ব্লগিং এবং ভ্লগিং

ঠিক কবে থেকে ব্লগিং শুরু করেছিলাম আজ আর মনে নেই। তবে সেটি ২০০৯/১০ সালের দিকে হবে। এক বন্ধু সামহোয়্যার ইন এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো। শুরুতে কেবল পতাম, মাঝে মধ্যে কমেন্ট করতাম। এক সময় মনে হলো চেষ্টা করলে আমিও হয়তো লিখতে পারবো। সেসময় সদ্য সনি’র একটা পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা কিনেছি, সে সুত্রেই ব্লগিং শুরু করলাম। ব্লগিয় নাম হলো ক্যামেরাম্যান। তারপর ….

ব্লগিং করতে করতে নাওয়া-খাওয়া ভুলে যাওয়ার অবস্থা তখন। নিজে লিখতাম সামান্য, কমেন্ট করতাম বেশী, তার চেয়েও বেশী পড়তাম। এমন দিনও গেছে রাতে যে পর্যন্ত পড়েছিলাম, পরদিন সকালে সেই লেখা খূঁজে বের করে সেখান থেকে আবার পড়া শুরু করেছি। একটা সময় পরে সামনা-সামনি অনেকের সাথে দেখা সাক্ষাত হলো, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়া হলো। তবে ফেসবুক আসার পর ব্লগিং এর নেশাটা আস্তে আস্তে কাটতে শুরু করে। তবে কখনও পুরোপুরি ছাড়া হয় নাই। সামহোয়্যার ইন ব্লগ থেকে সরে এসেছি, এখন নিজেই ওয়ার্ডপ্রেস সাইট তৈরী করে ব্লগিং করছি। 

ফটোগ্রাফির নেশা ব্লগিং শুরুর সময় থেকেই ছিলো। পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা থেকে নাইকন ডি৩০০০, এরপর নাইকন ডি৭১০০ পার হয়ে এখন নাইকন জেডএফ – ফুলফ্রেম ক্যামেরায় আছি। ছবি তুলতে তুলতে আগ্রহ জন্মালো ভিডিও’র প্রতি। কিন্তু দেখা গেলো এই ব্যাপারে আমার হাত খূবই কাঁচা। 

টুকটাক ছবি তোলা আর ভিডিও করার ফাঁকে ফাঁকে মনে হলো ভ্লগিং ও তো করে পারি। ইউটিউবে চ্যানেল খুললাম ২০১‌৮ সালের দিকে। সে থেকে ছোট ছোট ভিডিও করে আপলোড করছি, তবে একেবারেই অনিয়মিত ভাবে। বছর খানেক ধরে সিরিয়াসলি ভাবছি ভ্লগিং করবো, কিন্তু ঠিক ব্যাটে বলে হচ্ছে না। প্রথমত নাইকন জেডএফ এর মতো ভারী একটা ক্যামেরা নিয়ে একা একা ভিডিও করা খূবই কঠিন। সাথে আরো অনেক কিছু নিতে হয়। মাঝে ডিজেআই ওসমো পকেট কিনেছিলাম একটা, সেটাও ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারি নাই। এখন আবার সেটার আয়ু প্রায় শেষের পথে। ব্যাটারী ফুলে গেছে, সাউন্ড রেকর্ডিং ঠিকমতো হয় না। ভিডিও করে পরে ভয়েসওভার দেয়া যায় অবশ্য। 

তবে ভ্লগিং এর সমস্যা অন্য জায়গায়। ব্লগিং করতে গেলে সময় নিয়ে লিখে, তারপর এডিট করে পাবলিশ করা যায়। কিন্তু ভ্লগিং এর সময় কি নিয়ে ভিডিও করবো, কিভাবে ক্যামেরার সামনে বা পিছনে কথা বলবো, তারপর শ্যুট করে পিসিতে এডিট করবো – সব আগে থেকে প্ল্যান করে আগাতে হয়। শুরুতে আমি গিয়ার (ক্যামেরা / মাইক্রোফোন / লাইটিং ইত্যাদি) নিয়ে খূব চিন্তা করতাম। একটা সময় দেখা গেলো আমার সবই আছে, কিন্তু ক্যামেরা হাতে নিয়ে ভিডিও করা কিংবা ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলা – বিশাল সমস্যা। কেমন যেন লাগে। মানে জড়তা একেবারেই কাটতে চায় না। আর এই জড়তার কারণে গ্যাপ হয়ে যাচ্ছে অনেক। এখন চিন্তা করছি – একশন ক্যামেরার মতো ছোট কোন কিছু নিয়ে বের হবো, সাথে ওয়্যারলেস মাইক্রোফোন – তারপর যা মনে আসে তা নিয়েই ভিডিও করবো, কথা বলবো। এতে যদি কাজ হয়।

হয়তো এই ঈদের আগেই আবার নতুন করে শুরু করবো। 

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।