কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম সঞ্চয় পত্রের মুনাফা তুলতে। ভীড় একেবারেই নাই। অথচ মাস ছ’য়েক আগেও প্রচন্ড ভিড়ের কারণে কমপক্ষে ২ ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হতো। পত্রিকার খবর মোতাবেক নতুন নিয়মে সঞ্চয়পত্র কেনার নিয়ম করায় সঞ্চযপত্রের বিক্রি ব্যাপক কমে গেছে।
নতুন নিয়ম হলো সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে এখন eTIN, NID এবং ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে। আর এই কারণে অনেকেই সঞ্চয়পত্র কিনছেন না, আরেকটু খোলাসা করে বললে ধরা খাওয়ার ভয়ে কিনতে পারছেন না। আজ এক ভদ্রমহিলা খোঁজ-খবর করছিলেন টিন নাম্বার ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনার কোন উপায় আছে কিনা। ষ্টাফরা যতই বলছিলেন এখন আর সম্ভব না, তিনি ততোই পীড়াপীড়ি করছিলেন। পরে রণে ভঙ্গ দিয়ে বের হয়ে গেলেন। সিড়ি দিয়ে নামার সময় তার কথা শুনে বললাম এটা তো খূবই ভাল সিষ্টেম করেছে সরকার। কালো টাকা ওয়ালাদের জ্বালায় ২ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো, এখন দেখেন কি চমৎকার পরিবেশ। মহিলা বললেন এটা কেমন করে ভাল হলো, আমার টাকা তো দিবে আরেকজন। আমি তার ট্যাক্সের ঝামেলা কেন পোহাবো। তার কথা শুনে হেসে ফেললাম। বললাম তাহলে তো আসলেই সমস্যা।
পুরাতন সঞ্চয়পত্র ওয়ালাদের মুনাফা তোলার সময় এখন ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নাম্বার ও দিতে হয়। ষ্টাফদের সাথে কথা বলে জেনেছিলাম এটা দিয়ে আসলে কার নামে কত টাকার সঞ্চয়পত্র আছে সেগুলোও বের করা হবে। এক নামে সাধারণ ৩০ লাখ এবং যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যায়। এর বেশী সঞ্চয়পত্র থাকলে সেগুলোর মুনাফা আর দেয়া হয় না। বুঝলাম অনেকেই এনালগ সিস্টেমের জোরে এতোদিন প্রচুর টাকার মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন।
কিন্তু দেশে যে হারে দূর্নীতি বেড়েছে, কালো টাকা ওয়ালারা কি আর সঞ্চয়পত্র কেনার আশায় বসে থাকবে ? দেশের টাকা এমনিতেই তো পাচার হয়, এখন হয়তো আরো বেশী হবে।
ফেসবুক মন্তব্য