ঘুষ-দূর্নীতিতে বিশ্বাসী, লুটপাটে সিদ্ধহস্ত। আর এই অবৈধ অর্থের জোরে আমরা ফুটানি দেখিয়ে বেড়াই। আর এই অভ্যাসের কারণেই আমরা আপাময় জনসাধারণ কাফফারা দেই প্রতিবছর। রোজা / ঈদ / বড়দিন / পূজা ইত্যাদি ধর্মীয় উৎসবে সারা পৃথিবীতে যখন খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে সব জিনিসের দাম কমে তখন এদেশে সব জিনিসের দাম বাড়ে। আমরা অনেকেই রোজা / ঈদ এলেই কয়েক গুণ দামে খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে জামা-কাপড় / আসবাবপত্র / উপহার কিনতে ঝাঁপিয়ে পড়ি। কারো কাছে এই অতিরিক্ত খরচ ফুটানি, কারো কাছে প্রেস্টিজ ইস্যু। অথচ আমরা যদি চিন্তা করতাম অতিরিক্ত দামে জিনিস কিনবো না, অপ্রয়েজনীয় জিনিস কিনে ঘর ভর্তি করবো না অথবা সাধারণ খাবার বা সাধারণ জামাকাপড় কিনবো, তাহলেই কিন্তু বাজারের জিনিসপত্রের দামে লাগাম পড়তো।
 
এক তরমুজের কথাই ধরেন। অতিরিক্ত / অযৌক্তিক দামে তরমুজ না কেনায় ব্যবসায়ীরা সব মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। এই ধারা আগামীতে সব পণ্যের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারলে সব জিনিসের দাম দেখবেন এমনিতেই সাধ্যের মধ্যে চলে আসবে। ইফতারিতে ছোলা-বুট-পিয়াজু না খেলে আপনার রোজা হবে না এমন কথা কোথাও বলা নাই। এর চাইতে চিড়া আর ঘরে পাতা দই দিয়ে সাথে একটা কলা দিয়ে অনেক ভাল ভাবে স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার করা সম্ভব।
 
আমি বলছি না যে আপনি জীবনের সব সাধ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে মুনি-ঋষিদের মতো জীবন-যাপন করেন। কেবল ফুটানি দেখানোর জন্য বাহুল্য পরিত্যাগ করেন।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।