অভ্যাস, অনভ্যাস আর বদ অভ্যাস

বর্তমান দুনিয়ায় একবারে নিখূঁত মানুষ আছে কিনা আমার জানা নেই। আমি নিজে নানা দোষে দুষ্ট, তার মধ্যে কিছু আছে নিয়মিত ত্রুটি বা দোষ, অন্য কথায় বদ অভ্যাস। এরকমই এক বদ অভ্যাস নিয়ে আজ কথা বলবো।

আমি নিজে একেবারেই ধনী ব্যক্তি না। দিন আনি, দিন খাই গোত্রের লোক। তারপরও দেখা যায় টাকা পয়সা খরচের ব্যাপারে কোন বাছ-বিচার করি না। পকেটে টাকা আসলো তো সেটা খরচ করার জন্য একবারে উতলা হয়ে যায় মন। ফলাফল আমার কোন সঞ্চয় নাই।

ইদানিং আব্বা-আম্মার শারীরিক অবস্থা আর ডাক্তার হাসপাতালের পিছনে টাকা খরচের পরিমান দেখে এক আধটু চিন্তা হচ্ছে। এখন না হয় চলতে ফিরতে পারছি, সত্তরের পর কি অবস্থা হবে কে জানে। তাই বছর খানেক ধরে কিছু কিছু জমানোর চেষ্টা করছি ব্যাংকে।

এখন আবার নতুন জ্বালা। টাকা পকেটে থাকলে যা হয় – কিছু কেনার জন্য প্রাণ আনচান করছে। আমার কিছু পছন্দের জিনিস আছে। যেমন – রেডিও, ক্যামেরা এবং এর এক্সেসরিজ, বই  অথবা বিভিন্ন ধরণের ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট। বর্তমানে গোটা তিনেক রেডিও আছে, সচল ক্যামেরা আছে গোটা পাঁচেক। ক্যামেরার এক্সসেরিজ আছে বেশ কিছু। গ্যাজেটও আছে অল্পসল্প।

ব্যাংকে জমা টাকার অংক দেখে আবারও সেই পূরানো ক্যারা মাথায় যন্ত্রনা করছে। ক্যামেরা যে কয়টা আছে সেগুলো ঠিকমতো ব্যবহার হয় না। মূল কারণ অবশ্য বাসার সামগ্রিক পরিস্থিতি। আব্বা এখন শারিরীকভাবে আমার উপর অনেকখানি নির্ভরশীল। ফলে বাইরে বের হলে হিসাব করে বের হতে হয়। বাইরে গিয়ে ফটোগ্রাফি বা ভিডিওগ্রাফি তাই আর করতে পারি না। ঘরের ভিতর বা আশে-পাশেই যা পারি করি।

এতো কিছুর পরও একটা মিররলেস ক্যামেরার জন্য প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। তাও ছোট-খাট কম দামী কিছুতে এবার মন টানছে না। এবার নজর একবারে ফুলফ্রেমের দিকে। ভাবটা এমন যে একটা মিররলেস ক্যামেরা হলে ফাটিয়ে ফেলতাম। আমি নিজেকে খূবই ভাল জানি এবং বুঝি – এটা আসলে বেশী দিন চলবে না। কিনবো, কয়েকদিন একটু নাড়াচাড়া করবো। তারপরই উৎসাহে ভাঁটা পরবে। তাই নিজেকে নানারকম প্রবোধ দিচ্ছি। শেষ পর্যন্ত কি হবে জানি না, তারপরও নিজের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি।

দেখা যাক কে জেতে – আমি না আমার মন !!! ভাল থাকবেন।

ফেসবুক মন্তব্য

রিফাত জামিল ইউসুফজাই

জাতিতে বাঙ্গালী, তবে পূর্ব পূরুষরা নাকি এসেছিলো আফগানিস্তান থেকে - পাঠান ওসমান খানের নেতৃত্বে মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। লড়াই এ ওসমান খান নিহত এবং তার বাহিনী পরাজিত ও পর্যূদস্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে টাঙ্গাইলের ২২ গ্রামে। একসময় কালিহাতি উপজেলার চারাণ গ্রামে থিতু হয় তাদেরই কোন একজন। এখন আমি থাকি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। কোন এককালে শখ ছিলো শর্টওয়েভ রেডিও শোনা। প্রথম বিদেশ ভ্রমণে একমাত্র কাজ ছিলো একটি ডিজিটাল রেডিও কেনা। ১৯৯০ সালে ষ্টকহোমে কেনা সেই ফিলিপস ডি ২৯৩৫ রেডিও এখনও আছে। দিন-রাত রেডিও শুনে রিসেপশন রিপোর্ট পাঠানো আর QSL কার্ড সংগ্রহ করা - নেশার মতো ছিলো সেসময়। আস্তে আস্তে সেই শখ থিতু হয়ে আসে। জায়গা নেয় ছবি তোলা। এখনও শিখছি এবং তুলছি নানা রকম ছবি। কয়েক মাস ধরে শখ হয়েছে ক্র্যাফটিং এর। মূলত গয়না এবং নানা রকম কার্ড তৈরী, সাথে এক-আধটু স্ক্র্যাপবুকিং। সাথে মাঝে মধ্যে ব্লগ লেখা আর জাবর কাটা। এই নিয়েই চলছে জীবন বেশ।